চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের ইজারা না দেয়ার আহ্বান

বাম জোটের গণসমাবেশ

| রবিবার , ৯ নভেম্বর, ২০২৫ at ৫:৩৬ পূর্বাহ্ণ

লাভজনক চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার চক্রান্ত বন্ধ না হলে নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনা ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি দিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। গতকাল শনিবার বিকালে চট্টগ্রামের এক গণসমাবেশ থেকে দুই সপ্তাহজুড়ে সারাদেশে বিক্ষোভ, গণসংযোগ, পদযাত্রার কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। খবর বিডিনিউজের।

নগরীর পুরাতন রেল স্টেশন চত্বরে গণসমাবেশ থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক বজলুর রশিদ ফিরোজ। ‘জনমত উপেক্ষা করে লাভজনক চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের ইজারা দেওয়া চলবে না’ এই স্লোগান নিয়ে এই গণসমাবেশের আয়োজন করে বাম জোট ও ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা। সমাবেশে বাম জোটের সমন্বয়ক বজলুর রশিদ ফিরোজ বলেন, লাভজনক চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার চক্রান্ত বন্ধ করার দাবিতে ৯ নভেম্বর থেকে ২৩ নভেম্বর সারাদেশে বিক্ষোভ, গণসংযোগ, পদযাত্রার কর্মসূচি এবং এর মধ্যে দাবি না মানলে নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে যমুনা ঘেরাও, এরপর প্রয়োজনে হরতাল কর্মসূচি দেওয়া হবে।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টিসিপিবির সাবেক শাহ আলম বলেন, বন্দরের পরিচালনা বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়ার বিরুদ্ধে ব্যাপক জনমত সত্ত্বেও অন্তর্বর্তী সরকার সাম্রাজ্যবাদের স্বার্থে একগুয়ের মতো আচরণ করছে। দেশের শ্রমজীবী ও সাধারণ মানুষ প্রবল অর্থনৈতিক সংকটসহ হাজারো সমস্যায় পর্যুদস্ত, অথচ সরকারের সেদিকে মনোযোগ নেই। তারা বন্দর ও করিডোর নিয়ে সাম্রাজ্যবাদীদের সাথে চক্রান্তে ব্যস্ত। চট্টগ্রাম সূর্যসেন, প্রীতিলতার মাটি। চট্টগ্রামের মানুষ বন্দর নিয়ে সাম্রাজ্যবাদীদের চক্রান্ত সফল করতে দেবে না।

সভাপতির বক্তব্যে বাম গণতান্ত্রিক জোট ও বাসদ (মার্কসবাদী) চট্টগ্রাম জেলা সমন্বয়ক শফি উদ্দিন কবির আবিদ বলেন, বাংলাদেশের আমদানি রপ্তানির ৯২ ভাগ চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে হয়। অর্থাৎ দেশের অর্থনীতি প্রধানত চট্টগ্রাম বন্দরের উপর নিভর্রশীল। বন্দরের মতো কৌশলগত সম্পদ নিয়ে যেকোন সিদ্ধান্ত শুধু অর্থনৈতিক লাভ দিয়ে বিচার করা যায় না। বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলন কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর চ্যানেলের গভীরতার যে প্রাকৃতিক সীমাবদ্ধতা তা কোনো বিদেশি অপারেটরের পক্ষে দূর করা সম্ভব নয়। এই বন্দরের সক্ষমতা একটা সীমার বেশি বাড়ানো সম্ভব নয়। ফলে বিদেশের সাথে প্রেক্ষিতবিহীন তুলনা দিয়ে বিদেশি কোম্পানির হাতে নিউমুরিং টার্মিনাল তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও জাতীয় স্বার্থবিরোধী। সিপিবির চট্টগ্রাম জেলা শাখার যুগ্ম সম্পাদক নুরুচ্ছফা ভূঁইয়ার পরিচালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন গণমুক্তি ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক নাসিরউদ্দিন নাসু, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশ সোশ্যালিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, বাসদ (মাহবুব) এর কেন্দ্রীয় সদস্য আয়ুব রানা। গণসমাবেশে শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদস্কপের নেতাকর্মীরা বিশাল মিছিল নিয়ে যোগ দেন ও সংহতি জানান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রাইম ব্যাংকের উদ্যোগে এসএমই নারী উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ
পরবর্তী নিবন্ধবিজিএমইএ বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিনার