চট্টগ্রামের চন্দনাইশ পৌরসভার ১ নম্বর উত্তর গাছবাড়িয়া ওয়ার্ডের জোয়ারা হিন্দু পাড়া এলাকায় দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। দুজনই স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা। তারা পরস্পর পাল্টা-পাল্টি হামলার অভিযোগ করেছেন। অন্যদিকে পৌরসভা নির্বাচনে ইসলামী ফ্রন্ট মনোনীত মেয়র প্রার্থী মুহাম্মদ ফারুক বাহাদুরের বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
চন্দনাইশ পৌরসভায় কাল ১৪ ফেব্রুয়ারি ভোট হবে। ১ নম্বর উত্তর গাছবাড়িয়া ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর অজয় দত্ত। তিনি গাছবাড়িয়া কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও বর্তমানে পৌরসভা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক। আরেক প্রার্থী সুজন সরকার পৌরসভা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি।
জানা যায়, গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ১ নম্বর ওয়ার্ড জোয়ারা হিন্দু পাড়া সড়কে কাউন্সিলর প্রার্থী অজয় দত্তের (ব্লাকবোর্ড মার্কা) পক্ষে প্রচারণা চালানোর সময় অপর প্রার্থী সুজন সরকারের (পানির বোতল মার্কা) সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়।
এ ব্যাপারে কাউন্সিলর প্রার্থী অজয় দত্ত বলেন, আমার কর্মী-সমর্থকরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রচারণা চালানোর সময় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সুজন সরকারের বহিরাগত সমর্থকরা অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। এছাড়া তারা আমার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ঘরের দরজা, জানালার কাচ ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় আমার ১৫ নেতাকর্মী আহত হয়। তাদের মধ্যে ইমন ঘোষ (১৮), দীপ চৌধুরী (১৪), মিন্টু দত্ত (৬৪), নয়ন সর্দার (২২), সুর্বণা দত্ত (৩৫), লক্ষ্মী দত্ত (৩৬), রাজিব সরকার (৪২), লাকী দত্ত (৩৫), তমা দাশ (৪৪), মানিককে (২৬) হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান তিনি।
অন্যদিকে প্রতিদ্বন্দ্বী কাউন্সিলর প্রার্থী সুজন সরকার জানান, অজয় দত্তের বাড়িতে ও সমর্থকদের উপর হামলার বিষয়টি ডাহা মিথ্যা। আমার সমর্থকরা প্রচারণা শেষ করে অজয় দত্তের বাড়ির পাশ দিয়ে চলে আসার সময় তার সমর্থকরাই পরিকল্পিতভাবে হামলা চালায়। তাদের বিকেলে প্রচারণা চালানোর কথা থাকলেও আমরা সকালে গণসংযোগে বের হলে তারা পাল্টা গণসংযোগ দিয়ে মহিলা নামিয়ে আমাদের প্রতিহত করতে চেয়েছে। উল্টো তাদের হামলায় আমার ৪/৫ জন কর্মী-সমর্থক আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে মো. মানিককে (৩০) চন্দনাইশ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এছাড়াও উৎস সরকার, পারভেজ উদ্দীনসহ আরো কয়েকজন আহত হয়। তিনি বিষয়টি থানায় অবহিত করেছেন বলে জানান।
এ ব্যাপারে চন্দনাইশ থানার উপ-পরিদর্শক মো. আব্দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, ১ নম্বর ওয়ার্ডের দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালানোর সময় দুইদিক থেকে আসা দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মিছিল জোয়ারা হিন্দুপাড়া এলাকায় মুখোমুখি হয়ে গেলে দু’পক্ষের কিছু উচ্ছৃঙ্খল যুবকের মধ্যে হাতাহাতি হয়। সংবাদ পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি।
এদিকে নির্বাচনে ইসলামী ফ্রন্ট মনোনীত মোমবাতি প্রতীকের মেয়র প্রার্থী মুহাম্মদ ফারুক বাহাদুরের বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শুক্রবার মাগরিবের নামাজের পরপর একদল দুর্বৃত্ত হামলা চালিয়ে ঘরের দরজা, জানালার কাচ, সিসি ক্যামেরা ও লাইট ভাঙ্গচুর করে। এ ঘটনায় প্রার্থীর মা ফাতেমা বেগম (৬৫) আহত হন। তাকে চন্দনাইশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মেয়র প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট মুহাম্মদ আবদুল হাকিম জানান, মাগরিবের নামাজের পর কিছু বহিরাগত যুবক হামলা চালায়। এতে কাউন্সিলর প্রার্থীর বৃদ্ধা মা আহত হন। এছাড়া আরও ৪-৫ জন কর্মী-সমর্থক আহত হয়। পরে দুর্বৃত্তরা ঘরের প্রধান দরজায় তালা লাগিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। এ ব্যাপারে চন্দনাইশ থানার এসআই মো. আরিফ জানান, হামলার খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। তবে ঘটনাস্থলে কাউকে পাওয়া যায়নি।