চড়ুই কবুতর ও ভাত শালিকের বন্ধুত্ব

সাঈদুর রহমান লিটন | বুধবার , ২৮ আগস্ট, ২০২৪ at ৯:৪৯ পূর্বাহ্ণ

বাপ্পি ও কাকন চাচাতো ভাই। দুই জনই লেখাপড়া করে একজন ৮ম শ্রেণিতে অন্যজন ৯ম শ্রেণিতে। বাপ্পি দুইটি দেশি কবুতর হাট থেকে কিনে আনে। কবুতর দুটি যত্ন সহকারে পালতে করা শুরু করে। সেই কবুতর দুটি থেকে প্রায় দশ/বারো জোড়া কবুতর এখন বাপ্পির। বাপ্পি একটি কবুতরের খোপ কিনেছে তাতে ২৫/২৬ জোড়া কবুতর পালন করা যায়। বাপ্পির দেখা দেখি কাকন ও শুরু করে কবুতর পালন। কাকনের ও আট/দশ জোড়া কবুতর হয়ে গাছে। ওদের বাড়িটা এখন কবুতরময়। কবুতর উড়ছে, কবুতর মারামারি করছে, কবুতর খেলাধূলা করছে, কবুতর কারো মন জয় করার চেষ্টা করছে। অসাধারণ সব দৃশ্য রূপায়ণ হচ্ছে বাপ্পিকাকনদের বাড়ি।দেখে তৃপ্তি পাওয়া যায়। ভালো লাগে। বাপ্পি কাকনদের কবুতর গুলোর খাবার দেওয়া হয় যার যার ঘরের টিনের চালের উপর।

খাবারের সময় কবুতরের ডানাঝাটা আর আর টিনের চাল থেকে ঠুকরিয়ে ঠুকরিয়ে খাওয়ার শব্দ এক বৈচিত্র্যময় তালের সৃষ্টি করে। যা মনকে আলাদা একধরনের ছন্দময় দোলায় দোলিত করে । কাকন আর বাপ্পি তা শোনে এবং দারুণ উপভোগ করে। হঠাৎ দেখা যায় সেখানে একজোড়া চড়ুই পাখি কবুতরের খাবারে ভাগ বসাতে চেষ্টা করছে কিন্তু কবুতর খেতে দিচ্ছে না। তাড়িয়ে দিচ্ছে। এভাবে কয়েকদিন খাবারের লোভে আসতে থাকে এক পর্যায়ে খেতে দেয় এবং এক সাথে খেতে থাকে। কোন একসময় বন্ধু হয়ে যায়। যেন ওরা সবাই এই অংশিদার। খাবার দিলে এক সাথেই খায়। দিন যায় আর চড়ুই সংখ্যা বাড়তে থাকে। বাপ্পিদের বাড়িতে এখন প্রায় একশ চড়ুই পাখির বসবাস। কবুতরের সাথে চলাফেরা করে, কবুতরের সাথেই খায় দায়, বিশ্রাম নেয়। সে এক অনুপম দৃশ্য। এর মাঝে একবার দেখা গেল একটি ভাত শালিক এলো। যথারীতি ওদের খাবার খাচ্ছে বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করছে। প্রথম দিন আশে পাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা খাবার খেয়ে চলে গেলো। পরদিন জোড়া ধরে এলো। ধীরে ধীরে কবুতর ও চড়ুইয়ের সাথে মিশে গেলো। কাকন বাপ্পিদের বাড়িতে প্রায় পনের ষোলটি ভাত শালিকের বাস। মজার ব্যাপার হলো। কয়েকটি ভাত শালিক কবুতরের ফাঁকা খোপ গুলোতে বাসা তৈরি করে ডিম দেওয়া শুরু করেছে। আর চড়ুই গুলো ঘরের চালে, কবুতরের খোপের চালে বিভিন্ন জায়গায় বাসা তৈরি করে বসবাস শুরু করে দিয়েছে।দিন যাচ্ছে আর ওদের সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বেড়েই চলেছে। এখন তিন শ্রেণির পাখির সাথে এক অনুপম বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে বাপ্পি আর কাকম । ওরা এখন এক সাথেই খায় দায় ঘুরাঘুরি করে।

বাপ্পি বা কাকন কে দেখলে ভয় পায় না। কবুতরের মতই ধরা যায়, ছোঁয়া যায় আদর করা যায়। বাপ্পিদের বাড়ি এখন কবুতর, চড়ুই আর ভাত শালিকের অভয়ারণ্য।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজনকল্যাণমুখী দেশ পুনর্গঠনে সব মহলকে একযোগে কাজ করতে হবে
পরবর্তী নিবন্ধকাঠবিড়ালী