চট্টগ্রামে দুদিন পর বৃষ্টির আভাস

তাপদাহে হাসপাতালে বাড়ছে ডায়রিয়া রোগী

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ২৮ এপ্রিল, ২০২৩ at ৫:১৬ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামে আবারও বয়ে যাচ্ছে তাপদাহ। দিনের তাপমাত্রা বাড়ার কারণে নাগরিক জীবনে নেমে এসেছে দুর্ভোগ। অন্যদিকে তাপদাহের সাথে যুক্ত হয়েছে লোডশেডিং। তাপমাত্রার বাড়ার সাথে সাথে নগরীর প্রায় বেশিরভাগ অঞ্চলে দিনে একাধিকবার লোডশেডিং হচ্ছে। একে তো প্রচুর জলীয় বাষ্পসহ উচ্চ তাপমাত্রা, তার উপর লোডশেডিং, সব মিলিয়ে নগরীর বাসিন্দাদের নরক যন্ত্রণাই যেন ভোগ করতে হচ্ছে। অপরদিকে তাপদাহের কারণে বাড়ছে ডায়রিয়াসহ নানা রোগের প্রকোপ। বিশেষ করে হাসপাতালগুলোতে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। গরমজনিত রোগ থেকে রক্ষা পেতে নিয়ম কানুন মানতে পরামর্শ দিচ্ছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। গতকাল নগরীর কয়েকটি পয়েন্টে দেখা গেছে, তাপদাহে ক্লান্ত মানুষ খুঁজছে ছায়া ও বিশ্রাম। আরোহী থাকা সত্ত্বেও রিকশা চালকরা যাত্রী তুলতে চাইছেন না। আবার গণপরিবহনে যাত্রী সংখ্যাও ছিল তুলনামূলক কম। এছাড়া ফুটপাতে শরবত ও পানীয়ের দোকানে দেখা যায় মানুষের ভীড়। প্রাণীকূলেও বেড়েছে পানির জন্য ছটফটানি।

চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা বিশ্বজিত চৌধুরী দৈনিক আজাদীকে বলেন, আজ (গতকাল) চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াম, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামীকালও (আজ) তাপমাত্রা একই রকম থাকতে পারে। একই সাথে আকাশ আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। আগামী দুইদিন পর থেকে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. আবু বকর সিদ্দিক দৈনিক আজাদীকে বলেন, গরমজনিত অসুস্থতা থেকে রক্ষা পেতে হলে বেশ কিছু নিয়ম কানুন মানতে হবে। তীব্র গরমে শরীর থেকে প্রচুর লবণ বের হয়ে যায়। তাই ওর‌্যাল স্যালাইন ও ডাব খেতে হবে। অনেকে বাইরের রোদ থেকে বাসায় গিয়ে ফ্রিজের পানি পান করে কিংবা ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করে। এটি কখনোই করা যাবে না। বাসায় পৌঁছে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে তারপর গোসল কিংবা পানি পান করতে হবে। না হলে মাথা ব্যথা, সর্দি ও জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। গরমের সাথে মানানসই কাপড় চোপড় পরতে হবে। বাইরে বের হওয়ার সময় অবশ্যই ছাতা নিয়ে বের হতে হবে। এসব নিয়ম কানুন মেনে চললে গরমে সুস্থ থাকা সম্ভব। বিশেষ করে বাইরের আখের রস কিংবা লেবুর শরবত টাইপের পানীয় পান করা যাবে না। এতে ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।

নগরীর কাজির দেউড়ি এলাকার দিনমজুর আবুল হোসেন বলেন, ঈদের সময় বৃষ্টি হওয়ায় গরম কিছুটা কম ছিল। এখন আবারও বাড়ছে। গরমে কিছুক্ষণ কাজ করলে ক্লান্ত লাগে। এখন আমরা গরীব মানুষ। কাজ না করে তো উপায় নেই।

এদিকে নগরীর বিভিন্ন জায়গায় দেখা গেছে ছায়া আছে এমন স্থানে রিকশা রেখে বিশ্রাম করছেন রিকশা চালকরা। তাদের একজন ২নং গেট এলাকার রিকশাচালক আবদুল হক। তিনি বলেন, প্রতিদিন সকাল ছয়টার সময় রাস্তায় নেমে দশটা পর্যন্ত রিকশা চালানো যায়। এরপর গরমে রাস্তায় আর থাকা যায় না। তাই প্রতিদিন দশটা পর্যন্ত রিকশা চালাই। আবার বিকাল পাঁচটার পর বাইরে আসি। যে পরিমাণ কাজ করতে পারি, তা দিয়ে সংসার চালানো খুব কঠিন হয়ে যায়। কারণ এখন আমাদের আয়ও কমে গেছে। এই গরমে টানা দুই ঘণ্টার বেশি একাধারে রিকশা চালানো সম্ভব নয়। একবার রোদের মধ্যে কোথাও গেলে বিশ্রাম নিতে হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসাতদিন পর ‘মুক্তিপণে’ ছাড়া পেল অপহৃত কলেজ ছাত্র
পরবর্তী নিবন্ধগরমে রেল লাইন বেঁকে বগি লাইনচ্যুত