নগরের এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেশিয়াম মাঠে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম অমর একুশে বইমেলা-২০২২ শুরু হচ্ছে আগামীকাল রোববার। মেলা চলবে ১০ মার্চ পর্যন্ত। এবারের মেলায় চট্টগ্রাম ও ঢাকার ৯৫ প্রকাশনা সংস্থার ১২০টি স্টল থাকবে। এর মধ্যে ৭০টি সিঙ্গেল ও ২৫টি ডাবল স্টল থাকবে। প্রতিদিন বিকেল ৩ টা থেকে রাত ৯টা ও ছুটির দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত পাঠক ও দর্শনার্থীর জন্য মেলা উন্মুক্ত থাকবে। কোভিডের কারণে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে বাস্তবায়ন করা হবে এবারের মেলা। এ জন্য প্রবেশ মুখে থাকবে করোনা প্রতিরোধক বুথ। গতকাল সকালে মেলা প্রাঙ্গণে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ সব তথ্য জানানো হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মেলা কমিটির আহ্বায়ক ও কাউন্সিলর ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন বইমেলার আয়োজন করছে। তবে গত দুইবারের ধারাবাহিকতায় এবারও চট্টগ্রামের বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থা, সাহিত্যিক, লেখক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী এবং অন্যান্য শিল্প-সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতরাই সম্মিলিতভাবে বইমেলা বাস্তবায়ন করেন। ওই হিসেবে এবারও ‘অভিন্ন বইমেলা’ হতে যাচ্ছে চট্টগ্রামে। ২০১৯ ও ২০২০ সালেও সম্মিলিত উদ্যোগে বইমেলা হয়েছিল। ২০২১ সালে করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় বইমেলা হয়নি। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে এবার মেলা প্রাঙ্গণে থাকবে দৃষ্টিনন্দন বঙ্গবন্ধু কর্নার এবং মুক্তিযোদ্ধোদের জন্য সংরক্ষিত আসন। এ ছাড়া লেখক আড্ডা, নারী লেখক, শিশু কর্নার এবং ওয়াইফাই জোনের ব্যবস্থা থাকবে। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় পুরো মেলা প্রাঙ্গণ সিসিটিভি নেটওয়ার্কের আওতাভুক্ত থাকবে। মেলা মঞ্চে প্রতিদিন নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও বিষয়ভিত্তিক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিদিনের আলোচনা সভায় বিচিত্র বিষয়ের সমাহার রয়েছে। অনুষ্ঠানমালার মধ্যে রয়েছে- মাতৃভাষা দিবস, লোক উৎসব, রবীন্দ্র উৎসব, তারুণ্য উৎসব, নারী উৎসব, বিতর্ক উৎসব, নজরুল দিবস, বিদ্রোহী কবিতার শতবর্ষ উদ্যাপন, মরমী উৎসব, আবৃত্তি উৎসব, নৃ-গোষ্ঠী উৎসব, চাটগাঁ উৎসব, যুব উৎসব, পেশাজীবী সমাবেশ, ঐতিহাসিক ৭ মার্চের আলোচনানুষ্ঠান, ছড়া উৎসবসহ ১০ মার্চ সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। দেশের খ্যাতিমান কবি-সাহিত্যিক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ ও সাংস্কৃতিক অঙ্গণের বরেণ্য ব্যক্তিবর্গ বিষয়ভিত্তিক আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন।
ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু বলেন, চট্টগ্রামের সাধারণ নাগরিক সমাজ, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের সম্মিলিত প্রয়াসে বইমেলা অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। বইমেলায় মুক্তিযুদ্ধ, বাঙালি সংস্কৃতি, স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধুর চেতনা বিরোধী কার্যক্রম ও গ্রন্থ প্রশ্রয় দেয়া হবে না।
মেলার আহ্বায়ক আরো জানান, মেলা মঞ্চে শিশু কিশোরদের চিত্রাংকন, রচনা, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, রবীন্দ্র-নজরুল-লোক সংগীত, সাধারণ নৃত্য, লোক নৃত্য, আবৃত্তি, উপস্থিত বক্তৃতা ও দেশের গানের আয়োজন করা হয়েছে এবং প্রতিদিন মুক্তিযুদ্ধের জাগরণী ও দেশাত্মবোধক গান পরিবেশিত হবে। এতে দেশের প্রতিথযশা লেখক, সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবী উপস্থিত থাকবেন। এ ছাড়াও জাতীয় জীবনে যেসব ব্যক্তি কৃতিত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন তাদের একুশে স্মারক সম্মাননা পদক ও সাহিত্য পুরষ্কার প্রদান করা হবে। আরো থাকবে ৫২’র ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের বাণী সংবলিত প্রতিকৃতি প্রদর্শনী, মেলা পরিষদের কক্ষ, সুপরিসর মিডিয়া সেন্টার, হেলথ কর্নার, ফায়ার সার্ভিস, অভ্যর্থনা কক্ষ, বিটিভি বুথ, ব্যাংক বুথসহ সার্বক্ষণিক সেবা প্রদানে সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন বিভাগের সমন্বয়ে সার্ভিস বুথের ব্যবস্থা।
সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চসিকের
সমাজকল্যাণ স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর আবদুস সালাম মাসুম, মেলা কমিটির সদস্য সচিব চসিক প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার, মেলা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক শাহ আলম নিপু, কবি ওমর কায়সার, জামাল উদ্দিন, সাংবাদিক রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, সাইফুদ্দিন আহমেদ সাকী, কামরুল হাসান বাদল, সাইফুল আলম বাবু, মুক্তিযোদ্ধা দেওয়ান মাকসুদ আহমদ, কবি আইয়ুব সৈয়দ, আলী প্রয়াস, মাসুদ বকুল, দীপেন চৌধুরী, নজরুল ইসলাম মোস্তাফিজ, জয়নুদ্দিন জয়, মো. সায়েম, জিয়াউল হক জিয়া, জসিমুল হক চৌধুরী।