চট্টগ্রাম অঞ্চলের সম্ভাবনাগুলো কাজে লাগাতে পিপিপি মডেলকে আরও গতিশীল করতে হবে। আমরা চাই এমন একটি কাঠামো গড়ে তুলতে, যেখানে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি খাতও নিজেদের দক্ষতা ও সম্পদ নিয়ে যুক্ত হবে। এতে শুধু অবকাঠামো নয়, কর্মসংস্থান, প্রযুক্তি স্থানান্তর এবং দক্ষ জনবল গঠনের দিকেও অগ্রগতি হবে। আমরা বর্তমানে দেশের বিভিন্ন বিভাগে ৮১টি পিপিপি প্রকল্প নিয়ে কাজ করছি, যার মধ্যে বেশ কয়েকটি চট্টগ্রামেও রয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে যেসব চ্যালেঞ্জ রয়েছে তা চিহ্নিত করে দ্রুত সমাধানের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে ‘পিপিপি ডিভিশনাল কনফারেন্স চট্টগ্রাম ২০২৫’ গতকাল মঙ্গলবার সকালে নগরীর হোটেল রেডিসন ব্লু’র মেজবান হলে অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পিপিপি কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী (সিইও) এবং সচিব মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশগ্রহণকারীদের প্রশ্নের জবাবে মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা স্বীকার করি, কিছু ক্ষেত্রে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও অনুমোদন প্রক্রিয়ায় বিলম্ব হয়। তবে এ প্রক্রিয়া সহজ ও স্বচ্ছ করতে আমরা ইতিমধ্যে ডিজিটাল ট্র্যাকিং সিস্টেম চালু করেছি। স্টেকহোল্ডারদের অংশগ্রহণ ও পরামর্শ আমাদের নীতিনির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আমাদের লক্ষ্য হলো বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি পূর্বানুমেয় ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা। একই সঙ্গে স্থানীয় চাহিদা ও পরিবেশকে মাথায় রেখে প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম চট্টগ্রামে পিপিপি মডেলের মাধ্যমে স্মার্ট নগর ব্যবস্থাপনা, পর্যটন অবকাঠামো উন্নয়ন (সন্দ্বীপ, পতেঙ্গা) উন্নত লজিস্টিক ও ট্রান্সপোর্ট হাব গড়ে তোলা, আধুনিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন, সবুজ ও টেকসই নগর উন্নয়ন পরিকল্পনা ইত্যাদি প্রকল্পে ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার বিনিয়োগবান্ধব নীতিমালা গ্রহণ করেছে। পিপিপি প্রজেক্টে বিনিয়োগকারী ব্যবসায়ীবৃন্দ যেন কোনো প্রকার ঝামেলা ছাড়া তাদের বিনিয়োগের কাঙ্ক্ষিত ফলাফল লাভ করতে পারেন সেজন্য জেলা প্রশাসন চট্টগ্রাম সর্বদা সহযোগিতা করবে।
সভাপতির বক্তব্যে বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দীন বলেন, চট্টগ্রাম দেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র। এখানকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে পিপিপি পদ্ধতি গ্রহণের মাধ্যমে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ আকর্ষণের সুযোগ তৈরি হবে।
প্রশ্নোত্তর পর্বে বেসরকারি বিনিয়োগকারী বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি বলেন, আমরা অনেক সময় প্রকল্প অনুমোদনে দীর্ঘসূত্রতা ও ভূমি বরাদ্দে জটিলতার মুখে পড়ি। এসব প্রক্রিয়া আরও দ্রুত ও স্বচ্ছ হলে বিনিয়োগের আগ্রহ বাড়বে। উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে সমন্বয়ের ঘাটতির কারণে অনেক ভালো প্রকল্প পিছিয়ে যাচ্ছে। একটি একীভূত প্ল্যাটফর্ম থাকা দরকার, যেখানে সব স্টেকহোল্ডার একত্রে কাজ করতে পারে।