ঢাকার আদালত প্রাঙ্গণ থেকে দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। আদালত ভবনগুলোর সামনে মোতায়েন করা হয়েছে অস্ত্রসহ ২০ জন গার্ড। নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (প্রসিকিউশন) কামরুল হাসান আজাদীকে এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, দেশে রেড এলার্ট জারি রয়েছে। আদালতের নিরাপত্তা জোরদার করতে উচ্চ আদালত থেকেই নির্দেশনা রয়েছে। সেই অনুযায়ী আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। ইতিমধ্যে আদালতের ভবনগুলোর সামনে অস্ত্রসহ অতিরিক্ত ২০ জন গার্ড মোতায়েন করা হয়েছে। যা আগে ছিল না। নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো জোরদার করতে আলাপ আলোচনা চলছে। প্রতিটি কোর্ট রুমের সামনে আমরা আমর্স গার্ড বসাতে চাই। এ নিয়েও চলছে আলোচনা। কাজ না থাকলেও আদালত পাড়ায় অনেকে যাওয়া আসা করেন। এটা কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায় সে নিয়েও উর্ধ্বতনদের সাথে আমাদের কথা চলছে।
তিনি বলেন, কারাগার থেকে যে সব আসামি আসেন তারা প্রথমে জিআরও সেকশনে যান। সেখান থেকে সংশ্লিষ্ট আদালত কক্ষে। এরপর হাজতখানা হয়ে প্রিজন ভ্যানে করে ফের কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পুরো কাজটিই সর্বোচ্চ নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে করা হয়। চলমান পরিস্থিতিতে আমরা আরো সতর্কতার সাথে কাজটি করব। দুর্ঘটনা এড়াতে যা যা করা প্রয়োজন সবকিছুই করা হবে।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. গিয়াস উদ্দিন আজাদীকে বলেন, কারাগার স্পর্শকাতর জায়গা। সেই হিসেবে সব সময় নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকে সর্বোচ্চ। বর্তমানেও তা অব্যাহত রয়েছে। জঙ্গিদের কারাগার থেকে আদালতে পাঠানোর সময় ডান্ডা বেড়ি পড়ানো হয় কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ডান্ডা বেড়ি পড়ানো হয় না। তিন চার বছর ধরেই চলছে এ নিয়ম। এ বিষয়ে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা রয়েছে।
এদিকে গতকাল চট্টগ্রাম আদালত পাড়ায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আর্মস গার্ডের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও রয়েছে গোয়েন্দা তৎপরতা। পুলিশের সিটিএসবিসহ অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করছেন। সরেজমিনে আরো দেখা যায়, আদালত ভবনের পাশাপাশি জেলা প্রশাসন কার্যালয়, বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়, আইনজীবীদের ৫টি ভবন ও রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেঙ ভবনেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এসব স্থাপনার প্রবেশ পথে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। সন্দেহভাজনদের চেকপোস্টে থাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তল্লাশি করছেন।
সার্বিক বিষয়ে চট্টগ্রামের জেলা পিপি শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেন, অন্যান্য দিনের চেয়ে আজকের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভালো ছিল। তবে তা আরো বাড়াতে হবে। বিশেষ করে আদালতের মালখানা, ট্রেজারি, প্রিজন ভ্যান ও হাজতখানায় কড়া দৃষ্টি রাখতে হবে। ভয়ংকর জঙ্গিদের ক্ষেত্রে অবশ্যই বিশেষ নিরাপত্তা থাকতে হবে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে আরও বেশি তৎপরতা বাড়াতে হবে বলেও জানান তিনি।












