চট্টগ্রামে ফিরল ‘বিজয়’

ভূমধ্যসাগরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালন

| সোমবার , ২৬ অক্টোবর, ২০২০ at ৫:৫০ পূর্বাহ্ণ

ভূমধ্যসাগরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্বরত অবস্থায় গত ৪ আগস্ট বৈরুত বন্দরে বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ ‘বিজয়’ দেশে ফিরেছে। ২৪ সেপ্টেম্বর দেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে প্রায় ১০ হাজার ২০ কিলোমিটার সমুদ্রপথ পাড়ি দিতে হয়েছে জাহাজটিকে।
বর্তমানে ‘বানৌজা সংগ্রাম’ যুদ্ধজাহাজ ‘বিজয়’ এর প্রতিস্থাপক হিসেবে ভূমধ্যসাগরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের আওতায় লেবাননে দায়িত্ব পালন করছে। লেবাননে মাল্টিন্যাশনাল মেরিটাইম টাস্কফোর্সের আওতায় সফলভাবে দায়িত্ব পালন শেষে গতকাল রোববার ‘বিজয়’ চট্টগ্রাম নেভাল জেটিতে এলে স্বাগত জানান নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম শাহীন ইকবাল। এ সময় নৌবাহিনী প্রধান জাহাজে উপস্থিত কর্মকর্তা ও নাবিকদের সফলভাবে মিশন সমাপ্তের জন্য অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান। খবর বাংলানিউজের।
কর্মকর্তা ও নাবিকদের উদ্দেশে নৌপ্রধান বলেন, বৈরুত বন্দরে বিস্ফোরণের ঘটনায় জাহাজটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এবং নৌসদস্যদের আহত হওয়ার বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আন্তরিকতার সঙ্গে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নেন। সেই সঙ্গে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাহাজের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা এবং নৌসদস্যদের সুচিকিৎসার ক্ষেত্রে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন।
সবার সুস্থতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি জাহাজের প্রয়োজনীয় মেরামত শেষে নিরাপদে জাহাজটি দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য নৌপ্রধান জাহাজের প্রতিটি সদস্যের অসীম সাহস, উদ্যম এবং পেশাদারত্বের প্রশংসা করেন।
নৌপ্রধান বলেন, সফলভাবে দেশে প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে প্রমাণিত হলো বাংলাদেশ নৌবাহিনী তার ওপর ন্যস্ত যেকোনো দায়িত্ব পালনের চ্যালেঞ্জ পেশাদারত্বের সঙ্গে মোকাবেলা করতে সক্ষম। এছাড়া বিশ্বব্য্যপী করোনাভাইরাস মহামারী পরিস্থিতিতে জাহাজের নৌসদস্যরা করোনা থেকে মুক্ত থাকায় সবার প্রতি ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিতে জাহাজটি ২০১৭ সালের ১ ডিসেম্বর লেবানন গমন করে। যোগদানের পর থেকে জাহাজটি লেবানিজ জলসীমায় মেরিটাইম ইন্টারডিকশন অপারেশন, সন্দেহজনক জাহাজ ও এয়ারক্রাফটের ওপর নজরদারি, দুর্ঘটনা কবলিত জাহাজে উদ্ধার তৎপরতা এবং লেবানিজ নৌবাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছিল। লেবাননে অবস্থানকালে বিগত তিন বছরে জাহাজটিতে পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ৩৩০ জন সদস্য দক্ষতা, পেশাদারত্ব, আন্তরিকতা ও শৃক্সখলার সঙ্গে অর্পিত দায়িত্ব পালন করেন।
জাহাজটি আন্তর্জাতিক মেরিটাইম টাস্কফোর্সের অধীন উন্নত বিশ্বের অন্যান্য দেশের জাহাজের সঙ্গে নিয়মিত শান্তিরক্ষা টহল ও বিভিন্ন কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছে। এতে অন্যান্য দেশের নৌবাহিনী সম্পর্কে ধারণা লাভের পাশাপাশি ওইসব জাহাজের সঙ্গে সমুদ্র মহড়ায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে জাহাজের কর্মকর্তা ও নাবিকদের পেশাগত দক্ষতা বেড়েছে। তাছাড়া জাহাজটি ভূমধ্যসাগরে সাফল্যের সঙ্গে আন্তর্জাতিক দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৫৫ হাজার ইয়াবা ও মাদক বিক্রির ১৬ লাখ টাকা জব্দ
পরবর্তী নিবন্ধচিকিৎসার নামে নারীকে ধর্ষণ চেষ্টা ভণ্ড বৈদ্য গ্রেপ্তার