চন্দনাইশে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে তছনছ হয়ে পড়েছে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা। সড়কের উপর দিয়ে প্রবল বেগে বন্যার পানি চলাচল করায় অনেকগুলো সড়কের বিশাল অংশ উপড়ে গেছে। এতে অভ্যন্তরীণ প্রায় ৩০ কিলোমিটার অংশ যানবাহন চলাচলের অকেবারে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে বলে জানা যায়। যার আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৫০ কোটি টাকা।
প্রবল বৃষ্টির ফলে পাহাড়ি ঢল নেমে আসায় গত সোমবার ভোর থেকে শঙ্খনদের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে চন্দনাইশে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় বন্যায় রূপ নেয়। অভ্যন্তরীণ সড়কের উপর দিয়ে প্রবল বেগে বন্যার পানি প্রবাহিত হওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। বিশেষ করে দুর্গম পাহাড়ি জনপথ ধোপাছড়ি ইউনিয়নের সাথে এখনো যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। উপজেলার ২টি পৌরসভা ও ৮টি ইউনিয়নের প্রায় প্রত্যেকটি গ্রামীণ সড়কের উপর দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হওয়ায় ক্ষত–বিক্ষত হয়ে পড়ে প্রত্যেকটি সড়ক। ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলোর মধ্যে দোহাজারী মাস্টারঘোনা–চিরিংঘাটা–ধোপাছড়ি–মংলারমুখ–রাঙ্গুনিয়া সড়ক, খানহাট–ধোপাছড়ি–বান্দরবান সড়ক, দোহাজারী–চাগাচর সড়ক, দোহাজারী–জামিজুরী–বড়ুয়াপাড়া সড়ক, ইউনুছ মার্কেট থেকে হিন্দুপাড়া সড়ক, দেওয়ানহাট–বৈলতলী–পটিয়া বাইপাস সড়ক, দোহাজারী–লালুটিয়া সড়ক, হাশিমপুরে সিকদারপাড়া সড়ক, বরমা ডিগ্রী কলেজ–মৌলভী বাজার সড়ক, চাগাচর–খাগরিয়া ভোরবাজার, খান বটতল–সিকদারপাড়া–ধোপাছড়ি সড়ক, শিকারীপাড়া–আদর্শ গ্রাম সড়ক, বরমা কেশুয়া এসএম সড়ক, কাঞ্চনাবাদে হযরত মোস্তান আলী শাহ সড়ক, কাঞ্চননগর আজম বাড়ি সড়ক, জোয়ারা–নগরপাড়া, বরকল থেকে প্রিন্সিপাল খায়েরুল বাশার সড়ক, চুড়ামণি–সাত্তারহাট জিসি সড়ক, চন্দনাইশ পৌরসভার হারলাসহ বিভিন্ন সড়ক উল্লেখযোগ্য। সাতবাড়িয়া ও কেশুয়ার বিভিন্ন সড়কে এখনো পানি জমে রয়েছে।
উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মাদ জুনাইদ আবছার চৌধুরী জানান, এলজিইডি’র আওতায় চন্দনাইশে সড়ক রয়েছে ৪০০ কিলোমিটার। এরমধ্যে উপজেলার ২টি পৌরসভা চন্দনাইশ ও দোহাজারী এবং ৮টি ইউনিয়ন কাঞ্চনাবাদ, জোয়ারা, হাশিমপুর, বৈলতলী, বরমা, বরকল, সাতবাড়িয়া ও দুর্গম ধোপাছড়ি ইউনিয়নের বিভিন্ন সড়কের মধ্যে প্রায় ৩০ কিলোমিটার সড়ক ক্ষত–বিক্ষত হয়ে গেছে। উপড়ে গেছে কয়েকটি কালভার্ট। যার আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ৫০ কোটি টাকা।
ধোপাছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবদুল আলীম জানান, বন্যার পানিতে নিম্নাঞ্চলের অনেক পরিবার এখনো পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। ধোপাছড়ি ইউনিয়নের সাথে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম দোহাজারী মাষ্টারঘোনা–চিরিংঘাটা–ধোপাছড়ি–মংলারমুখ–রাঙ্গুনিয়া সড়ক ও খানহাট–ধোপাছড়ি–বান্দরবান সড়কে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সড়ক দুটিতে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। বন্যায় সমস্ত অবকাঠামো তছনছ হয়ে পড়েছে। মাষ্টারঘোনা–চিরিংঘাটা–ধোপাছড়ি–মংলারমুখ–রাঙ্গুনিয়া সড়কের ছিকন ঝিরি ছড়ার কালভার্টটি বন্যার পানিতে ভেসে গেছে।