চট্টগ্রামে প্রায় ৮০০ গণপরিবহনের রুট পারমিট বাতিল হচ্ছে। এর মধ্যে টেম্পো ৫৬১টি, হিউম্যান হলার প্রায় ৪৫টি এবং বাস–মিনিবাস আছে প্রায় ২০০টি। মূলত যেসব গাড়ির মডেল পরিবর্তন করা হয়েছে, ইঞ্জিন ও চেসিসে ঘষামাজা করাসহ বিভিন্ন ধরনের অসংগতি রয়েছে– এ ধরনের প্রায় ৮০০ বাস, মিনিবাস, হিউম্যান হলার ও টেম্পো শনাক্ত করে রুট পারমিট বাতিলের সুপারিশ করেছে নগর গণপরিবহন জরিপ কমিটি। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন রিজিওনাল ট্রান্সপোর্ট কমিটির (আরটিসি) তিনটি দল এ জরিপ কাজে অংশ নেয়। গত ১১ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম মহানগর আরটিসির এক বৈঠকে জরিপ কমিটির প্রতিবেদন পেশ করার পর সেই প্রতিবেদন গ্রহণ করা হয় এবং অসংগতিপূর্ণ এসব গণপরিবহনের রুট পারমিট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মাসুদ আহাম্মদ বলেন, চট্টগ্রাম নগরীতে চলাচলরত গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যেমন জরিপে যেসব গাড়িতে অসংগতি পাওয়া গেছে, সেই গাড়িগুলোর রুট পারমিট বাতিল করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ ছাড়া ঢাকার আদলে বাস–মিনিবাসগুলোকে সুনির্দিষ্ট কোম্পানির আওতায় নিয়ে আসার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ফলে এখন থেকে চাইলেই কোম্পানি ছাড়া ব্যক্তিগত পর্যায়ে বাস–মিনিবাস ক্রয় করে রাস্তায় নামানো যাবে না। ছোট ছোট গণপরিবহনের কারণেও সড়কে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে। এ কারণে নতুন করে কোনো ছোট গণপরিবহনের রুট পারমিট দেওয়া হবে না।
জানা যায়, গত ২৩ মে অনুষ্ঠিত আরটিসির এক সভায় সড়কে শৃঙ্খলা ও গতি ফেরানোর ক্ষেত্রে অন্তরায়গুলো খুঁজে বের করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ জন্য নগরীতে চলাচলকারী গণপরিবহনে জরিপ চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ জন্য পৃথক তিনটি কমিটিও গঠন করা হয়। নগর ট্রাফিকের উত্তর জোনের উপকমিশনার জয়নাল আবেদিনকে আহ্বায়ক করে আট সদস্য বিশিষ্ট বাস ও মিনিবাস জরিপ কমিটি, ট্রাফিকের দক্ষিণ জোনের উপকমিশনার নাসির উদ্দিনকে আহ্বায়ক করে হিউম্যান হলার এবং পশ্চিম জোনের উপকমিশনার তারেক আহমেদকে আহ্বায়ক করে অটোটেম্পো জরিপ কমিটি গঠন করা হয়। জরিপ কমিটিগুলো তাদের প্রতিবেদন আরটিসির চেয়ারম্যান সিএমপি কমিশনারের কাছে জমা দেয়। গত ১১ ফেব্রুয়ারি আরটিসির পরবর্তী সভায় একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় জরিপ টিমের তদন্ত প্রতিবেদনের প্রস্তাব ও সুপারিশ অনুযায়ী ৫৬১টি হিউম্যান হলার, টেম্পো ও দুই শতাধিক বাস–মিনিবাসের রুট পারমিট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিপরীতে সমান সংখ্যক গাড়ির রুট পারমিট দেওয়া হবে। সংশ্লিষ্ট গাড়ি মালিকদের মধ্যে যারা আবেদন করেছেন, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তাদেরই নতুন গাড়ি নামানোর জন্য রুট পারমিট দেওয়া হবে।