চবির সাবেক উপাচার্যসহ দুই জনের দুর্নীতির খোঁজে দুদক

দুর্নীতি-অনিয়মের মাধ্যমে অঢেল সম্পদ গড়ার অভিযোগ

| বৃহস্পতিবার , ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ at ৬:১৪ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটবিএফআইইউ এর সাবেক প্রধান কর্মকর্তা মাসুদ বিশ্বাস এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য শিরীণ আক্তারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল বুধবার দুদকের উপপরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম বলেছেন, উভয়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতিঅনিয়মের মাধ্যমে অঢেল সম্পদ গড়ার অভিযোগ রয়েছে। খবর বিডিনিউজের।

বিএফআইইউ হল আর্থিক খাতের স্বচ্ছতার জন্য নিবেদিত গোয়েন্দা ইউনিট, যা ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতিঅনিয়ম রোধে কাজ করে থাকে। আকতারুল ইসলাম বলেন, মাসুদ বিশ্বাস অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে গোয়েন্দা তথ্যানুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে সঠিক পরিলক্ষিত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্য অনুসন্ধানের জন্য কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দুদকের অভিযোগে বলা হয়েছে, মাসুদ বিশ্বাস দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। অর্থপাচারেরও বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে বিএফআইইউ এর এই সাবেক প্রধানের বিরুদ্ধে। দুদকের সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানতে মাসুদ বিশ্বাসের ফোনে একাধিকার কল করে এবং মেসেজ পাঠিয়েও তার সাড়া পাওয়া যায়নি।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক শিরীণ আখতারের দুর্নীতির অভিযোগও অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা অবহিত করেছেন আকতারুল ইসলাম। অভিযোগে বলা হয়েছে, উপাচার্য পদে যোগ দেওয়ার পর থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ঘুষ, অবৈধ নিয়োগ বাণিজ্যেসহ নানা দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন তিনি। তবে অধ্যাপক শিরীণ তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন আইনিভাবে এসব মোকাবেলা করবেন তিনি।

তার বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ এনে বলা হয়েছে, প্রতিটি পদে ১৬ থেকে ২০ লাখ টাকা ঘুষের বিনিময়ে শতাধিক কর্মকর্তাকর্মচারী নিয়োগ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ, সংবিধি ও শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা লঙ্ঘন করেছেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনের নামে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে উপাচার্য শিরীণের বিরুদ্ধে।

২০২৩ সালের ৪ জুন ‘বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ’ শিরোনামে সেমিনার আয়োজনের মাধ্যমে ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা খরচ দেখিয়ে আত্মসাৎ; চবির মেরিন সায়েন্সেস অ্যান্ড ফিশারিজ অনুষদের একাডেমিক ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ৪৪ লাখ ৫৫ হাজার টাকা ও একই দিনে অন্য একটি সভায় ২২ লাখ ৫০ হাজার টাকা খরচ দেখিয়ে আত্মসাতের অভিযোগ তোলা হয়েছে। স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে অবৈধভাবে নিয়োগ দিয়ে নিজস্ব সিন্ডিকেট তৈরি করা, ঘুষ নেওয়া ও অবৈধভাবে আর্থিক সুবিধা নেওয়ার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন তিনি, অভিযোগ দুদকের।

দুদকের আকতারুল ইসলাম বলেন, শিরীণ আখতারের জ্ঞাত আয়বর্হিভূত সম্পদ রয়েছে, যা গোয়েন্দা তথ্যানুসন্ধানে গোপনে সোর্স ইনফরমেশনের বরাতে প্রাথমিকভাবে সঠিক পরিলক্ষিত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্য অনুসন্ধানের জন্য কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এ বিষয়ে শিরীণ বলেন, আমার সময়ে যত কাজ হয়েছে, সব নিয়ম মেনে হয়েছে। সিনেট ও সিন্ডিকেটের অনুমোদন নিয়েই কাজ করা হয়েছে। দুর্নীতি করার কোনো প্রশ্নই ওঠে না এবং প্রয়োজনও নেই। কোনো অভিযোগ থাকলে তা ফেস করব; অতীতেও করেছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজাবেদের সম্পত্তির তদন্তে উদ্যোগ কী, জানতে চান ব্রিটিশ এমপি
পরবর্তী নিবন্ধশাহাদাতকে মারতে লোক ডাকা হয় ভিডিও পোস্টে, গ্রেপ্তার ৩