সদ্য ঘোষিত চন্দনাইশ উপজেলা, চন্দনাইশ ও দোহাজারী পৌরসভা এবং গাছবাড়িয়া সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি বাতিলের দাবিতে পদবঞ্চিত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা দ্বিতীয় দিনের মতো অবস্থান ধর্মঘট পালন করেছে। গতকাল শনিবার সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অবস্থান ধর্মঘটে কয়েকশ ছাত্রলীগ নেতাকর্মী উপজেলার গাছবাড়িয়া কলেজ গেইট এলাকায় অবস্থান নেয়। এর আগে গত শুক্রবার উপজেলার ৪ ইউনিট কমিটি ঘোষনার পরপর তৃণমূল ও ত্যাগী নেতাকর্মীরা বিকেল সাড়ে তিনটা থেকে উপজেলার গাছবাড়িয়া কলেজ গেইট এলাকায় সড়কে ব্যারিকেট দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। এসময় সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে ও গাছের গুড়ি ফেলে ব্যারিকেড সৃষ্টি করায় সড়কের উভয় পাশে কয়েক কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়।
একই সাথে মহাসড়কের বুলার তালুক, দোহাজারী পৌরসভা ও বাদামতল এলাকায় সড়ক অবরোধ করে নেতাকর্মীরা।
আজ শনিবারও (২৬ জুন) কয়েকশ’ নেতাকর্মীকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের গাছবাড়িয়া কলেজ গেইট এলাকায় অবস্থান নিয়ে সদ্য ঘোষিত ৪ ইউনিট কমিটি বাতিলের দাবিতে বিভিন্ন শ্লোগান দিতে এবং মহাসড়কে বিক্ষোভ করতে দেখা যায়।
দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুদ্দিন মো. মানিক জানান, অছাত্র, অপরিচিত, মাদক ব্যবসায়ী, বিবাহিতদের দিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিকভাবে চন্দনাইশের ৪টি ইউনিট কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এ কমিটিতে ছাত্রলীগের তৃণমূল ও ত্যাগীদের স্থান না দিয়ে এলডিপি, বিএনপি, জামায়াত-শিবির এবং ছাত্রসেনা ঘরানার অনেককেই স্থান দেয়া হয়েছে।
কমিটি ঘোষণার আগে স্থানীয় সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম চৌধুরী’র পরামর্শও নেয়া হয়নি।
তিনি বলেন, “এ কমিটিতে ত্যাগীরা স্থান না পাওয়ায় ইতিমধ্যে অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী পদত্যাগ করেছেন এবং পদত্যাগের মিছিল অব্যাহত আছে।” তাই এ অবৈধ কমিটি বাতিলের দাবি জানান তিনি।
দ্বিতীয় দিনের অবস্থান ধর্মঘটে বক্তব্য রাখেন জাহিদুর রহমান চৌধুরী, মাহিন চৌধুরী, দেলোয়ার হোসেন মানিক, জাহিদুল ইসলাম আবির, ইয়াছির আরাফাত, সাজ্জাদুল ইসলাম, মারজাদুল ইসলাম, আরমান সজিব, ওয়াহিদ, হোসেন, আরমান, আসিফ সম্রাট চৌধুরী, কাজী রুমি, ফরমান ফয়সাল, বাবর, বাবু, হিরু, জিয়াদ, আবিদ, কাজেমী, রানা, হাসিব, রবিউল, সাইমন, তারেক, রাকিব, সোহান, মারুফ, রবিন প্রমুখ।
এ ব্যাপারে দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আবু তাহের আজাদীকে বলেন, “আমরা দায়িত্বশীল সবার সাথে আলোচনা করেই চন্দনাইশের ৪ ইউনিট কমিটি ঘোষণা করেছি। এতে দায়িত্বশীল সব অনুসারীদের স্থান দেয়া হয়েছে। হয়তো চাহিদামতো দেয়া সম্ভব হয়নি।”
তিনি বলেন, “ছাত্রলীগ বিশাল সংগঠন। এখানে হাজার হাজার নেতাকর্মী রয়েছে। সবাইকে তো আর পদ-পদবী দেয়া সম্ভব নয়। আমরা জানি একটি কমিটি ঘোষণা করতে গেলে অনেক ত্যাগী নেতা বাদ পড়ে যায়। এক্ষেত্রে দীর্ঘদিনের আবেগের বশবর্তী হয়ে অনেকেই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটায়। যারা আন্দোলনে রয়েছে আমরা তাদের বুঝানোর চেষ্টা করছি যাতে তারা সাংগঠনিক ধারায় ফিরে আসে।”
আর যারা সাংগঠনিক ধারায় ফিরে আসবে না তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।