চন্দনাইশে বাসের বেপরোয়া গতি কেড়ে নিল দুই প্রাণ

সীতাকুণ্ডে সড়কে স্কুলছাত্রসহ ৩ জনের মৃত্যু

চন্দনাইশ ও সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি | সোমবার , ৯ অক্টোবর, ২০২৩ at ৬:১২ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামকক্সবাজার জাতীয় মহাসড়কের চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী পৌরসদর এলাকায় একটি বেপরোয়া গতির যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় ২ জন নিহত হয়েছেন। গতকাল রোববার দুপুরে দোহাজারী হাজারী টাওয়ারের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তিন শিক্ষার্থীসহ আরো ৫ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। এছাড়া সীতাকুণ্ডে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ জন নিহত ও ৫ জন আহত হয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, চন্দনাইশে গতকাল দুপুর পৌনে ২টার সময় চট্টগ্রামমুখী ইউনিক পরিবহনের একটি বেপরোয়া গতির বাস প্রথমে একটি মোটরসাইকেলে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় একটি ব্যাটারি রিকশাকে ধাক্কা দেয়। এ সময় রিকশার যাত্রী মৃদুল কান্তি নাথ (৫০) ঘটনাস্থলে নিহত হন। এরপর ঘাতক বাসটি রাস্তায় দাঁড়ানো হানিফ পরিবহনের বাসের হেলপার মো. আবদুল্লাহকে (৩৫) চাপা দিলে তিনিও ঘটনাস্থলে নিহত হন। দুর্ঘটনার পরপর স্থানীয়রা হতাহতদের উদ্ধার করে দোহাজারী হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ২ জনকে মৃত ঘোষণা করেন। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসার পর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে স্থানীয় জনতার সহায়তায় বাস চালক মফিজুর রহমানকে (৪২) আটক করে। তিনি কক্সবাজার জেলার চকরিয়া হারবাং এলাকার গোলাম হোসেনের ছেলে।

নিহত মৃদুল কান্তি নাথ দোহাজারী পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ড চাগাচর নাথপাড়ার মৃত চৈত্যন্ন চরণ নাথের ছেলে এবং মো. আবদুল্লাহ কক্সবাজার সদর দক্ষিণ দ্বীপকুল এলাকার আবদুল লতিফের ছেলে। ঘটনার সময় আহতরা হলেন মোটরসাইকেল আরোহী বান্দরবান জেলার কুতুব মিনার (২২), মো. মোজাম্মেল হক (২১), মো. হারুনুর রশিদ (২২)। তারা তিনজনই আলীম ফাইনাল পরীক্ষা দিয়ে মোটরসাইকেলযোগে বান্দরবান যাচ্ছিলেন। এছাড়া আহত আমির হোসেন (৪০) নামে অপর একজনের নাম জানা গেছে। দোহাজারী হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ খান মোহাম্মদ এরফান জানান, দুর্ঘটনার পরপর পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ঘাতক বাস ও বাসের চালক মফিজুর রহমানকে আটক করে। এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানান তিনি।

সীতাকুণ্ড : এদিকে সীতাকুণ্ডে তিনটি পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় এক স্কুল ছাত্রসহ তিনজন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন ৫ জন। গত শনিবার রাতে উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়ন এবং ভাটিয়ারী ইউনিয়নে এসব দুর্ঘটনা ঘটে।

বার আউলিয়া হাইওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার রাত ৭টার সময় উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের শীতলপুরস্থ বগুলা বাজার এলাকায় মহাসড়কে বাসের ধাক্কায় মানসিক ভারসাম্যহীন অজ্ঞাত এক নারী নিহত হয়েছেন। হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশটি উদ্ধার করেছে। অপরদিকে রাত সাড়ে ৯টার সময় একই ইউনিয়নের মদনহাট এলাকায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুজন নিহত হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গোপাল জলদাস (৫৫) নামে এক ব্যক্তি মদ্যপ অবস্থায় হেঁটে সড়ক পার হওয়ার সময় ঢাকামুখী একটি মোটরসাইকেলের সামনে এসে পড়ে গুরুতর আহত হন। এ সময় মোটরসাইকেল আরোহী আবদুল্লাহ আল নোমান (১৯) সড়ক থেকে ছিটকে পিলারের সাথে ধাক্কা খেয়ে গুরুতর আহত হলে স্থানীয়রা দুজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রেরণ করলে শনিবার রাতে চমেক হাসপাতালে গোপাল জলদাস মারা যান। আর গতকাল দুপুর ১২টার দিকে নোমানের মৃত্যু হয়। নিহত মোটরসাইকেল আরোহী নোমান সোনাইছড়ি ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের ফুলতলা এলাকার মো. নাজিম উদ্দীনের ছেলে এবং সোনাইছড়ি সবুজ শিক্ষায়তন উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০শ্রেণীর শিক্ষার্থী। গোপাল জলদাস একই ইউনিয়নের বগুলা বাজার এলাকার জেলে পাড়ার বসন্ত জল দাসের ছেলে।

অপরদিকে শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ভাটিয়ারী ইউনিয়নের পোর্টলিংক এলাকায় ঢাকামুখী লেনে উল্টোপথে আসা ব্যাটারি রিকশার সাথে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে ৫ জন গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে।

বার আউলিয়া হাইওয়ে থানার ওসি বেলাল উদ্দিন জাহাঙ্গীর বলেন, বগুলা বাজার এলাকায় বাসের ধাক্কায় এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারী নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় বাস ও চালক আটক আছে। থানায় মামলা হয়েছে। এবং মদনহাট এলাকায় মোটরসাইকেলের ধাক্কায় গোপাল জল দাস নামে ১ জন মারা গেছে শুনেছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধইনভেন্ট্রির পর নিলামে যেতে ৬ মাস লাগল কেন?
পরবর্তী নিবন্ধইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত দ্রুত বন্ধের আহ্বান বাংলাদেশের