চট্টগ্রামে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বাণিজ্য খাতের উন্নয়নে কানাডার সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অংশীদারিত্ব প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন সিটি মের ডা. শাহাদাত হোসেন। গতকাল বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার হি.ই. অজিত সিং এর কাছে এসব প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন মেয়র। এসময় এনার্জি, নার্সিং শিক্ষা ও চামড়া শিল্প, এই তিন খাতে কানাডার সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রস্তাব করেন তিনি। তখন হি.ই. অজিত সিং বলেন, ‘কানাডা বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নযাত্রায় অংশীদার থাকতে চায়। মেয়র যেসব বিষয় উল্লেখ করেছেন, সেগুলোর প্রতিটিই উন্নয়ন সহযোগিতার বাস্তব ক্ষেত্র তৈরি করে। কানাডায় সরকারি–বেসরকারি পর্যায়ে এমন বহু প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও দক্ষতা বিনিময়ে আগ্রহী’। চসিক সূত্রে জানা গেছে, অজিত সিং গতকাল দুপুরে টাইগারপাসস্থ নগর ভবনের অস্থায়ী কার্যালয়ে সিটি মেয়রের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে আসেন। এসময় বাংলাদেশ ও কানাডার বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন দুইজন। এসময় উপস্থিত ছিলেন কানাডার সিনিয়র ট্রেড কমিশনার ডেব্রা বয়েস, সিনিয়র পলিটিক্যাল কাউন্সিলর মার্কাস ডেভিয়েস, ট্রেড কমিশনার কামাল উদ্দিন এবং পলিটিক্যাল অ্যান্ড ইকনোমিক অ্যাডভাইজার নিসার আহমেদ, চসিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা ড. কিসিঞ্জার চাকমা, প্রধান প্রকৌশলী আনিসুর রহমান, প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির চৌধুরী, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এস. এম. নছরুল কাদির ও রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ ইফতেখার মনির। মেয়র কানাডার হাইকমিশনারকে জানান, চট্টগ্রাম হচ্ছে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক প্রবেশদ্বার। এখানে যৌথ বিনিয়োগের মাধ্যমে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের অবস্থান আরও সুদৃঢ় করা সম্ভব। ডা. শাহাদাত বলেন, চট্টগ্রামের টেকসই উন্নয়ন ও নাগরিকসেবা আধুনিকায়নে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অপরিহার্য। বিশেষ করে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে কানাডার অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তিগত সহায়তা নগর উন্নয়নে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশন এলাকায় একটি যৌথ প্রকল্পের মাধ্যমে কানাডা প্রযুক্তি স্থানান্তর, অর্থায়ন ও কারিগরি সহায়তার মাধ্যমে রুফটপ সোলার সিস্টেম, স্ট্রিটলাইট সোলার সিস্টেম এবং বর্জ্য–থেকে–জ্বালানি প্রকল্প বাস্তবায়নে সহায়তা করতে পারে। এটি নগরীর কার্বন নিঃসরণ ও অবকাঠামোগত ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করবে। তিনি বলেন, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় ও সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত স্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোর সহযোগিতায় কানাডিয়ান স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে একটি নার্সিং ও প্যারামেডিকদের মানোন্নয়নে একাডেমিক কার্যক্রম চালু করা যেতে পারে। এতে কানাডিয়ান বিশেষজ্ঞরা কারিকুলাম তৈরি, স্বল্পমেয়াদি প্রশিক্ষণ এবং অনলাইন সার্টিফিকেশন কোর্সে সহায়তা করতে পারেন, যা বাংলাদেশের নার্সদের দেশীয় ও আন্তর্জাতিক কর্মক্ষেত্রে দক্ষ করে তুলবে। মেয়র চামড়া শিল্পে কানাডার বিনিয়োগের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, চট্টগ্রামে কানাডার বিনিয়োগে একটি বিশেষায়িত লেদার প্রসেসিং এবং রপ্তানি অঞ্চল গড়ে তোলা গেলে তা দেশের রপ্তানি বহুমুখীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এই বিশেষায়িত অঞ্চলটি পরিবেশবান্ধব চামড়া প্রক্রিয়াকরণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং মূল্য সংযোজিত উৎপাদন নিশ্চিত করবে।