চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান অবস্থা ও প্রাসঙ্গিক আলোচনা

ড. মো: আবুল কাসেম | রবিবার , ৮ অক্টোবর, ২০২৩ at ৫:৪৯ পূর্বাহ্ণ

১৯৬৬ সালে ৪টি বিভাগ নিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু। বর্তমানে ৯টি অনুষদ আর ৬টি ইনস্টিটিউটের অধীনে ২৭,৫৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষক ও কর্মকর্তাকর্মচারী আছেন যথাক্রমে ৯০৬ এবং ২০৮৮ জন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু তথ্যউপাত্ত নিয়ে নিম্নের এই আলোচনা।

. শিক্ষার্থীদের আবাসন ব্যবস্থা: শিক্ষার্থীদের আবাসন সুবিধার জন্য রয়েছে ১৫টি হল। ছাত্রদের জন্য ৯টি, ছাত্রীদের ৬টি। ছেলেদের হলে মোট আবাসিক ছাত্রের সংখ্যা ২৭৪২ এবং মেয়েদের হলে আবাসিক ছাত্রী সংখ্যা ২৬২১ তাদের সাথে আরও প্রায় ১ হাজার ছাত্রী ডাবলিং করে থাকে। উল্লেখ্য যে, আমার জানা মতে খালেদা জিয়া হলের একটা ৮০০ বর্গ ফুটের কক্ষে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ জন শিক্ষার্থী শেয়ার করে থাকে, যাকে গণরুম বলা হয়, সেখানে খাট আর মশারি ছাড়া কিছুই দেখা যায় না, হিসাবে জনপ্রতি জায়গার পরিমাণ হবে ১০ থেকে ১২ বর্গফুট, এই করুন চিত্র বাংলাদেশের কোথাও আছে বলে আমার জানা নেই। আনুমানিকভাবে চবির আবাসিক হলগুলোতে প্রায় ২৪% শিক্ষার্থী রয়েছে, বাকিরা ক্যাম্পাসের পার্শ্ববর্তী এলাকার মেস, বাড়ি ভাড়া ও চট্টগ্রাম শহরে অবস্থান করেন।

. আবাসিক হলগুলোতে খাবারের মান: মাংসের একটি টুকরো ২৩ গ্রাম, মাছের একটি টুকরো ২৬ গ্রাম, হলুদের গুঁড়া মিশানো প্রতি ৭০০ জনের জন্য ১ কেজি ডাল, ২৫০ গ্রাম পেঁয়াজ, আর কিছু সবজি। পুষ্টিবিদদের মতে এই মানের খাবার একটানা ১৫ দিন খেলে একজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়বে। সাধারণত ৬০৮০ কেজি ওজনের একজন মানুষকে প্রতিদিন গড়ে ৮০ থেকে ১০০ গ্রাম আমিষ, ৪০০ গ্রাম সবজি ও সঙ্গে কিছু ফলমূল খেতে হয়।

: শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের যাতায়াত ব্যবস্থা: শহর থেকে চবি ক্যাম্পাসের দূরত্ব প্রায় ২২ কিলোমিটার। আমাদের প্রায় ৬০ শতাংশ (১৬,৫৩০ জন) শিক্ষার্থীর বিশ্ববিদ্যালয় যাতায়াতের একমাত্র বাহন ২টি শাটল ও ১টি ডেমো ট্রেন, যার লাইন ২টি, বগীর সংখ্যা ১০, আসাযাওয়া সাধারণত: ৭ বার। দৈনিক প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার ছাত্রছাত্রী সকাল টা ৭:৩০মি. থেকে ১০:৩০ মি. ৪টা ট্রিপে ক্যাম্পাসে আসে। অন্যদিকে দুপুর ১:৩০মি থেকে ৫:৩০ মিনিটে মোট ৪টি ট্রিপে আবার শহরে ফিরে যায়। একটি বগিতে সর্বোচ্চ আসন সংখ্যা ৭২টি, কিন্ত আমাদের ২৫০ থেকে ৩০০ জন ছাত্রছাত্রী ১টি বগি ব্যবহার করে থাকে, যার মধ্যে কোনো আধুনিক সুযোগ সুবিধা নেই। ভিতরে জায়গা না থাকায় ছেলেরা বাধ্য হয়ে ট্রেনের ছাদে ওঠে এবং বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনার শিকার হয়। অন্যদিকে ছাত্রছাত্রীরা শহরে টিউশনি শেষে রাতের ট্রেনে বিশেষ করে ষোলশহর থেকে ক্যাম্পাসে ফেরার পথে বাহির থেকে বকাটে ছেলেরা প্রায়ই ট্রেনকে লক্ষ্য করে ঢিল মারে, তাতে অনেক ছেলেমেয়ে আঘাত প্রাপ্ত হয়। তাছাড়া ক্লাস চলাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীদেরকে ট্রেন থেকে নেমে চবির জিরো পয়েন্ট থেকে জীববিজ্ঞান বিজ্ঞান অনুষদ পর্যন্ত ১.৭ কিলোমিটার পথ রোদ ও মেঘবৃষ্টিতে হেঁটে যেতে হয়। আমাদের শিক্ষার্থী অনুপাতে ট্রেনের বগী ও ট্রিপ সংখ্যা যথেষ্ট নয়। তথ্য নিয়ে জানা গেল, রেলের বর্তমান অবকাঠামোতে এগুলো বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই।

অন্যদিকে শিক্ষকদের যাতায়াতের জন্য রয়েছে প্রায় ২৪ টি বাস তার মধ্যে ১২ (২ টি বড় ও ১০টি ছোট) টি এসি বাস, যাদের মোট আসন সংখ্যা প্রায় ৪০০। হিসাব মতে প্রতিদিন প্রায় ৪৫% শিক্ষক এসি বাস ব্যবহার করার সুযোগ পান, বাকিরা নন এসিতে যাতায়াত করেন। এসি বাসের ইতিহাস কিন্তু এই চবিতে খুব দীর্ঘদিনের নয়। মাত্র ৬ বছর আগে ভিসি ইফতেখার স্যারের সময় ইউসিবিএল একটি বড় এসিবাস উপহারের মাধ্যমে এর যাত্রা শুরু। আমরা শিক্ষকরা কিন্তু এসিনন এসি বুঝি না, যখন যা সামনে পাই তাতেই উঠে বসি। নন এসি বাসে চড়ি বলে আমাদের প্রত্যাশা কিন্তু কম নয়, আমরা শিক্ষকরা সবসময়ই চাই আমাদের শিক্ষার্থীরা যেন আমাদের চেয়ে আরো ভালো অবস্থানে গিয়ে পরিবার, সমাজ ও দেশ গড়ার কাজে সক্রিয় ভূমিকা রাখে।

. উপাচার্য, উপউপাচার্য, হল প্রভোস্টে ও আবাসিক শিক্ষকদের বাসভবন: ঢাকা, রাজশাহী ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য, উপউপাচার্য, হল প্রভোস্টে ও আবাসিক শিক্ষকদের বাসভবন রয়েছে। প্রত্যেকটা আবাসিক হলে প্রভোস্টদের পৃথক বাংলো ও আবাসিক শিক্ষকদের জন্য হল সংলগ্ন বা খুব কাছাকাছি বাসস্থান রয়েছে কিন্তু চবিতে এ ধরনের কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই বাধ্য হয়ে অধিকাংশ হল প্রভোস্ট ও আবাসিক শিক্ষকগণ শহরে অবস্থান করছেন। যদিও শর্তানুযায়ী ও নৈতিকভাবে উপাচার্য, উপউপাচার্য, হল প্রভোস্টে ও আবাসিক শিক্ষকদের ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে থাকতে বাধ্য যাতে করে ক্যাম্পাসে বা আবাসিক হলে অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো ঘটনা ঘটলে দ্রুত উপস্থিত হয়ে সমস্যার সমাধান দিতে পারেন।

. সিনিয়র শিক্ষকশূন্য চবির ক্যাম্পাস : চবির ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজের বর্তমান অবকাঠামো, শিক্ষার গুণগতমান ও বিগত বছরের ফলাফল অভিভাবক মহলকে ভাবিয়ে তুলেছে। যার ফলশ্রুতিতে গত কয়েক বছরে কয়েকশত সিনিয়র শিক্ষক তাদের ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে ক্যাম্পাস ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। প্রায় ৪৫ জন শিক্ষক ক্যান্টপাবলিক আবাসিক এলাকায় বসবাস করছেন, যা চবির দ্বিতীয় ক্যাম্পাস হিসেবে আখ্যায়িত। বর্তমানে যারা ক্যাম্পাসে বসবাস করছেন তারাও তাদের সন্তানদেরকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন এবং শহরমুখি হওয়ার চিন্তাভাবনা করছেন। তারই বিরূপ প্রভাব পড়তে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা, গবেষণা ও ক্যাম্পাসের সার্বিক পরিবেশের উপর। গত কয়েক বছর আগেও ৩০ থেকে ৪০ জন সিনিয়র শিক্ষক সন্ধ্যায় ক্যাম্পাস ক্লাবে সচরাচর দেখা যেত। ক্যাম্পাসের যেকোনো সমস্যায় বা দুর্ঘটনায় তারা এগিয়ে আসতো। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়ে এবং তাদের যৌক্তিক দাবির প্রতি সমর্থন এবং বাস্তবায়নের চেষ্টা করতেন। সিনিয়র শিক্ষকরা ক্যাম্পাসে থাকলে হয়তো বা ৭ই সেপ্টেম্বরের ঘটনা মেসাকার (উপাচার্যের বাসভবন সহ ৫০টি বাস ভাঙচুর) দেখা দিত না। ঐ রাতে রক্তাক্ত শিক্ষার্থীদের বীভৎস ছবি দেখে এবং মারা যাওয়ার গুজবে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের ক্ষুব্ধ হওয়াটা অস্বাভাবিক ছিল না, কিন্তু আমরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মত (২০২২ এর ফেব্রুয়ারিতে হিমেল হত্যাকাণ্ড ও পরবর্তী পদক্ষেপ) শিক্ষার্থীদের পাশে যথাসময়ে দাঁড়াতে না পারায় বিশ্ববিদ্যালয় এত বড় ক্ষতির সম্মুখীন হলো। আমরা শিক্ষক হিসেবে শিক্ষার্থীদেরকে বুঝাতে ব্যর্থ হয়েছি যে এ বিশ্ববিদ্যালয় তাদের, এর সমস্ত সম্পদ তাদের, এখানে উপাচার্যের নিজস্ব বলতে কিছু নেই। উপাচার্যের বাসভবন বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা অলংকার, যেখানে বিভিন্ন সময়ে দেশবিদেশের অতিথিদের সাথে মত বিনিময় ও আপ্যায়নেরও ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে।

ঐ ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে শিক্ষকরা (আমাদের একই আদর্শের দুইটি দল) দুইটি পৃথক ভাবে বিবৃত দিয়ে এ ধরনের ধ্বংসাত্মক আচরণের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এরই সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন দুইটি মামলা ও তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। সবকিছুই তার নিজস্ব গতিতে চলবে কিন্তু এই ক্ষতির দাগ রয়েই যাবে। অন্যদিকে কয়েকজন শিক্ষক আবেগান্বিত হয়ে গণমাধ্যমে উল্লেখ করেছেন আমরা কি ‘এ ধরনের শিক্ষার্থী বা বিশ্ববিদ্যালয় চেয়েছিলাম?’ না, একেবারেই না।

অপরদিকে শিক্ষার্থীরাও বলতে পারে আমরাও তো এ ধরনের বিশ্ববিদ্যালয় চাই না, যে বিশ্ববিদ্যালয় আমাদেরকে ‘আবাসিক হলে থাকার সুব্যবস্থা, সার্বিক নিরাপত্তা, স্বাস্থ্যসম্মত খাবার, ঝুঁকিমুক্ত যাতায়াত ব্যবস্থা ও সেশনজটমুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থার নিশ্চয়তা দিতে পারে না’। আসলে উভয়ের যুক্তিই সঠিক। এই পবিত্র অঙ্গনে একে অপরকে প্রতিপক্ষ ভাবার সুযোগ নেই, বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে শিক্ষক শিক্ষার্থীর মিলন মেলা, জ্ঞান আহরণের উত্তম জায়গা। আমরা আশাবাদী, আমাদের শিক্ষার্থীরা তাদের মেধা, প্রজ্ঞা, বুদ্ধি, ধৈর্য ও মানবীয় গুণাবলী দিয়ে প্রতিবাদের সঠিক ভাষা ও কৌশল খুঁজে পাবে, এবং বিশ্ববিদ্যালয়টাকে নিজের মতো করে ভালোবাসবে। নিচে কিছু সুপারিশ বিবেচনার জন্য তুলে ধরা হলো:

. শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য ২টি শাটল ও ডেমো ট্রেনের পাশাপাশি বাস সার্ভিসের ব্যবস্থা করা। ২. ট্রেনের লাইনটিকে জিরো পয়েন্ট থেকে শহীদ মিনার পর্যন্ত বর্ধিত করা এবং বগির সংখ্যা বাড়ানোর জন্য বটতলী ট্রেন স্টেশনের সংস্কার করা। ৩. বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের পাশাপাশি সারিবদ্ধভাবে আরো কয়েকটি ছাত্রী আবাসিক হল নির্মাণের ব্যবস্থা করা। ৪. আবাসিক হলগুলোতে খাবারের মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে ভর্তুকির ব্যবস্থা করা। ৫. সেশনজট নিরসনে অনুষদ ভিত্তিক একাডেমিক ক্যালেন্ডার তৈরি ও বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করা। ৬। গবেষণার সুবিধার্থে ও গবেষণায় ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি নষ্টের হাত থেকে রক্ষার্থে অন্তত দৈনিক ৫ ঘণ্টা নিরবিচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা করা। ৭. অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মত ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর জার্নালে গবেষণাপ্রবন্ধ প্রকাশনার জন্য গবেষককে প্রতি প্রবন্ধের জন্য ন্যূনতম ২৫ হাজার টাকা করে উৎসাহ ভাতা প্রদান করা। ৮. ক্যাম্পাসে বসবাসের অনুপোযোগী পুরাতন ডুপ্লেক্সগুলো ভেঙে শিক্ষকদের জন্য একটি বহুতল বিশিষ্ট আবাসিক ভবন নির্মাণ করা। ৯. দুপুরের পরে ক্যাম্পাস থেকে শিক্ষক, কর্মকর্তা কর্মচারীদের নিয়ে যে বাস সমূহ (১৭ টি) শহরে ঢুকে তাদেরকে পুনরায় ক্যাম্পাসে ফেরত না নিয়ে শহরে রাখার ব্যবস্থা করা। তাতে জ্বালানি খরচ বাবদ দৈনিক প্রায় ৭০ হাজার টাকার স্বাশ্রয় হবে। উক্ত টাকা শিক্ষার্থীদের আবাসিক হলে খাবারের মান বৃদ্ধিতে ব্যবহার করা যেতে পারে। ১০. পৃথিবীর অন্যান্য দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতি বছর আবাসিক হলগুলো সংস্কারের জন্য কোনো একটা বড় ছুটিতে বছরে ১ মাস হলগুলো খালি ও শিক্ষার্থীদের জন্য বন্ধ রাখা।

সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র শিক্ষক, সাংসদ, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, শিল্পপতি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই এসোসিয়েশনকে অন্তর্ভুক্ত করে একটা মুক্ত আলোচনার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। তারা শিক্ষার্থীদের স্বার্থে উন্নয়নমূলক কাজগুলোতে এগিয়ে আসবেন, যেমন উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন একে খান চবির আইন অনুষদ ও সুফি মিজানুর রহমান চাকসু মসজিদ নির্মাণে। উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশের অধিকাংশ শিল্পপতি ও ধনী ব্যক্তিরা চট্টগ্রামের অধিবাসী। আশা করি, দলমত নির্বিশেষ এই প্রতিষ্ঠানটির উন্নতির লক্ষ্যে সবাই এগিয়ে আসবেন।

লেখক: প্রফেসর, মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগ,

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহযরত সৈয়দ শাহজাহান শাহ (রহ.)
পরবর্তী নিবন্ধদীপক কুমার চৌধুরী