চট্টগ্রামে কাস্টমসে ঘরে বসে নিলামে অংশ নেয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে তিন বছর আগে শুরু হয় ই–অকশন (অনলাইন নিলাম) কার্যক্রম। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) উর্ধ্বতন কর্মকর্তা নিলামের উদ্বোধনও করেন। কিন্তু উদ্বোধনের তিন বছর পেরিয়ে গেলেও অনলাইনে নিলাম হয়েছে মাত্র পাঁচটি। এরমধ্যে সর্বশেষটি হয়েছে প্রায় এক বছর আগে। বিডাররা (নিলামে অংশগ্রহণকারী) বলছেন, ই অকশনে সব কিছু অনলাইনে হওয়ার কথা থাকলেও মূলত সব প্রক্রিয়া ম্যানুয়াল পদ্ধতির মতো সম্পন্ন হয়েছে। অলাইনে কেবল দরপত্র ড্রপিংটা (জমা দেয়া) অনলাইনে হয়েছে। পে অর্ডার জমা দেয়া থেকে শুরু করে অনুমোদন পর্যন্ত সবকিছু ম্যানুয়াল পদ্ধতিতেই হয়েছে।
কাস্টমসের নিলাম শাখা সূত্রে জানা গেছে, গত ২০২০ সালের ২৭ ও ২৮ অক্টোবর ১৬ লট বিভিন্ন ধরনের পণ্য নিলামে তোলার মাধ্যমে ই–অকশনের যাত্রা শুরু হয়। এরপর ২০২১ সালের ১৯ ও ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় দফায় ২০ লট পেঁয়াজ নিলামে তোলা হয়। এছাড়া একই বছরের ৩ ও ৪ নভেম্বর কার্নেট ডি প্যাসেজ বা শুল্কমুক্ত সুবিধায় আসা বিলাসবহুল ১১২ লট গাড়ি তোলা হয়। দ্বিতীয় দফায় ১২ ও ১৩ জুন কার্নেট ডি প্যাসেজ বা শুল্কমুক্ত সুবিধায় আসা ১০৮টি গাড়ি পুনরায় নিলামে তুলে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এছাড়া সর্বশেষ গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর ৭৮ লট কার্নেট গাড়ি নিলামে তোলা হয়।
ফজলুল আমিন নামের এক বিডার জানান, ই–অকশন নিয়ে অনেক বিডারদের মধ্যে বিভ্রান্তি রয়েছে। এই ভয়ে অনেকে ই–অকশনে অংশ নিতে চান না। এছাড়া ই–অকশনে দরপত্র জমা দেয়ার পরেও দেখা গেছে, ঘুরে ফিরে আবারও ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে বাকি কাজ সম্পন্ন করতে হয়েছে। তাই আমরা ই–অকশনের কোনো ধরণের সুফল পাইনি। এখন তো গত প্রায় এক বছর ধরে অনলাইনে নিলামই হয়নি।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমস নিলাম ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইয়াকুব চৌধুরী দৈনিক আজাদীকে বলেন, ম্যানুয়াল পদ্ধতির নিলামে আমরা দরপত্রের সাথে পে–অর্ডারও জমা দিয়ে থাকি। কিন্তু ই–অকশনে আমরা শুধুমাত্র দরপত্র জমা দিতাম অনলাইনে, এরপর বাকি সব প্রক্রিয়া ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে করতে হতো। এতে করে ই অকশনের কোনো সুফল আমরা পাইনি।
এ বিষয়ে জানার জন্য চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপ–কমিশনার (নিলাম শাখা) নাহিদুন্নবীকে একাধিকবার কল দেয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
উল্লেখ্য, গত ২০২০ সালের ২৭ অক্টোবর চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য মো. মাসুদ সাদিক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ই–অকশন কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাসুদ সাদিক বলেন, কাস্টম হাউসের কার্যক্রম ডিজিটাইলেজশন করার প্রতি আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। এর অংশ হিসেবে আমরা অনলাইন নিলাম শুরু করছি। অনলাইন নিলামে একজন বিডার ঘরে বসে নিলামে অংশ নিতে পারবেন। এটি একটি নতুন দিগন্ত।