চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) আবারও এক ভুয়া শিক্ষার্থীকে আটক করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আটককৃত ব্যক্তির নাম সীমান্ত ভৌমিক (১৯)। ২০২৪ সাল থেকে তিনি নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পরিচয়ে ক্যাম্পাসে অবস্থান করে আসছিলেন। গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী তাকে সন্দেহজনক আচরণের কারণে আটক করে প্রক্টরিয়াল অফিসে হস্তান্তর করেন। এ নিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে চবিতে দুই ভুয়া শিক্ষার্থী ধরা পড়লো। জানা যায়, সীমান্ত
ভৌমিকের বাড়ি খুলনা সদরে। তার বাবা বিপ্লব ভৌমিক ও মা ভারতী ভৌমিক। গত এক বছর ধরে তিনি দক্ষিণ ক্যাম্পাসের আর কে টাওয়ার এলাকার একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। কয়েকদিন ধরে তার আচরণ সন্দেহজনক মনে হওয়ায় নিকটবর্তী কয়েকজন শিক্ষার্থী তাকে নজরদারিতে রাখেন। পরে জিজ্ঞাসাবাদে সীমান্ত স্বীকার করেন যে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নন। এরপর তাকে প্রক্টরিয়াল অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়।
যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১৯–২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. ইখলাস বিন সুলতান বলেন, গতকাল শুনলাম সীমান্ত আবার আরেকজনের কাছে টাকা চেয়েছে। আজ জিজ্ঞাসা করলে সে স্বীকার করে যে সে চবির শিক্ষার্থী নয়। তিনি আরও বলেন, আচরণগত অসঙ্গতি ও বিভিন্নজনের কাছ থেকে টাকা চাওয়ার ঘটনা থেকেই সন্দেহ তৈরি হয়।
দর্শন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সাখাওয়াত হোসেন সিয়াম বলেন, ২০২৪ সালে রেলক্রসিং এলাকায় সীমান্তের সঙ্গে পরিচয় হয়। পরে দক্ষিণ ক্যাম্পাসে পাশাপাশি ভাড়া বাসায় থাকার সুবাদে ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। সে অনেকের কাছ থেকে টাকা ধার নিত। তিনি যোগ করেন, ক্যাম্পাসের বহু দোকানে সে বাকি খেয়েছে। প্রায় সব দোকানের মালিক তার কাছে টাকা পাবে। সন্দেহজনক আচরণের কারণে আজ জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে নিজেকে মেরিন সায়েন্সের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী বলে পরিচয় দেয়। কিন্তু বিভাগে কেউ তাকে চেনে না। এরপর আমরা তাকে প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসি।
এ বিষয়ে সীমান্ত ভৌমিক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করা আমার অনেকদিনের স্বপ্ন। ভর্তি পরীক্ষাও দিয়েছি, কিন্তু চান্স পাইনি। তারপরও আমার পরিবারকে বলেছি যে আমি চবিতে পড়ছি। তার ভাষ্যমতে, বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থানকালে তিনি বিভিন্ন দোকানদার ও শিক্ষার্থীর কাছ থেকে মোট ১৮ হাজার ৬০০ টাকা নিয়েছেন।
প্রক্টর অধ্যাপক ড. হোসেন শহীদ সরওয়ার্দী বলেন, শিক্ষার্থীরা এখন অনেক সচেতন। তাদের উদ্যোগেই সীমান্তকে আটক করা সম্ভব হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, সে বহুজনের সঙ্গে আর্থিক লেনদেনে জড়িত। তাকে নিরাপত্তা দপ্তরে হস্তান্তর করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, এর মাত্র এক সপ্তাহ আগেও আরেক ভুয়া শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছিল।












