চট্টগ্রাম-সিলেটসহ অভ্যন্তরীণ রেললাইনগুলো শোচনীয়

চলে না দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আনা ৩০ ইঞ্জিন

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ৫ জুন, ২০২২ at ৬:১৫ পূর্বাহ্ণ

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম-সিলেটসহ অভ্যন্তরীণ রেললাইনগুলোর অবস্থা শোচনীয়। চট্টগ্রাম-সিলেট লাইনের অবস্থা এতই খারাপ যে, এই রুটে দক্ষিণ কোরিয়ার হুন্দাই রোটেম থেকে আমদানিকৃত ২০০ হর্স পাওয়ারের বেশি শক্তির ইঞ্জিনগুলো চলে না। পুরনো ইঞ্জিন দিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে চট্টগ্রাম-সিলেট রুটে উদয়ন ও পাহাড়িকা এক্সপ্রেস।

কোরিয়া থেকে আমদানিকৃত ইঞ্জিনগুলো উচ্চগতির, ওজনও বেশি। অথচ চট্টগ্রাম-সিলেট রেললাইন সংস্কার করা হয়েছে বেশিদিন হয়নি। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. সবুত্তগীনের তত্ত্বাবধানে এই লাইনটি সংস্কার করা হয়েছিল। সংস্কারের জন্য বিপুল অর্থের বিন্দুমাত্র খরচ হয়নি। পুরো টাকাই লোপাট হয়েছে বলে তখন সমালোচনার ঝড় উঠেছিল। যদি সংস্কার করা হতো তাহলে দুই-তিন বছরের মধ্যে এই লাইনের অবস্থা এত খারাপ হতো না। চট্টগ্রাম থেকে একটি ট্রেন পৌঁছতে ৯ থেকে ১০ ঘণ্টা লাগে। অপরদিকে হাটহাজারী-নাজিরহাট, চট্টগ্রাম-দোহাজারী রুটেও হুন্দাই রোটেম থেকে আমদানিকৃত ২০০ হর্স পাওয়ারের বেশি শক্তির ৩০টি ইঞ্জিন চলে না। কোরিয়া থেকে আমদানিকৃত ইঞ্জিনগুলো উচ্চগতির। নড়বড়ে, পাথরবিহীন রেললাইনে উচ্চগতির ও অধিক ওজনের ইঞ্জিনগুলো চলতে পারে না। নতুন ইঞ্জিনগুলো এসব রুটে চলাচলের অনুমতি দেয়নি রেল কর্তৃপক্ষ।

এদিকে ঢাকা-জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ-জামালপুর ও ঢাকা-আখাউড়া-সিলেট রুটসহ সংস্কার না হওয়া প্রায় ১ হাজার কিলোমিটার রেললাইনে নতুন ইঞ্জিনগুলো চালানো সম্ভব নয়। কারণ এসব রুটের এঙেল লোড (ভার বহন ক্ষমতা) ১০-১১। কিন্তু নতুন ইঞ্জিনগুলোর ভার বহন ক্ষমতা ১৫। এসব ইঞ্জিন শুধু ঢাকা-চট্টগ্রাম ও উত্তরবঙ্গ রুটে চালানো সম্ভব। এসব রুটে এই ইঞ্জিনের ভার বহন ক্ষমতা আছে।

একাধিক লোকোমাস্টারের (ট্রেন চালক) সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হাটহাজারী-নাজিরহাট ও চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেললাইনের অবস্থা খুবই খারাপ। চট্টগ্রাম-নাজিরহাট থেকে চট্টগ্রাম-দোহাজারী লাইনের অবস্থা বেশি খারাপ। এই লাইনে ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটারের বেশি গতিতে ট্রেন চালানো যায় না বলে জানান চালকেরা। লাইন খারাপ থাকায় এই রুটে লোকাল ট্রেন চলাচল গত দুই বছর ধরে বন্ধ। এখন শুধুমাত্র একটি ডেমু ট্রেন যায় এবং আসে। অপরদিকে একটি ডেমু ট্রেন পটিয়া যায় এবং আসে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে রেলের প্রকৌশল ও যান্ত্রিক বিভাগের দুই কর্মকর্তা আজাদীকে জানান, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের জন্য ৩০টি নতুন ইঞ্জিন কেনা হয়েছে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকায়। কিন্তু দেশের পুরনো লাইনে এসব ইঞ্জিন ব্যবহার করা যাচ্ছে না। কারণ ২০০ হর্স পাওয়ারের বেশি শক্তির ইঞ্জিনগুলো অনেক বড়। এ কারণে এর ওজনও বেশি।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম বিভাগের চিফ পাওয়ার কন্ট্রোল রায়হান মোস্তফা আজাদীকে বলেন, দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আমদানিকৃত ৩০টি ইঞ্জিন চট্টগ্রাম-সিলেট ছাড়া প্রায় রুটে চলে। এই রুটে চলাচলের জন্য কর্তৃপক্ষ অনুমতি দেয়নি। চট্টগ্রাম-দোহাজারী ও চট্টগ্রাম-নাজিরহাট রুটেও চলে না। নতুন ৩০টির মধ্যে পাওয়ারের সমস্যার কারণে এখন কারখানায় আছে দুটি। কোরিয়ার ইঞ্জিনিয়াররা ঠিক করবেন বলে জানান তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাজেট অধিবেশন শুরু হচ্ছে আজ
পরবর্তী নিবন্ধইসলামের জন্য আ. লীগ সরকার যা করেছে অতীতের কেউ করেনি