চট্টগ্রাম কাস্টমসের ল্যাবে পণ্যের নমুনা জট

রিপোর্ট পেতে বিলম্ব, পণ্য খালাস ব্যাহত, গুণতে হচ্ছে পোর্ট ডেমারেজ

জাহেদুল কবির | সোমবার , ২৩ অক্টোবর, ২০২৩ at ৯:০৯ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম কাস্টমসের রাসায়নিক পরীক্ষাগারে (ল্যাবে) দেখা দিয়েছে আমদানি পণ্যের নমুনা জট। রাসায়নিক পরীক্ষকের অভাবে সময়মতো নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা। যে পরীক্ষা একদিনে হওয়ার কথা সেটিতে সময় লাগছে এক সপ্তাহের মতো। নমুনা রিপোর্ট পেতে বিলম্ব হওয়ায় নির্দিষ্ট সময়ে পণ্য খালাস করতে পারছেন না আমদানিকারকরা। এতে তাদের পোর্ট ডেমারেজ গুণতে হচ্ছে। ল্যাব সংশ্লিষ্টরা জানান, গতকাল পর্যন্ত দুই শতাধিক পণ্য ল্যাবে পরীক্ষার অপেক্ষায় ছিল।

আমদানি রপ্তানি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চট্টগ্রাম কাস্টমসের ল্যাবে দীর্ঘ সময় ধরে পণ্যের নমুনা জটের সমস্যা থাকলেও অজানা কারণে রাসায়নিক পরীক্ষক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে না। বর্তমানে একজন সহকারী কেমিস্ট দিয়ে চলছে কার্যক্রম। অথচ এই চট্টগ্রাম কাস্টমসে গত কয়েক বছর ধরে ৫০ হাজার কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আহরণ হচ্ছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের ল্যাবটি স্বয়ংসম্পূর্ণ করার দাবি জানিয়ে আসছিলাম। কিন্তু কে শোনে, কার কথা। এখন দিন দিন আমদানিরপ্তানি বাড়ছে। পর্যাপ্ত রাসায়নিক পরীক্ষকের অভাবে যে পরীক্ষা একদিনে শেষ হওয়ার কথা সেটি শেষ হতে এক সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এতে বিলম্বিত হচ্ছে পণ্য খালাস কার্যক্রম। কাস্টমসের কর্মকর্তারা প্রায় প্রতিটি পণ্যই কিন্তু রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য পাঠান। অথচ পরীক্ষক সংকটের বিষয়টি নিয়ে তাদের যেনো কোনো মাথাব্যথাই নেই। রাসায়নিক ল্যাবের কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের ল্যাবে প্রতিদিন গড়ে বিভিন্ন পণ্যের শতাধিক নমুনা আসে। এই বিপুল পরিমাণ নমুনা পরীক্ষা করতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এছাড়া অনেক নমুনার পরীক্ষা আবার দ্রুত করে দিতে হয়। গতকাল পর্যন্ত দুই শতাধিক পণ্য ল্যাবে পরীক্ষার অপেক্ষায় ছিল বলে জানান তারা। বর্তমানে যে অবস্থা এতে অন্তত ১০ জন রাসায়নিক পরীক্ষক দরকার বলেও তারা জানান।

চট্টগ্রাম কাস্টমস এজেন্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু দৈনিক আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রাম কাস্টমসের ল্যাব নিয়ে আমরা বিভিন্ন সময় কাস্টমসের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে আসছিলাম। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, আমরা বলার পর প্রতিবারই কাস্টমস কর্তৃপক্ষ আমাদের আশ্বস্ত করেন, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। কাস্টমসের ল্যাবে এখন একজন পূর্ণাঙ্গ রাসায়নিক পরীক্ষকও নেই। আমাদেরকে এর খেসারত দিচ্ছে। বর্তমানে আমাদের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পেতে এক সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এছাড়া অনেক পরীক্ষা আবার কাস্টমসের ল্যাবে করা যায় না। তখন রাজধানী ঢাকা কিংবা বহির্ল্যাবে পাঠানো হয়। এতে দুই সপ্তাহ পর্যন্ত সময় লেগে যায়। তাই আমরা কাস্টমস কর্তৃপক্ষ আবারও অনুরোধ করবো, আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযুক্ত করার পাশাপাশি পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগ দিয়ে কাস্টমস ল্যাবটি যেন স্বয়ংসম্পূর্ণ করা হয়।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার মো. ফাইজুর রহমান জানান, চট্টগ্রাম কাস্টমসে ল্যাবের জনবল চেয়ে ইতোমধ্যে এনবিআরকে চিঠি লিখা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা আবারও যোগাযোগ করবো।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা
পরবর্তী নিবন্ধগাজায় ২৪ ঘণ্টায় নিহত ২৪৮