চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং কুমিল্লা সেমিফাইনালে

চিটাগাং রিজিওনাল টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট

ক্রীড়া প্রতিবেদক | বুধবার , ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ at ৬:৫২ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামে তো বটেই দেশে প্রথমবারের মত আয়োজিত রিজিওনাল ক্রিকেট টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে এশিয়ান চট্টগ্রাম, কন্টিনেন্টাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং ফর্টিস কুমিল্লা। টুর্নামেন্টের ‘বি’ গ্রুপ থেকে টানা চারটি করে জয় তুলে নিয়ে শেষ চার নিশ্চিত করে কন্টিনেন্টাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং ফর্টিস কুমিল্লা। আর ‘এ’ গ্রুপ থেকে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে স্বাগতিক এশিয়ান চট্টগ্রাম। আজ ফেনী এবং চাঁদপুরের মধ্যকার ম্যাচ শেষে ‘এ’ গ্রুপের আরেক ফাইনালিস্ট নির্ধারিত হবে। গতকাল ডু অর ডাই এক ম্যাচে চট্টগ্রাম ডিএলএস মেথডে ১৪ রানে চাঁদপুরকে হারিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে। অপরদিকে ‘বি’ গ্রুপের কুমিল্লা এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরাসরি চারটি করে ম্যাচে জিতে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে। গতকাল কুমিল্লা ৯ উইকেটে হারিয়েছে লক্ষীপুরকে। অপর দুই ম্যাচে কন্টিনেন্টাল খাগড়াছড়ি ৫০ রানে ফর্টিস রাঙ্গামাটিকে পরাজিত করে। আরেক ম্যাচে বান্দরবানের বিপক্ষে ২১ রানের সান্তনার জয় পেয়েছে নোয়াখালী। চট্টগ্রাম জেলা স্টেডিয়ামে গতকাল চট্টগ্রাম এবং চাঁদপুরের মধ্যকার ম্যাচটি ছিল অনেকটা অলিখিত কোয়ার্টার ফাইনাল। যে দল জিতবে তারাই যাবে সেমিফাইনালে। সেক্ষেত্রে অবশ্য খানিকটা এগিয়ে ছিল চাঁদপুর। কারণ তারা হারলেও তাদের সম্ভাবনা টিকে থাকতো। কারণ তাদের আরেকটা ম্যাচ বাকি। কিন্তু চট্টগ্রাম হারলে বিদায়। এমন কঠিন সমীকরনের ম্যাচে চট্টগ্রামকে জেতালেন দলের পেসার ইফরান হোসেন। তার দুর্দান্ত দুই ওভারে চট্টগ্রাম পেয়েছে অসাধারণ জয়। যা তাদের নিয়ে গেছে সেমিফাইনালে। বিকেলে অনুষ্ঠিত ম্যাচে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমেছিল চট্টগ্রাম। কিন্তু ইনিংসের তৃতীয় ওভারে এক বলের ব্যবধানে দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে চট্টগ্রাম। তৃতীয় উইকেটে ইরফান শুক্কুর এবং সাদিকুর মিলে যোগ করেন ২২ রান। ২২ বলে ২৩ রান করে সাদিক ফিরলে চাপ আরো বাড়ে চট্টগ্রামের। এরপর দ্রুত রিপন এবং রুবেল ফিরে এলে ৬০ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বসে চট্টগ্রাম। এরপর একপ্রান্ত আগলে রাখা অধিনায়ক ইরফানের সাথে যোগ দেন রতন দাশ। দুজন যখন এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন তখন শুরু হয় বৃষ্টি। চট্টগ্রামের রান যখন ১৫ ওভারে ৫ উইকেটে ৯৯ তখন বৃষ্টির কারণে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। ইরফান অপরাজিত ছিলেন ৩৪ বলে ৪৫ রান করে। ১২ বলে ১৫ রান করে অপরাজিত ছিলেন রতন দাশ। এরপর পুনরায় যখন খেলা শুরু হয় তখন চাঁদপুরের জন্য লক্ষ্য নির্ধারিত হয় ১৩ ওভারে ৯৯। সে লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই দুই উইকেট তুলে নেন রিফাত। তৃতীয় উইকেটে ৩৩ রান যোগ করেন শাকিল এবং রাফি। ১৮ রান করা শাকিলকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙ্গেন শহীদুল। পরের ওভারে ২৫ রান করা রাফিকে ফেরান রতন। ১১ তম ওভারে পেসার ইফরানকে আক্রমণে এনে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন চট্টগ্রামের অধিনায়ক। নিজের প্রথশ ওভারে মেহেদী হাসান রানাকে ফেরান ইফরান। শেষ ওভারে যখন ১৮ রান দরকার তখন দুই উইকেট তুলে নিয়ে মাত্র ৪টি রান দিয়েছেন ইফরান। আর তাতেই অসাধারণ জয় নিয়ে সেমিফাইনালে পৌঁছে যায় চট্টগ্রাম। শেষ দুই ওভারে দুর্দান্ত বল করে দলকে জেতানো ইফরান হোসেন ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হন। তার হাতে পুরস্কার তুলে দেন এশিয়ান গ্রুপের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর বেলায়েত খন্দকার এবং এবি ব্যাংকের চকবাজার শাখার ম্যানেজার আফতাব উদ্দিন।

একই মাঠে দিনের প্রথম ম্যাচে জয় পেয়েছে কন্টিনেন্টাল খাগড়াছড়ি। তারা ৫০ রানে হারিয়েছে রাঙ্গামাটিকে। টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নাঈমের ৫৭ বলে ৭৬ রানের উপর ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৫৫ রান সংগ্রহ করে খাগড়াছড়ি। দলের পক্ষে আসাদুর ২১, শোভন ৩৩ রান করেন। জবাবে ব্যাট করতে নামা রাঙ্গামাটি ১০৫ রান করতে সক্ষম হয়। দলের পক্ষে ইনিংস ৩৩, কামরুল ৩০ এবং মামুন করেন ১৬ রান। খাগড়ছাড়ির সাফায়েত নেন ৩ উইকেট। ম্যাচ সেরা হয়েছেন বিজয়ী দলের আবু নাঈম। তার হাতে পুরস্কার তুলে দেন কন্টিনেন্টাল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহসান ইকবাল চৌধুরী আবীর।

সাগরিকাস্থ বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দিনের প্রথম ম্যাচে কুমিল্লা ৯ উইকেটে হারিয়েছে লক্ষীপুর জেলাকে। টসে হেরে ব্যাট করতে নামা লক্ষীপুর ১৯ ওভারে মাত্র ৭৬ রান করে অল আউট হয়। দলের পক্ষে নুর এ আলম ১৩, মনজুরুল ১৫, বাকি করেন ১০ রান। কুমিল্লার পক্ষে ১৪ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন আশরাফুল হাসান। ২টি উইকেট নিয়েছেন ইয়াসির আরাফাত। জবাবে ব্যাট করতে নামা কুমিল্লা ১১ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে জয় নিশ্চিত করে। দলের পক্ষে আনোয়ার ৩৭, ইরফান ২৬ এবং রুবেল করেন ১২ রান। বিজয়ী দলের আশরাফুল হাসান ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হন। তার হাতে পুরস্কার তুলে দেন ইস্পাহানী গ্রুপের জেনারেল ম্যানেজার মাঈনুল আহসান এবং ফর্টিস গ্রুপের প্রতিনিধি ফখরুল আলম উল্লাস। একই মাঠে অনুষ্ঠিত দিনের অপর ম্যাচে নোয়াখালী জেলা ডিএলএস মেথডে ২১ রানে বান্দরবান জেলাকে পরাজিত করে। প্রথমে ব্যাট করতে নামা নোয়াখালী ১৪৭ রান সংগ্রহ করে। দলের পক্ষে মঈনুল ৩৮, জিহাদ ২০, আলভি ৩৭, রায়হান করেন ২৫ রান। বৃষ্টির কারণে বান্দরবানের সামনে লক্ষ্য দাড়ায় ১৭ ওভারে ১৩১ রান। জবাবে ব্যাট করতে নামা বান্দরবান ১০৯ রান করতে সক্ষম হয়। দলের পক্ষে তাজুল ৩৪, জসিম ১৮, ওবায়দুল করেন ১৮ রান। নোয়াখালীর পক্ষে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন রাশেদ, মোস্তাকিম এবং মুশফিকুর। বিজয়ী দলের মঈনুল ইসলাম ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হন। তার হাতে পুরস্কার তুলে দেন এবি ব্যাংকের সিনিয়র এসিসট্যান্ট ভাইস প্রোিসডেন্ট এলান মুৎসুদ্দি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিসিবি নির্বাচনে অংশ নেবেন বুলবুল
পরবর্তী নিবন্ধমোশাররফ করিমের ‘মায়ার বাঁধন’