চবির ঝুলন্ত সেতু আরো নান্দনিক হচ্ছে

শীঘ্রই উন্মুক্ত হবে

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ২৬ এপ্রিল, ২০২৫ at ৫:১১ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সৌন্দর্যের অন্যতম একটি স্থাপনা ঝুলন্ত সেতু। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ ও ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ সংলগ্ন খালের ওপর সেতুটি নির্মিত। ব্যতিক্রমী এ স্থাপনা নিয়ে শিক্ষার্থীদের আগ্রহের শেষ নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছাড়া বহিরাগত দর্শনার্থীদেরও আগ্রহ রয়েছে এ সেতু নিয়ে। কিন্তু সেতুর অনেকগুলো কাঠ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সংস্কার অজুহাতে ছয় বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে সেতুটিতে চলাচল। সংস্কারের নামে দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকায় সেতুটি তার নিজের সৌন্দর্য হারিয়েছে। শিক্ষকশিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবির পরেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এটি সংস্কার করতে পারেনি। অবশেষে এটির সংস্কার শুরু হয়েছে। দ্রুতগতিতে চলছে কাজ। আগামী এক মাসের মধ্যে এটি শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের নান্দনিকতা বাড়াতে রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতুর আদলে ২০০৯ সালে নির্মাণ করা হয় বিশেষ এই সেতু। কিন্তু ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার আগে সংস্কারের নামে সেতুটি বন্ধ করে দেয়া হয়। এরপর প্রশাসন অনেকবার আশ্বাস দিলেও আর সংস্কার হয়নি সেতুটির।

শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শনীয় স্থাপনাগুলোর মধ্যে ঝুলন্ত সেতু ছিল অন্যতম আকর্ষণ। এই সেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য অনেকগুণ বৃদ্ধি করেছে। সেতুতে সব সময় শিক্ষার্থী আর দর্শনার্থীদের ভিড় থাকতো। হিড়িক পড়তো ছবি তোলার। কিন্তু বর্তমানে সেটি ধ্বংসপ্রায়। অবশেষে সেটির সংস্কার কাজ শেষের দিকে রয়েছে। শীঘ্রই এটি সবার জন্য উন্মুক্ত হবে, এটা সত্যি ভালো লাগার বিষয়। জানা গেছে, চবির বর্তমান উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্‌ইয়া আখতার দায়িত্ব গ্রহণের পর এটি নিয়ে কাজ শুরু করেন। সমপ্রতি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) থেকে এই কাজের জন্য ২০ লক্ষ টাকার অনুমোদন পেয়েছে। কাজটি বাস্তবায়নের জন্য চবির সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলাউদ্দিন মজুমদারকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

সম্প্রতি সেতুর সংস্কার কাজ পরিদর্শন করেছেন চবির উপউপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মো. কামাল উদ্দিন। এসময় আরও ছিলেন সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলাউদ্দিন মজুমদার। এ ব্যাপারে উপউপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, এ সেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের নান্দনিক একটি স্থাপনা। এটি দীর্ঘদিন সংস্কারবিহীন ছিল। এখন এটি আগের চেয়ে অনেক শক্তিশালী করে নির্মাণ করা হচ্ছে। আগে ছিল কাঠের তৈরি এখন এটি স্টিল দিয়ে স্থাপন করা হচ্ছে। সেতুর দুই পাশে পিলারগুলো শক্ত করে নির্মাণ করা হচ্ছে। এছাড়া এ জায়গায় উভয়পাশে সুন্দর করে লাইটিং করা হবে। উপউপাচার্য বলেন, আমাদের পরিকল্পনা আছে পুরাতন যে কলা ভবন রয়েছে সেটির সাথে এ সেতুর হাঁটার জায়গা সংযুক্ত করে দেওয়া হবে। এ সেতুর ওপরে যে খাল রয়েছে সেটি পরিষ্কার করা হবে এবং সুয়্যারেজের সাথে খালের সংযুক্তি কেটে দেওয়া হবে। ক্যাম্পাসের পানি ও বর্জ্য সুয়্যারেজে যাবে বিকল্প জায়গা দিয়ে। এসবের জন্য ইতোমধ্যে প্রকৌশল দপ্তরকে বলা হয়েছে, তারা এ নিয়ে কাজ করছে। এ খালকে নান্দনিক লেক হিসেবে গড়ে তোলা হবে। আশপাশের সব ঝোপঝাড় পরিষ্কার করা হবে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ বাইরের দর্শনার্থীরা দারুণ সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে পারবে।

সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলাউদ্দিন মজুমদার বলেন, ভর্তি পরীক্ষার মতো জনাকীর্ণ পরিস্থিতিতে এখানে অনেক লোকের সমাগম ঘটতে পারে। তখন একসাথে ৫০১০০ জন মানুষও এটা দিয়ে যাতায়াত করতে পারবে। এরকম অনেক বিষয় চিন্তা করে এ সেতু খুবই মুজবুত করে সংস্কার করা হচ্ছে। সেতুর একপাশে নান্দনিক একটি ফুলের বাগান করার পরিকল্পনা রয়েছে। শীঘ্রই এটির কাজ শেষ হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ‘বর্ষায় কী খাব, মেয়ের বিয়ে কীভাবে হবে’
পরবর্তী নিবন্ধঅতি বিপন্ন বৈলাম বৃক্ষের টিকে থাকা