চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন চতুর্থবারের মতো স্থগিত হলো। একই সাথে সংগঠনের মহানগরীর সকল ইউনিটের সম্মেলনও স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল এই নির্দেশ প্রদান করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার বিষয়টি নগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দকে জানানো হয়েছে। আগামী ৩১ জুলাই নগর আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল। ইতোপূর্বে তিনবার পেছানোর পর চতুর্থ দফার তারিখ নির্ধারণ করা হয়। সম্মেলনের আগে নগরীর ২৬টি ওয়ার্ড এবং ১৪টি থানার সম্মেলন সম্পন্ন করারও তাগাদা ছিল।
দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষায় সব সম্মেলন স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ৩০ জুলাই অনুষ্ঠেয় চট্টগ্রাম–১০ আসনের উপনির্বাচনের পর ধীরেসুস্থে সম্মেলন করা যাবে।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, ইউনিট সম্মেলন নিয়ে নগরীতে বিভিন্ন সময় দলীয় গ্রুপিং মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। বিভিন্ন ইউনিটে নিজেদের পছন্দ মাফিক কমিটি গঠনে নেতৃবৃন্দ তৎপর। নগরে আওয়ামী লীগের ৪৩টি সাংগঠনিক ওয়ার্ড এবং ১৫টি থানা ইউনিট রয়েছে। এর মধ্যে ১৭টি ওয়ার্ড এবং একটি থানা ইউনিটে সম্মেলন হয়েছে। বাকি ওয়ার্ড ও থানা ইউনিটের সম্মেলন শেষ করে আগামী ৩১ জুলাই কিং অব চিটাগাংয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল। নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরীকে আহ্বায়ক এবং সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনকে সদস্য সচিব করে গঠন করা হয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি। ওই দিন সম্মেলন করার জন্য প্রক্রিয়াও শুরু হয়।
তবে নগর আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানান, ৩০ জুলাই চট্টগ্রাম–১০ আসনে উপনির্বাচন। এই অবস্থায় ৩১ জুলাই নগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন এবং এর আগে দলের অন্য ইউনিটগুলোর সম্মেলন হলে নগরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে। এর প্রভাব পড়বে নির্বাচনে। যা দল কিংবা নির্বাচনের জন্য ভালো হবে না।
বিষয়টি অনুধাবন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সব সম্মেলন স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। দলের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বিষয়টি নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনকে ফোন করে জানিয়ে দিয়েছেন। ফলে দফায় দফায় পিছিয়ে যাওয়া নগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন আবার পেছালো। এই নিয়ে চার দফায় এই সম্মেলনের তারিখ পেছানো হয়েছে বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে।
এ বিষয়ে গত রাতে ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার সাথে যোগাযোগ করা হয়। তিনি সম্মেলন স্থগিত করার তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব আ জ ম নাছির উদ্দিন গত রাত ৯টা পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো নির্দেশনা পাননি বলে জানান। তিনি বলেন, আমাকে কাদের ভাই কিংবা স্বপন ভাই কোনো কিছু বলেননি। মোশাররফ ভাইও বলেননি। তবে দলীয় প্রধান যেভাবে নির্দেশনা প্রদান করবেন সেভাবে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, সম্মেলন করার জন্য তাগাদাও কেন্দ্র থেকে দেয়া হয়েছে। কেন্দ্রের নির্দেশনা মেনেই আমরা সম্মেলন করছিলাম। এখন কেন্দ্র থেকে যদি না করা হয় তাহলে হবে না। এখানে জোরাজুরির কোনো ব্যাপার নেই।
গত রাতে দলের একাধিক নেতা আজাদীকে বলেন, শহরে উপনির্বাচন। তাই এখন সম্মেলন করার সময় নয়। তড়িঘড়ি করে সম্মেলন করার কোনো মানে হয় না। দলের শীর্ষ নেতাদের মতামতের ভিত্তিতে সবার ঐকমত্যে ধীরেসুস্থে সম্মেলন করলে সংগঠন গতিশীল হবে।











