চন্দনাইশে সিলিন্ডারের গোডাউনে বিস্ফোরণে দগ্ধদের মধ্যে চারজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকেরা বলছেন, তাদের অবস্থা গুরুতর। দগ্ধ অপর ছয়জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাদের অবস্থাও শঙ্কামুক্ত নয়। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের সহযোগী অধ্যাপক এস খালেদ গতকাল বৃহস্পতিবার দগ্ধদের শারীরিক সবশেষ অবস্থার কথা জানিয়েছেন। গুরুতর চারজনের মধ্যে মাহবুবুর রহমানের (৪৫) শরীরের ৫০ শতাংশ, মো. ইউসুফের (৩২) শরীরের ৬৭ শতাংশ, মো. ইদ্রিসের (২৭) শরীরের ৬০ শতাংশ এবং রিয়াজের (২০) শরীরের ৪০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। তাদের সবার শ্বাসনালী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাকি ছয়জনের ব্যাপারে এস খালেদ বলেন, চট্টগ্রাম মেডিকেলে ভর্তি থাকলেও তাদের অবস্থা শঙ্কামুক্ত নয়। কারণ বিস্ফোরণের ঘটনায় তাদের সকলেরই শ্বাসনালী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
চট্টগ্রাম মেডিকেলে চিকিৎসাধীন আকিবের ৪০ শতাংশ, সৌরভের ৩০ শতাংশ, কফিল উদ্দিন ৪৫ শতাংশ, হারুণ ৪৫ শতাংশ, সালেহ ৪৫ শতাংশ এবং লিটনের ২০ শতাংশ পুড়েছে বলে বার্ন ইউনিটের চিকিৎসরা জানিয়েছেন।
অনুমোদন নেই : চন্দনাইশ উপজেলার বৈলতলী ইউনিয়নের মাহবুবুর রহমানের মালিকানাধীন গ্যাস সিলিন্ডারের গোডাউনে বুধবার সকালে সিলিন্ডার লোড–আনলোডের সময় বিস্ফোরণ হয়। তাতে গোডাউন মালিকসহ ১০জন দগ্ধ হন। গোডাউনটি চন্দনাইশ ও সাতকানিয়া উপজেলার সীমানার মধ্যে অবস্থিত। বিস্ফোরণের পর বুধবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে সেখানে যায় বিস্ফোরক অধিদপ্তরের একটি দল।
বিস্ফোরক অধিদপ্তর বলছে, গ্যাস সিলিন্ডারের গোডাউনটির কোনো অনুমোদন ছিল না। গোডাউনটিতে সিলিন্ডার লোড আনলোডের বদলে ক্রস ফিলিং করা হচ্ছিল বলে তাদের ধারণা। সহকারী বিস্ফোরক পরিদর্শক সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমরা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। সেখানে অনেক সিলিন্ডার ছিল। কিন্তু গুদামজাত বা বিক্রির জন্য কোনো লাইসেন্স তারা বিস্ফোরক অধিদপ্তর থেকে নেয়নি। তিনি বলেন, ওই গোডাউনে গ্যাস ক্রস ফিলিং করা হচ্ছিল বলে আমাদের প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে। এ বিষয়ে প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খোন্দকার মাহমুদুল হাসান বলেন, যে গোডাউনে বিস্ফোরণ হয়েছে তার একটি অংশ সাতকানিয়া অংশে পড়লেও মালিক চন্দনাইশের। এ দুর্ঘটনার পর আমরা সাতকানিয়া এলাকায় এ ধরনের যেসব প্রতিষ্ঠান রয়েছে, সেগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করব। চন্দনাইশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজীব হোসেনও অবৈধভাবে পরিচালিত এমন কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন।