ঘরের মাটিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জয় দিয়ে শুরু করার লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু সে লক্ষ্য পূরণ হয়নি। উল্টো এখন সে জিম্বাবুয়ের কাছে সিরিজ হারের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। প্রায় সাত বছর পর এমন পরিস্থিতির সামনে বাংলাদেশ।
তাই সিরিজ হারের এই লজ্জা এড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে আজ চট্টগ্রামে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে জিম্বাবুয়ের মুখোমুখি হবে স্বাগতিক বাংলাদেশ। সকাল ১০টায় শুরু হওয়া ম্যাচটি বিটিভি সরাসরি সমপ্রচার করবে।
বাংলাদেশের ব্যাটিং ব্যর্থতাকে কাজে লাগিয়ে ২০২১ সালের পর টেস্টে প্রথম জয়ের দেখা পায় জিম্বাবুয়ে। এছাড়াও ২০১৮ সালের পর বাংলাদেশের মাটিতে প্রথম টেস্ট জয়ের স্বাদ নেয় তারা। আজ মানসিক দিক থেকে বেশ এগিয়ে থেকে মাঠে নামবে জিম্বাবুয়ে। কারণ এই ম্যাচে হারলেও তাদের কিছু যায় আসে না। আর জিতলে বা ড্র করলে সিরিজ নিয়ে দেশে ফিরতে পারবে। টেস্ট ক্রিকেটে মুখোমুখি লড়াইয়ে জয় আর পরাজয় দুদলের সমানে সমান। এই ম্যাচে যারা জিতবে তারা এগিয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের জয়ের ক্ষুধাটা অনেক বেশি।
জয়ের সংখ্যা, পরিসংখ্যান বা অন্য কিছু এই মুহূর্তে বাংলাদেশের কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। সিরিজ হার এড়ানোর চ্যালেঞ্জ টাইগারদের সামনে। প্রথম টেস্টে জিম্বাবুয়েকে ১৭৪ রানের টার্গেট ছুঁড়ে দিয়ে দারুণ বোলিং করেছে বাংলাদেশের বোলাররা। কিন্তু জয়টা তুলে নিতে পারেনি। সিলেট টেস্টে জাকের আলি, মোমিনুল আর শান্ত ছাড়া বাকি ব্যাটাররা ভাল করতে পারেনি মোটেও। যার খেসারতটা দিয়েত হয়েছে ম্যাচ হেরে। বোলারদের মধ্যেও মিরাজ ছাড়া বাকিরা সুবিধা করতে পারেনি। কিন্তু চট্টগ্রামে ব্যাটে আর বলে একই সাথে জ্বলে উঠতে চায় বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ দলের উইকেটরক্ষক ব্যাটার জাকের আলি বলেন, প্রথম টেস্টে পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা খেলতে পারিনি। আমার মনে হয়, আমাদের সবকিছু ঠিকঠাকভাবে করা দরকার। আমরা এ নিয়ে আলোচনা করেছি। অবশ্যই ব্যাটিংয়ে মনোযোগ আমাদের মূল লক্ষ্য। আমরা অনেক দিন ধরে ব্যাটিংয়ে ধুঁকছি।
সিলেট টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১৯১ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। এরপর জিম্বাবুয়ে ৮২ রানের লিড নেয়। দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যাটিং ব্যর্থতায় ২৫৫ রানে অলআউট হয় টাইগাররা। জয়ের জন্য ১৭৪ রানের টার্গেট পায় সফরকারী জিম্বাবুয়ে। ৩ উইকেট হাতে রেখেই সেই লক্ষ্য স্পর্শ করে ২০২১ সালের পর টেস্ট ফরম্যাটে প্রথম এবং ২০১৮ সালের পর বাংলাদেশের মাটিতে প্রথম জয়ের স্বাদ পায় জিম্বাবুয়ে।
২০২৩ সালের পর ঘরের মাঠে কোনো টেস্ট জিততে পারেনি বাংলাদেশ। জাকের আলি বলেন, ব্যাটিংয়ের কারণেই আমরা প্রথম টেস্ট হেরেছি। তবে ম্যাচের পর এসব বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি। বোলাররা সবসময় টেস্ট জেতাতে পারে না। আমরা চাই আমাদের সকল ব্যাটার পরের ম্যাচে তাদের সেরাটা উজাড় করে দিবে।
দ্বিতীয় টেস্টে বাংলাদেশ দলে দুটি পরিবর্তন হতে পারে। একাদশে ওপেনার হিসেবে সুযোগ পেতে পারেন তিন বছর পর টেস্ট দলে ফেরার এনামুল হক বিজয়। আর পাকিস্তান সুপার লিগ খেলতে যাওয়া পেসার নাহিদ রানার জায়গায় একাদশে সুযোগ পেতে পারেন পেসার তানজিম হাসান সাকিব। আর তাই যদি হয় তাহলে আজ অভিষেক হবে তানজিম সাকিবের। যেহেতু গতিময় বোলার এখন দলে আছেন তানজিম সাকিব। তবে বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং ব্যর্থতাটা খুব ভোগাচ্ছে। সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে চায় ব্যাটাররা। অবশ্য বেরিয়ে না আসার কোন পথ নেই। কারণ এগিয়ে থেকেই চট্টগ্রামে খেলতে নামবে জিম্বাবুয়ে। তাই আগের ব্যাটারদের দায়িত্ব নিতে হবে বলে মনে করছেন জাকের আলি।
প্রথশ টেস্টে জিম্বাবুয়ে যে ক্রিকেট খেলেছে তা রীতিমত অসাধারণ। সে ধারাটা অব্যাহত রাখতে চায় চট্টগ্রামেও। দলটির ওপেনার বেন কারান যদিও বিশ্বাস করেন পরের ম্যাচেই ঘুরে দাঁড়াবে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, সিরিজের শেষ ম্যাচে জ্বলে উঠবে বাংলাদেশ। সিরিজ হার এড়াতে নিজেদের সেরাটা দিবে টাইগাররা। তাই কাজটি সহজ হবে না। আমাদের প্রতিটি মুহূর্তের জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। আশা করি আগের ম্যাচের মত আমরা সেরা পারফরমেন্স দেখাতে পারব। কারান জানান, প্রথম টেস্টে জয়ের পর দলের মধ্যে বাড়তি আত্মবিশ্বাস বিরাজ করছে। সবাই দারুণ আত্মবিশ্বাসী। আমরা আমাদের পরিকল্পনা সঠিকভাবে কাজে লাগাতে চাই। চট্টগ্রামের পরিস্থিতি সিলেট থেকে ভিন্ন হবে। তবে আমাদের লক্ষ্য থাকবে অভিন্ন।