চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) নবনির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান হল দুইটি ছাত্র হলের আবাসন কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার চবি উপাচার্যের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে হল দুটির উদ্বোধন ঘোষণা করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি।
এসময় তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজ উদ্যোগে এ হলগুলো নির্মাণের বিষয়ে বলেছিলেন। এ দুইটি হল নির্মাণের মাধ্যমে আশা করি শিক্ষার্থীদের আবাসন সমস্যা কিছুটা হলেও লাঘব হবে। যারা এ হলগুলোতে থেকে লেখাপড়া করবেন, তারা নিশ্চয়ই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে লালন করে নিজের ভবিষ্যত উজ্জ্বল করবেন।
প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আনোয়ার সাঈদের সঞ্চালনায় ও উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতারের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. সজীব কুমার ঘোষ।
সভাপতির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার বলেন, আমাদের দীর্ঘদিনের ইচ্ছা ছিল হল দুইটি চালু করার জন্য। কিন্তু ইউজিসি গত চার বছর ধরে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়েই লোকবল নিয়োগ দেয়া বন্ধ রেখেছে। তাঁরা বলেছে বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা খণ্ডকালীন কাজ করে তাদের দিয়ে কাজ করিয়ে নিতে। অবসর এবং মৃত্যুজনিত কারণে যে জায়গাগুলো খালি হচ্ছে সে জায়গাগুলোতেই আমরা মূলত লোকবল নিয়োগ দিচ্ছি। আমরা নিজেরা কোনো অনিয়ম করছি না। যেসব শূন্যপদ পূরণ করা অতি দরকার সেগুলোই কেবল করছি। অন্যান্য দপ্তর ও জায়গা থেকে লোকবল নিয়ে এসে হলগুলো চালু করেছি। আমরা চাইলেই পারি এবং সেটা করে দেখিয়েছি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চবি উপ–উপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর বেনু কুমার দে। এছাড়াও, সিন্ডিকেট সদস্য প্রফেসর ড. খাইরুল ইসলাম, ছাত্র উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন। এছাড়াও মোনাজাত পরিচালনা করেন সিন্ডিকেট সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবুল মনছুর।
হল দুইটিতে যেসব সুবিধা থাকছে : চবিতে মোট ১২টি আবাসিক হল রয়েছে। এরমধ্যে ৭টি ছাত্রদের ৫টি ছাত্রীদের জন্য। ১২টি হলে মোট আসন রয়েছে ৫ হাজার ৩০৭টি। এতে মোট শিক্ষার্থীদের মাত্র ১৯ দশমিক ৩১ শতাংশ শিক্ষার্থী আবাসিক সুবিধা পায়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও অতীশ দীপঙ্কর হল দুইটিতে মোট এক হাজার ৫০ জন শিক্ষার্থী থাকতে পারবে। হল দুইটি চালু হলে আবাসিক সুবিধার হার ৩ দশমিক ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে আবাসন সুবিধা ২২ দশমিক ৬৪ শতাংশে উন্নীত হবে। জানা যায়, ছাত্রদের জন্য ৭৩৮ আসন বিশিষ্ট ছয় তলা বিশিষ্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলটিতে দুটি লিফট, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পাঠাগার, ৫০ কেভি পাওয়ারের জেনারেটর, ক্যান্টিন, প্রার্থনা কক্ষ, ইনডোর গেম, কমন কক্ষ, ইউনিয়ন কক্ষ, টিভি কক্ষ, ওয়েটিং কক্ষ, প্রভোস্ট কক্ষ, আবাসিক শিক্ষকদের কক্ষ, লন্ড্রি, দোকানসহ রয়েছে সব আধুনিক সুযোগ–সুবিধা।