চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্য, দুই উপ–উপাচার্য (প্রশাসন ও একাডেমিক), প্রক্টরিয়াল বডি ও প্রভোস্টদের পদত্যাগসহ ৫ দফা দাবি জানিয়ে শুক্রবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন চবির সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
আল্টিমেটামের সময় অতিক্রম হয়ে গেলেও পদত্যাগ না করায় বিকেল ৪টায় চবি উপাচার্য প্রফেসর ড. আবু তাহেরের বাসভবনে তালা লাগিয়ে দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত গতকাল রাত সাড়ে নয়টায় উপাচার্যের বাসভবনে তালা ঝুলানো রয়েছে এবং শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলমান রয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। প্রশাসন পদত্যাগ না করা পর্যন্ত এই আন্দোলন চলমান থাকবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
এর আগে গতকাল শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকসু ভবনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন শিক্ষার্থীরা। সংবাদ সম্মেলনে প্রশাসনের পদত্যাগ এবং পাঁচদফা দাবি জানান তারা।
এতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা হামলা করে। সে সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নীরব ছিল। আমাদেরকে নিরাপত্তা দিতে পারে নাই। এছাড়া গত ১৯ জুলাই সারাদেশে অস্থিতিশীলতার মধ্যেই জোর করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদেরকে হল থেকে বের করে দেয়। এমন প্রশাসনের নৈতিক অধিকার নেই আর বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব পালন করার। উপাচার্য স্যার যতক্ষণ পর্যন্ত পদত্যাগ করবেন না, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্তৃক শিক্ষার্থীদের ওপর নৃশংসভাবে হামলার ঘটনায় প্রক্টরিয়াল বডি, সকল হল প্রভোস্ট, ভিসি এবং প্রো–ভিসিকে (অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক) শুক্রবার দুপুর ১২ টার মধ্যে পদত্যাগ করতে হবে। নতুন প্রশাসন নিয়োগের ক্ষেত্রে চিহ্নিত দালালদের (সন্ত্রাস ও স্বৈরাচারের সহযোগী, দুর্নীতিবাজ, অবৈধ উপায়ে নিয়োগকৃতদের) পদায়ন করা যাবে না। এক্ষেত্রে আমাদের মতামতের ভিত্তিতে সবচেয়ে যোগ্য ব্যক্তিকে নিয়োগ দিতে হবে। গত দুই বছরে অবৈধ উপায়ে নিয়োগকৃত (অস্থায়ী) সকল নিয়োগ বাতিল করতে হবে। হল দ্রুত খুলে দিয়ে ন্যায্যতার ভিত্তিতে সিট বরাদ্দ দিতে হবে। সেক্ষেত্রে নতুন করে অনলাইনে ফরম দিতে হবে। পূর্বের সংগৃহীত ফরম বাতিল বলে গণ্য হবে। অছাত্র, চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা (তাদের তালিকা আমাদের নিকট সংগৃহীত আছে) আবাসিক হলে থাকতে পারবে না। নতুন প্রশাসনকে আগামী ৪ মাসের মধ্যে চাকসু নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।