চট্টগ্রাম কাস্টমস এক্সাইজ অ্যান্ড ভ্যাট কমিশনারেটের দুই দিনের ভ্যাট মেলা করদাতাদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে গতকাল শেষ হয়েছে। মেলায় ভ্যাট কমিশনারেটের অধীন ৮ বিভাগে মোট ২ হাজার ৪৬১টি রিটার্নের বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১৮ কোটি ৮৭ লাখ ৫৪ হাজার ৩৫৪ টাকা। এছাড়া নতুন ভ্যাট নিবন্ধনের আবেদন জমা পড়েছে ২৮৪টি। ভ্যাট কমিশনারেটের কর্মকর্তারা বলছেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে আয়োজিত দুইদিনব্যাপী ভ্যাট মেলায় করদাতাদের পদচারণায় মুখরিত ছিল মেলা প্রাঙ্গণ। করভীতি দূর করা এবং ভ্যাটের আওতা বাড়ানো ছিল আমাদের উদ্দেশ্য।
চট্টগ্রাম ভ্যাট কমিশনারেট সূত্রে জানা গেছে, চট্টলা বিভাগের অধীনে পাহাড়তলী সার্কেলে নতুন নিবন্ধনের আবেদন জমা পড়েছে ৩৮টি। এছাড়া ১৫২ রিটার্নে রাজস্ব আয় হয়েছে ১ কোটি ৩১ লাখ ৮৮ হাজার ৬৬৭ টাকা। পাঁচলাইশ সার্কেলে নতুন নিবন্ধনের আবেদন জমা পড়ে ৩৯টি এবং ২৮২টি রিটার্নের বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয় ৮৩ লাখ ৬৫ হাজার ৭০০ টাকা। হালিশহর সার্কেলে নতুন রিটার্ন জমা পড়েছে ৬টি এবং ১৮৩ রিটার্নের বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৩ কোটি ৫৪ লাখ ১০ হাজার ১৫ টাকা। ফৌজদারহাট সার্কেলে নতুন নিবন্ধনের আবেদন নেই। তবে ৭৭টি রিটার্নের বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৮ কোটি ৫৩ লাখ ৪৯ হাজার ৯২৩ টাকা। এ বিভাগের মোট নতুন নিবন্ধন জমা পড়েছে ৮৩টি এবং ৬৯৪ রিটার্নের বিপরীতে রাজস্ব আয় হয়েছে ১৪ কোটি ২৩ লাখ ১৪ হাজার ৩০৫ টাকা। কক্সবাজার বিভাগের অধীনে কক্সবাজার সার্কেলে নতুন ভ্যাট নিবন্ধনের আবেদন জমা পড়েছে ১১টি। এছাড়া মেলায় ১৫৪ রিটার্নের বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১ কোটি ২ লাখ ৭৬ হাজার টাকা, চকরিয়া সার্কেলে নতুন নিবন্ধন জমা পড়ে ১২টি এবং ১৩২ রিটার্নে রাজস্ব আয় হয়েছে ৩৫ লাখ টাকা। এছাড়া টেকনাফ সার্কেলে নতুন নিবন্ধনের আবেদন জমা পড়ে ২১টি। ১২৬ রিটার্নের বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ২০ লাখ টাকা। কক্সবাজার বিভাগে মোট নতুন ভ্যাট আবেদন জমা পড়েছে ৪৪টি। অন্যদিকে ৪১২টি রিটার্ন দাখিলের বিপরীতে রাজস্ব আয় হয়েছে ১ কোটি ৫৭ লাখ ৭৬ হাজার টাকা।
আগ্রাবাদ বিভাগের অধীনে কোতোয়ালী সার্কেলে নতুন নিবন্ধনের আবেদন জমা পড়েছে ৫০টি। এছাড়া ১৮০টি রিটার্ন দাখিলের বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৪৭ লাখ ৩ হাজার ৬৪৫ টাকা। সদরঘাট সার্কেলে নতুন আবেদন জমা পড়ে ২৬টি এবং ১৫৩ রিটার্নের বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১৩ লাখ ৩১ হাজার ৮৯০ টাকা।
আগ্রাবাদ সার্কেলে নতুন নিবন্ধনের আবেদন জমা পড়ে ৩২টি এবং ১৩৮ রিটার্নের বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৮ লাখ ৯১ হাজার ৭৮৩ টাকা। অন্যদিকে পতেঙ্গা সার্কেলে নতুন আবেদন জমা পড়েছে ৮টি এবং ১৪২ রিটার্নের বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয় ৫৬ লাখ ৬১ হাজার ৯৫২ টাকা। সর্বমোট নতুন নিবন্ধন জমা পড়েছে ১১৬টি এবং ৬১৩টি রিটার্নের বিপরীতে রাজস্ব আয় হয়েছে ১ কোটি ২৫ লাখ ৮৯ হাজার ২৭০ টাকা।
পটিয়া বিভাগের অধীনে পটিয়া সার্কেলে ৩৭টি রিটার্নের বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয় ১৮ লাখ ৬১ হাজার ১১৮ টাকা। কর্ণফুলী সার্কেলে ১০৯ রিটার্নে রাজস্ব আয় হয় ৯১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৬৫ টাকা এবং বোয়ালখালী সার্কেলে ৩২টি রিটার্ন দাখিলের বিপরীতে রাজস্ব আয় ১৮ লাখ ২৮ হাজার ৯৫০ টাকা। এ বিভাগে ১৭৮টি রিটার্নের বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১ কোটি ২৮ লাখ ২৯ হাজার ৫৩৩ টাকা। এছাড়া মেলায় নতুন নিবন্ধন হয়েছে ১২টি।
চান্দগাঁও বিভাগের অধীনে নাসিরাবাদ সার্কেলে ৫২ রিটার্নের বিপরীতে রাজস্ব আয় হয়েছে ৬ লাখ ৮২ হাজার ৩৩০ টাকা। বাকলিয়া সার্কেলে ২৬টি রিটার্নে ২ লাখ ৭৮ হাজার ৮০ টাকা, কালুরঘাট সার্কেলে ২৩ রিটার্নের বিপরীতে ২৩ লাখ ৯৮ হাজার ৬২৬ টাকা এবং কাপ্তাই সার্কেলে ১০টি রিটার্ন দাখিলের বিপরীতে রাজস্ব আয় হয় ২ লাখ ৬ হাজার ৯৫৩ টাকা। এ বিভাগে মোট ১১১টি রিটার্নের বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৩৫ লাখ ৬৫ হাজার ৯৮৯ টাকা।
রাঙামাটি বিভাগের অধীনে রাঙ্গুনিয়া সার্কেলে ৭৯টি রিটার্নের বিপরীতে মোট আদায় হয়েছে ২ লাখ ৬৩ হাজার ১৮৩ টাকা এবং রাঙামাটি সার্কেলে ১৫৯টি রিটার্নে রাজস্ব আদায় হয় ৩ লাখ ৮৯ হাজার ১৮০ টাকা। সার্কেল দুটিতে নতুন নিবন্ধন আবেদন জমা পড়েছে ৫টি। রাঙামাটি বিভাগে মোট ২৩৮টি রিটার্নের বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬ লাখ ৫২ হাজার ৩৬৩ টাকা।
বান্দরবান বিভাগের অধীনে বান্দরবান সার্কেলে নতুন নিবন্ধন হয়েছে দুটি। এছাড়া ২৭টি রিটার্নের বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৩ লাখ ৫৩ হাজার ৮৯৪ টাকা। অন্যদিকে লামা সার্কেলেও নতুন নিবন্ধন হয়েছে দুটি। এছাড়া ৫টি রিটার্নের বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১ লাখ ৯৩ হাজার টাকা। বান্দরবান বিভাগে মোট ৩২টি রিটার্নের বিপরীতে মোট রাজস্ব আদায় হয়েছে ৫ লাখ ৪৬ হাজার ৮৯৪ টাকা। এছাড়া নতুন নিবন্ধন জমা পড়েছে ৪টি।
খাগড়াছড়ি বিভাগের অধীনে সীতাকুণ্ড সার্কেলে নতুন নিবন্ধনের আবেদন জমা পড়েছে ১২টি এবং ৬৮টি রিটার্ন দাখিলের বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। অন্যদিকে খাগড়াছড়ি সার্কেলে নতুন নিবন্ধনের আবেদন জমা পড়ে ৮টি এবং ১১৫ রিটার্নে রাজস্ব আয় হয়েছে ৩০ হাজার টাকা। খাগড়াছড়ি বিভাগে মোট ২০টি নতুন নিবন্ধন জমা পড়ে। এছাড়া ১৮৩টি রিটার্ন দাখিলের বিপরীতে মোট রাজস্ব আদায় হয়েছে ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
মেলা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমস এক্সাইজ অ্যান্ড ভ্যাট কমিশনারেটের কমিশনার মো. আকবর হোসেন দৈনিক আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রামে অতীতে এই ধরণের মেলা হয়েছে কিনা আমার জানা নেই। যে উদ্দেশ্য নিয়ে আমরা মেলা আয়োজন করেছি, সেটি সফল বলা যায়। মেলায় আমরা অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছি। করদাতারা মেলায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে কর পরিশোধ করেছেন। আগামী মাসে ভ্যাট রিটার্ন দাখিলের সময় আমরা আবারও মেলা করার পরিকল্পনা নিয়েছি।