চট্টগ্রাম গণহত্যা দিবস আজ

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ২৪ জানুয়ারি, ২০২১ at ৭:৩১ পূর্বাহ্ণ

নব্বইয়ে স্বৈরাচার পতনের মাত্র দুই বছর আগে বীর চট্টলার মাটি রক্তে রাঙিয়েছিল সামরিক জান্তার পেটোয়া বহিনীতে পরিণত পুলিশ সদস্যরা। সেদিনের বীর শহীদদের অপরাধ ছিল স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠা গণতান্ত্রী কামী জনতার সমাবেশে তারা অংশ নিয়েছিল। সেই স্বৈরাচারী এরশাদ ভেবেছিল জনতার রক্তে থমকে যাবে সকল প্রতিরোধ, ক্ষমতার সিংহাসন হবে চিরস্থায়ী। কিন্তু মাত্র দুই বছরের মাথায় তাকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করেছিল দামাল জনতা। শেষ পর্যন্ত বিজয় হয়েছে গণতন্ত্রের। আজ ২৪ জানুয়ারি ঐতিহাসিক ‘চট্টগ্রাম গণহত্যা দিবস’।
চট্টগ্রামের কোর্টহিল ও লালদীঘির ময়দানে নারকীয় হত্যাকাণ্ডের লোমহর্ষক ঘটনা সম্বলিত ২৪ জানুয়ারি তাই যতবার আসে ততবার জাতির বিবেকবান হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়। সেদিনের ভয়াবহতা ও মানুষের আহাজারি কখনো স্মৃতি থেকে মোছার নয়। যারা সেদিন বুকের তাজা রক্ত ঢেলে আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে রক্ষা করেছিল দীর্ঘ ৩৩ বছর পর তাদের বিচারের রায় ঘোষিত হয়েছে। ৫ অভিযুক্তের মৃত্যুদণ্ডের সাজা হয়েছে। আদালত রায়ে এটাকে ‘পরিকল্পিত গণহত্যা’ বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন।
কী ঘটেছিল সেই দিন? ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ১৫ দলীয় জোট জনসভা আহ্বান করে। লালদীঘি ময়দানে জনসভা নিয়ে লুকোচুরি খেলছিল প্রশাসন। প্রথমে অনুমতি দিয়ে আবার তা তুলে নিয়ে বল প্রয়োগে সমাবেশ বন্ধের তোড়জোর শুরু হয়। কিন্তু শেখ হাসিনা যে কোন মূল্যে সমাবেশ আয়োজনের নির্দেশ দেন চট্টগ্রামের নেতৃবৃন্দকে। শেখ হাসিনা ১৫ দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে বিমানে চট্টগ্রাম আসেন। বিমান বন্দর থেকে খোলা ট্রাকে চড়ে বেলা ১১ টা নাগাদ বিপুল কর্মী সমর্থক নিয়ে লালদিঘী ময়দানের উদ্দেশে যাত্রা করেন নেত্রী। নগরজুড়ে ছিল টান টান উত্তেজনা। সিএমপি কমিশনার মির্জা রকিবুল হুদার নির্দেশে শেখ হাসিনার ট্রাক কোতোয়ালী মোড়ে পৌঁছার আগে শুরু হয় বেপরোয়া লাঠিচার্জ, গুলিবর্ষণ। নেত্রীর ট্রাক পুরনো বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে আসার সাথে সাথেই তাকে টার্গেট করে ঝাঁকে ঝাঁকে গুলি বর্ষণ শুরু হয়। ট্রাকে অবস্থানরত নেতা কর্মীরা মানব ঢাল তৈরি করে নেত্রীকে রক্ষা করেন।
ততক্ষণে নগরীর বিশাল এলাকা জুড়ে নেতা কর্মীদের উপর টানা গুলি চালাতে থাকে রকিবুলের বাহিনী। অসংখ্য নেতা-কর্মী লালদীঘি ঘিরে নিউমার্কেট, আমতল, রাইফেল ক্লাব, শহীদ মিনার, আন্দরকিল্লা, সিরাজউদ্দৌলা রোড, কোতোয়ালী মোড় জুড়ে শহীদ হন। আহতের সংখ্যা অগণিত। প্রাথমিক হিসেবে নিহতের সংখ্যা ২৪, আহত ২০০। অসমর্থিত খবরে এ সংখ্যা অনেক বেশি। গুম করা হয় বহু লাশ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঠিকাদারি নিয়ে যারা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে না তাদের ক্ষমা নেই : সুজন
পরবর্তী নিবন্ধকরোনার টিকা বুধবার থেকে