চট্টগ্রাম ওয়াসার এমডিকে পদত্যাগে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

এমডির কক্ষে আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভ আমার কোনো দুর্নীতি নেই, কারো চাপে পদত্যাগ করব না : এমডি

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ at ৭:০২ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহর পদত্যাগে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী সাধারণ নাগরিক সমাজ। গতকাল রোববার বেলা ১২টার দিকে বৈষম্যবিরোধী সাধারণ নাগরিক সমাজের ব্যানারে ওয়াসার এমডি কার্যালয়ে বিক্ষোভ শেষে তারা এ আলটিমেটাম দেয়। একই সঙ্গে পদত্যাগের পাশাপাশি ১৭ দফা দাবিও উত্থাপন করেন সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ। নিজ উদ্যোগে পদত্যাগ না করলে হেনস্তার শিকার হবেন বলেও এমডিকে হুঁশিয়ারি দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ভোক্তাদের জাতীয় সংগঠন কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন এবং চট্টগ্রাম নগর কমিটির নেতৃবৃন্দ।

এর আগে ওয়াসার এমডি এ কে এম ফজলুল্লাহর পদত্যাগসহ ১৭ দফা দাবিতে বৈষম্যবিরোধী নাগরিক সমাজের ব্যানারে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় বিপুলসংখ্যক বিক্ষোভকারী এমডির কক্ষে বিক্ষোভ করে পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। এক ঘণ্টা ধরে তারা বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভকারীরা বলেন, আপনি স্বৈরশাসক হাসিনা সরকারের আপনজনদের একজন। আমরা চাই স্বৈরশাসকের অনুসারীরা এ রাষ্ট্র পরিচালনায় থাকবে না। তাই অতিসত্তর চট্টগ্রাম ওয়াসার এমডি থেকে পদত্যাগ করুন।

এ সময় ওয়াসার এমডি প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহ বলেন, আমি কোনো স্বৈরশাসকের দোসর না। তাদের কারো সঙ্গে আমার যোগাযোগও ছিল না। আমি সরকার নিযুক্ত লোক, কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব না। আজকে মানুষদের কথায় চলে গেলাম। তখন সরকার আমার থেকে জানতে চাইবে আমি গেলাম কেন?

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম ওয়াসায় আমার কোনো দুর্নীতি নেই। এখানে দুদক ও বিভিন্ন সরকারি দপ্তর থেকে তদন্ত করেছে। কোনো দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া যায়নি এবং দুর্নীতির কোনো সুযোগ নেই।

আন্দোলনকারীদের ১৭ দফা দাবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, এমডি এ কে এম ফজলুল্লাহর আয়কর বিবরণী ২০০৯ থেকে ২০২৪ এবং সম্পদ বিবরণী জনসম্মুখে প্রকাশ করা, স্বৈরাচারী সরকারের পোষ্যদের নিয়ে গঠিত বোর্ড বাতিল করা, ৪ আগস্ট হাসিনার পক্ষ নিয়ে তাণ্ডবে অংশ নেওয়া ওয়াসার কর্মচারীদের চিহ্নিত করে স্থায়ী বহিষ্কার করা, ওয়াসার এমডির ভ্রমণ বিলের (২০০৯২০২৪) পূর্ণাঙ্গ তথ্য প্রকাশ করা, ইংস লি. নামের ঠিকাদার থেকে স্মার্ট মিটার কিনে ‘পদ্মা’ নামে বিল করার রহস্য ও অনিয়ম তদন্ত করে অভিযুক্তদের শাস্তির আওতায় আনা, এমডি এ কে এম ফজলুল্লাহর সময়ে বহিষ্কৃত সকল কর্মকর্তাকর্মচারীকে পুনর্বহাল করা ইত্যাদি।

ওয়াসার এমডি সাংবাদিকদের বলেন, আমি কারো চাপে পদত্যাগ করব না। সরকার চাইলে পদত্যাগ করব। ওয়াসায় ১৫ বছর ধরে দায়িত্ব পালনকালে আমি কোনো অনিয়মদুর্নীতি করিনি। একটি প্রকল্পেও অর্থ আত্মসাৎ করেছিএ ধরনের প্রমাণ কেউ দেখাতে পারবে না। তিনি বলেন, আমি ওয়াসায় দায়িত্ব নেওয়ার সময় উৎপাদন সক্ষমতা ছিল ১২ কোটি লিটার পানি। বর্তমানে ৫৫ কোটি লিটার পানি উৎপাদনে সক্ষম করেছি। চট্টগ্রাম শহরের ৯৫ শতাংশ মানুষ ওয়াসার পানি পাচ্ছে। মাত্র ৫ শতাংশ মানুষ পানি পাচ্ছেন না। বঞ্চিতদের জন্যও প্রকল্প নেওয়ার উদ্যোগ আছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমাধ্যমিকে ফিরছে সায়েন্স-আর্টস কমার্স
পরবর্তী নিবন্ধদক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত