চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) মশা নিয়ন্ত্রণে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অবলম্বন করে নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর অংশ হিসেবে নগরীর ১৭ নম্বর (বাকলিয়া) ওয়ার্ডের সৈয়দ শাহ রোডের সামনের খালে পরীক্ষামূলকভাবে বিটিআই (ইধপরষষঁং ঃযঁৎরহমরবহংরং রংৎধবষবহংরং) লার্ভিসাইড প্রয়োগ করা হয়েছে। গত বুধবার দুপুরে এই কার্যক্রম উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
এসময় মেয়র বলেন, মশা নিয়ন্ত্রণে আমরা বিভিন্ন ধরনের কীটনাশকের কার্যকারিতা বিশ্লেষণ করছি। বিটিআই লার্ভিসাইড একটি পরীক্ষিত পদ্ধতি, যা যুক্তরাষ্ট্রসহ উন্নত দেশগুলোতে মশার লার্ভা ধ্বংসের জন্য ব্যবহার করা হয়। ঢাকায় এই প্রযুক্তি প্রয়োগের পর এবার আমরা চট্টগ্রামে এটি পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করছি। মেয়র বলেন, এই কীটনাশকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো এটি শুধুমাত্র মশার লার্ভা ধ্বংস করে, অন্যান্য জলজ প্রাণী যেমন ব্যাঙাচি, মাছ বা অন্যান্য জীবের কোনো ক্ষতি করে না। ফলে এটি পরিবেশবান্ধব। তিনি আরও বলেন, বিটিআই মূলত মশার লার্ভার অন্ত্রে বিষক্রিয়া ঘটিয়ে তাদের ধ্বংস করে। তাই এটি বেশ কার্যকর একটি পদ্ধতি। যেহেতু এটি জৈবিক উপায়ে কাজ করে, তাই রাসায়নিক কীটনাশকের তুলনায় এটি অনেক বেশি নিরাপদ ও দীর্ঘস্থায়ী সমাধান দিতে পারে। মশার উপদ্রব কমাতে চসিক বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক প্রয়োগের পাশাপাশি নতুন ও কার্যকর পদ্ধতির সন্ধান করছে জানিয়ে মেয়র বলেন, আমি যখন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করি, তখন থেকেই মশা নিয়ন্ত্রণকে অগ্রাধিকার দিয়েছি। শুরুতে আমরা কিছু দেশীয় কীটনাশক ব্যবহার করেছিলাম, যা আংশিক কার্যকর ছিল। কিন্তু মশার ওষুধের প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হওয়ায় আমাদের বারবার নতুন কৌশল নিতে হচ্ছে।
পরীক্ষামূলকভাবে বিটিআই লার্ভিসাইড প্রয়োগের কার্যকারিতা মূল্যায়নের পর এটি নগরজুড়ে প্রয়োগ করা হবে বলে জানিয়েছেন মেয়র। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা দেখবো, এটি মশার লার্ভা ধ্বংসে কতটা কার্যকর হচ্ছে। যদি ফলাফল সন্তোষজনক হয়, তাহলে পুরো নগরীতে এর ব্যবহার বাড়ানো হবে। চসিক আশা করছে, এই নতুন উদ্যোগের মাধ্যমে নগরীতে মশার প্রকোপ কমবে এবং ডেঙ্গু–চিকুনগুনিয়ার মতো রোগের ঝুঁকি হ্রাস পাবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা শরফুল ইসলাম মাহি, উপ–প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা প্রণব শর্মা ও কামরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।