চবিতে নিষিদ্ধ ছাত্র সংগঠনের কর্মী সাজ্জাদকে পুলিশে দিল শিক্ষার্থীরা

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ৬ জানুয়ারি, ২০২৫ at ৮:০৭ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) নিষিদ্ধ ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ কর্মী সাজ্জাদ হোসেনকে আটক করে প্রক্টরিয়াল বডির মাধ্যমে পুলিশে দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

আজ সোমবার দুপুর ২টার দিকে চবির রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগে পরীক্ষা দিতে আসলে তাকে আটক করে শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে? সন্ত্রাসীদের আস্তানা- এ ক্যাম্পাসে হবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

সাজ্জাদ চবির রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের ১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী। সে জুলাই অভ্যুত্থানে চবির শহিদ হৃদয় তরুয়ার হত্যার সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। সোমবার তার ৫০৬ নম্বর কোর্সের চূড়ান্ত পরীক্ষা ছিল। এ পরীক্ষায় অংশ নিতে তিনি বিভাগে এসেছিল।

পরীক্ষা শেষে তাকে পুলিশে দেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, রাজনীতিবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তরের পরীক্ষা শুরু হয়েছে গত ১ ডিসেম্বর। সাজ্জাদ এর আগেও ছয়টি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।

আজ তার ৭ নম্বর পরীক্ষা ছিল। ওই বর্ষের আরও চারটি পরীক্ষা বাকি রয়েছে। বিভাগের শিক্ষার্থীরা জানান, বিভাগের শিক্ষকদের সহযোগিতায় অন্য শিক্ষার্থীদের থেকে আলাদা হয়ে অন্য একটি কক্ষে সাজ্জাদ এত দিন পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর সোমবার বেলা একটা থেকেই শিক্ষার্থীরা রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের সামনে জড়ো হন। এ সময় কয়েকজন শিক্ষার্থীকে সাজ্জাদকে চড়থাপ্পড় দিতে দেখা গেছে।

শিক্ষার্থীরা বলেন, ৩ আগস্ট চট্টগ্রামের নিউমার্কেটে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার সঙ্গে সে জড়িত ছিল। আমরা কোনো ফ্যাসিস্টের দোসরদের ক্যাম্পাসে দেখতে চাই না। আমরা এই হত্যাকারীর ছাত্রত্ব বাতিল চাই।

রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, জুলাই আন্দোলন প্রত্যক্ষভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছে। অনলাইনের মাধ্যমে নানাভাবে শিক্ষার্থীদের হুমকি দিয়েছে। আমরা এই হামলাকারীকে আর চবি ক্যাম্পাসে দেখতে চাই না। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

ইতিহাস বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থী জানান, সাজ্জাদ হোসেন নামের ছাত্রলীগ নেতা আমার ডিপার্টমেন্টের ছোট ভাই হৃদয় তাড়ুয়াকে হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিল। এমন সন্ত্রাসীকে ক্যাম্পাসে দেখে আমরা বিস্মিত। এদের এখনো বিচার না হওয়া প্রশাসনের ব্যর্থতা প্রমাণ করে।

আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী সাকিব মাহমুদ রুমী জানান, আমরা তার ফোন চেক করে জানতে পারি যে, সে এখনো চারটি ফেসবুক আইডি দিয়ে হুমকি এবং উগ্রবাদী প্রচারণা চালিয়ে আসছে। হতে পারে চবিতে সাম্প্রতিক সময়ে যে গুপ্ত হামলা হয়েছে তার সঙ্গে এরাই জড়িত।

এ বিষয়ে প্রক্টর প্রফেসর ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ বলেন, রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা এক ছাত্রকে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আটক করেছে। পরে তারা প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসে। আমরা পুলিশ এবং আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তাকে হস্তান্তর করেছি এবং প্রমাণ সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছি।

হাটহাজারী থানার ওসি কাউসার বলেন, আমাদের কাছে ছাত্রলীগের একজন কর্মীকে নিয়ে আসা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমীরসরাইয়ে বিএনপি-জামায়াতের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ৪
পরবর্তী নিবন্ধবিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের অভিযোগে সিইউএফএল কর্মচারী গ্রেপ্তার