চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সংস্কৃত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. কুশল বরণ চক্রবর্তীর পদোন্নতি বোর্ড প্রত্যাহার করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার দুপুর তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর আগে বোর্ড প্রত্যাহার ও ওই শিক্ষককে বিচারের আওতায় আনার দাবিতে প্রশাসনিক ভবনে তালা দেয় আন্দোলনকারীরা। আন্দোলনে অংশ নেয় শাখা ছাত্রশিবির, আপ বাংলাদেশ, ইসলামি ছাত্র আন্দোলন, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। প্রথমে প্রশাসনিক ভবনের সামনে আন্দোলন করলেও এক পর্যায়ে প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয় এবং উপাচার্যের কার্যালয়ে গিয়ে হট্টগোল করেন তারা।
জানা গেছে, এনামুল হক চৌধুরী নামে হেফাজতে ইসলামের এক কর্মী ২০২৪ সালের ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে হামলার শিকার হন উল্লেখ করে ওই বছরের ৮ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বকর সিদ্দিকের আদালতে চিন্ময় কৃষ্ণকে প্রধান আসামি করে ১৬৪ জনের নামে মামলার আবেদন করেন। ওই মামলার আবেদনে ২০তম আসামি হিসেবে কুশল বরণ চক্রবর্তীর নাম উল্লেখ করা হয়। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ে কুশল বরণের পদোন্নতি বোর্ড বসার খবর ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেন শিক্ষার্থীরা।
ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী তাহসান হাবীব বলেন, হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি এ শিক্ষকের আজকে প্রমোশন বোর্ড বসায় আমরা ভিসির কাছে এটা প্রত্যাহারের দাবি জানাই। কারণ সে দেশবিরোধী কার্যক্রমে লিপ্ত ছিল এবং আছে। তার উপর সে আওয়ামী লীগের দোসর। প্রশাসন আমাদের কাছে কিছু সময় নেয় এবং আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাই। আন্দোলন পরবর্তী সময় প্রশাসন আমাদের জানায় যে তার প্রমোশন বোর্ড প্রত্যাহার করা হয়।
ছাত্রশিবিরের এফ রহমান হল শাখার সভাপতি মোনায়েম শরীফ বলেন, আমরা জানতে পেরেছি দেশবিরোধী চক্রান্তে জড়িত ও ফ্যাসিবাদের সহযোগী কুশল বরণ চক্রবর্তীর পদোন্নতির জন্য বোর্ড বসানো হয়েছে। আমরা তার পদোন্নতির প্রক্রিয়া বাতিল ও তার বিচার দাবিতে আন্দোলন করেছি।
মামলার বিষয়ে অভিযোগ অস্বীকার করে কুশল বরণ চক্রবর্তী বলেন, আমার বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা চালানো হচ্ছে। ঘটনার সময় আমি ঢাকায় ছিলাম। আমি যদি সত্যিই ওই মামলার আসামি হতাম, তাহলে পুলিশ নিশ্চয়ই মামলা গ্রহণ করতো। কিন্তু পুলিশ তা করেনি। আজকে যারা আমার পদোন্নতি বোর্ড বাতিলের জন্য এসব করেছে, এরা সবাই একেকজন সন্ত্রাসী, পেইড এজেন্ট। আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ তারা প্রমাণ করতে পারবে না।
চবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, কুশল বরণের বোর্ড প্রত্যাহার করা হয়েছে।