চট্টগ্রাম মহানগরীর ৪১ ওয়ার্ডে ৪১ জন নতুন ওএমএস (খোলা বাজারে খাদ্যশস্য বিক্রি) ডিলারের জন্য ৪২০টি আবেদন জমা পড়েছে চট্টগ্রাম খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসে। ৪২০টি আবেদন থেকে ৪১ জনকে যাচাই–বাছাই করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
খাদ্য অধিদপ্তর সারা দেশে ওএমএসের নতুন নীতিমালা জারি করেছে। নতুন নীতিমালার আলোকে চট্টগ্রামসহ সারা দেশে ওএমএসের আগের সকল ডিলারশিপ বাতিল করে ডিসেম্বরের ১ তারিখ থেকে নতুন করে ডিলার নিয়োগ দেওয়ার কথা ছিল। নতুন ডিলারের মাধ্যমে ১ ডিসেম্বর থেকে নগরীর ৪১ ওয়ার্ডে সাধারণ ক্রেতাদের মাঝে ওএমএসের চাল ও আটা বিক্রির কথা ছিল। ডিলার নিয়োগ দিতে না পারায় তা সম্ভব হয়নি। তবে নতুন ডিলার নিয়োগ না হলেও ওএমএস কার্যক্রম বন্ধ নেই। আগের ডিলারদের দিয়ে কার্যক্রম চলছে।
চট্টগ্রাম জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (কারিগরি) মো. ফখরুল আলম আজাদীকে বলেন, নতুন ওএমএস নীতিমালা জারি করেছে সরকার। সেই লক্ষ্যে ১ ডিসেম্বরের মধ্যে চট্টগ্রাম মহানগরীর ৪১ ওয়ার্ডে ৪১ জন নতুন ওএমএস ডিলার নিয়োগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নতুন ওএমএস ডিলার নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ৪১ জন ডিলারের জন্য ৪২০ জন আবেদন করেছেন। আবেদনগুলো যাচাই–বাছাই করতে একটু সময় লাগছে। যার কারণে ডিসেম্বরের ১ তারিখের মধ্যে নতুন ডিলার নিয়োগ করা সম্ভব হয়নি। আগের ডিলারদের মাধ্যমে কার্যক্রম চালু রাখা হয়েছে। আগের ডিলাররা আদালতে মামলাও করেছেন। তাছাড়া সিটি কর্পোরেশন আমাদেরকে ৪১ ওয়ার্ডের জন্য ৪১টি স্থান নির্ধারণ করে দিয়েছে। ওই স্থানেই ওএমএস ডিলারদের দোকান থাকতে হবে পণ্য বিক্রির জন্য। সিটি কর্পোরেশনের নির্ধারণ করে দেওয়া স্থানে দোকান থাকার বিষয়টিও আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তর থেকে জানা গেছে, চট্টগ্রাম মহানগরীতে বর্তমানে ৪৮ জন ওএমএসের ডিলার রয়েছে। উপজেলাগুলোতে এখন ওএমএস কার্যক্রম বন্ধ বয়েছে। ৪৮ ডিলারের মধ্যে প্রতিদিন ২৫ জন ডিলারকে ২৫টি পয়েন্টে ওএমএসের চাল ও আটা বিক্রির জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। একজন ডিলারকে প্রতিদিন ১ টন চাল ও দেড় টন করে আটা দেওয়া হয়। ডিলারের কাছে থেকে একজন ক্রেতা ২৪ টাকা দামে (প্রতি কেজি) ৫ কেজি আটা এবং ৩০ টাকা দামে ৫ কেজি চাল ক্রয় করতে পারেন।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, খাদ্যশস্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে গরিব ও অসচ্ছল মানুষের কাছে কম দামে ওএমএসের চাল–আটা বিক্রি করে সরকার। কিন্তু ১৫–২০ বছর ধরে ডিলার হিসেবে রয়েছেন একই ব্যক্তি। এছাড়া ওএমএসের কেন্দ্রের চেয়ে চার–পাঁচ গুণ বেশি ডিলারশিপ পেয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এমন পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকার আগের সব ওএমএস ডিলারের লাইসেন্স বাতিল করে নতুন ডিলার নিয়োগ দেওয়ার উদ্যোগ নেয়।