চন্দনাইশে এনজিও কর্মীর মৃত্যু ঘিরে রহস্য

চন্দনাইশ প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ৭ মার্চ, ২০২৪ at ৭:৫৩ পূর্বাহ্ণ

চন্দনাইশে সুমন ঘোষ (৩০) নামে এক এনজিও কর্মীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। তিনি সোসাইটি ফর সোশ্যাল সার্ভিস (এসএসএস) নামে একটি এনজিও সংস্থার চন্দনাইশ শাখার মাঠকর্মী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পরিবারের সদস্যরা এটিকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বললেও এনজিও সংস্থার কর্মকর্তারা বলছেন তিনি আত্মহত্যা করেছেন।

জানা যায়, টাঙ্গাইল সদর এলাকার বেথইর এলাকার প্রফুল্ল ঘোষের ছেলে সুমন ঘোষ ১০ মাস আগে এনজিও সংস্থা এসএসএস এর চন্দনাইশ শাখায় মাঠকর্মী হিসেবে যোগদান করেন। সেই থেকে তিনি চন্দনাইশ পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডস্থ দুর্লভপাড়ার একটি ভবনে উক্ত শাখার অফিসে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। ওই ভবনের নিচ তলায় অফিস এবং দ্বিতীয় তলায় একটি রুমে সুমনসহ অফিসের পাঁচ মাঠকর্মী থাকতেন। কিন্তু ঘটনারদিন গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ওই ভবনের ছাদের সিড়ি ঘরের চালার বিমের সঙ্গে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

এদিকে ভাইয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে টাঙ্গাইল থেকে ছুটে আসেন সুমনের বড় ভাই সনজিত ঘোষ ও উত্তম ঘোষ। তারা জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সুমন মায়ের সঙ্গে স্বাভাবিক কথা বলেছে। মোবাইল ফোনে সে মা’কে একটি শাড়ি পছন্দ করতে বলেছে এবং মায়ের শাড়ি পছন্দ হলে টাকা পাঠানোর কথা বলে। আগামী ঈদে সে বাড়ি আসার কথাও ছিল। সবকিছুই ছিল স্বাভাবিক। হঠাৎ করে রাত ১১টার মধ্যে এমন কি হয়ে গেলো সে আত্মহত্যা করবে? তার ভাই সুমন যে স্থানে ফাঁস লাগিয়েছে বলা হচ্ছে ওই স্থানের উচ্চতাও ৬৭ ফুটের বেশি হবে না। তাই তারা এই ঘটনাকে কোনোভাবেই আত্মহত্যা মানতে পারছে না। এই ঘটনাকে তারা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড এবং এ ব্যাপারে মামলা দায়ের করার কথা বলেন। তারা সুষ্ঠু তদন্ত করে ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন করার দাবি জানান প্রশাসনের কাছে।

এসএসএস চন্দনাইশ শাখার ম্যানেজার মোশাররফ হোসেন পরিবার নিয়ে থাকেন অফিসের পার্শ্ববর্তী অপর একটি বিল্ডিংয়ের ভাড়া বাসায়। ঘটনারদিন চট্টগ্রাম জোন অফিসে মাসিক সমন্বয় সভায় ছিলেন তিনি। তাদের এরিয়া ম্যানেজারও সমন্বয় সভায় উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে রাত ৮টার দিকে তারা চন্দনাইশ আসেন এবং জোনের পক্ষ থেকে পরদিন কক্সবাজারে পিকনিকে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। তিনি জানান, রাত ১১টার দিকে এক ফিল্ড অফিসার তাকে ফোন দিয়ে জানায়, সুমনের অবস্থা খারাপ, সে ছাদের উপর ঝুলে রয়েছে। খবর পেয়ে দ্রুত অফিসে গিয়ে বিষয়টি থানা পুলিশকে অবগত করি। পরে পুলিশ এসে তার লাশ উদ্ধার করে। তিনি জানান, ওইদিন রাত ১১টায়ও সুমন রুমে না ফেরায় তার সঙ্গে থাকা অপর মাঠকর্মীরা তাকে ভবনের আশেপাশে খোঁজাখুঁজি করে। এক পর্যায়ে ছাদে উঠলে তারা ঘটনা সম্পর্কে অবগত হন।

চন্দনাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওবাইদুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় ওই এনজিও কর্মীর লাশ উদ্ধার করে। সুরতহাল রিপোর্ট তৈরীর পর ময়নাতদন্তের জন্য লাশ চমেক হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়। তিনি জানান, লাশের গলায় ফাঁসের দাগ রয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর জানা যাবে এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা। এ ব্যাপারে একটি অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআমেরিকায় আবারো ট্রাম্প-বাইডেন লড়াই
পরবর্তী নিবন্ধস্বর্ণের দামে ফের রেকর্ড, ভরিতে বাড়ল ২২১৬ টাকা