চট্টগ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্তের ১৬.৩২ শতাংশ শিশু

জুলাই থেকে আক্রান্তের হার ঊর্ধ্বমুখী

জাহেদুল কবির | বুধবার , ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ at ৫:৫৮ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্তের হার বেড়ে চলেছে। গত আগস্ট ও চলতি সেপ্টেম্বর মাসের গতকাল পর্যন্ত মোট আক্রান্ত আগের সাত মাসের প্রায় কাছাকাছি। এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৬৪২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৮৭৫ জন, নারী ৪৯৯ জন এবং শিশু আক্রান্ত হয়েছে ২৬৮ জন। শিশুদের আক্রান্তের হার প্রায় ১৬.৩২ শতাংশ। এছাড়া মোট মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনের। অথচ জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের। জুলাই থেকে আক্রান্তের হার ঊর্ধ্বমুখী।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চট্টগ্রামে বর্তমানে কখনো মাঝারি ও কখনো থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া ভ্যাপসা গরমও রয়েছে। এমন আবহাওয়া ডেঙ্গুর বংশবিস্তারের জন্য বেশ উপযোগী। বৃষ্টিতে বিভিন্ন জায়গায় স্বচ্ছ পানি জমছে। বিশেষ করে ফুলের টব ও ডাবের খোসা, গাড়ির টায়ারসহ বিভিন্ন পরিত্যক্ত বস্তুতে পানি জমার কারণে ডেঙ্গুবাহী এডিস মশা প্রজননে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। এতে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীও বাড়ছে। তাই সবাইকে বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখাসহ কোথাও যাতে তিন দিনের বেশি পানি না জমে সেদিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। রাতে ছাড়াও দিনের বেলায়ও মশারি টানাতে হবে।

এদিকে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৩৪ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১২ জন, ফৌজদারহাট বিআইটিআইডি হাসপাতালে ৪ জন, ২৫০ শয্যার চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ২ জন, সিএমএইচ হাসপাতালে ২ জন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙে ২ জন এবং বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে আরো ১২ জন চিকিৎসাধীন রয়েছে। তবে গতকাল কেউ মারা যাননি।

চমেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের কয়েকজন চিকিৎসক জানান, ডেঙ্গু রোগীর মূল চিকিৎসা হচ্ছে ফ্লুইড ম্যানেজমেন্ট। অনেক রোগী এনএসওয়ান রিপোর্ট হওয়ার সাথে সাথে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে যাচ্ছেন। এর কোনো দরকার নেই। ডেঙ্গুর প্লাটিলেট কাউন্ট ১০ হাজারের নিচে নেমে গেলে তখন ইন্টারনাল ব্লিডিং শুরু হয়। তখন ক্রিটিক্যাল কেয়ার ম্যানেজমেন্টের প্রয়োজন পড়ে। আবার প্লাটিলেট কমা শুরু হয় জ্বর কমে যাওয়ার পরপর। তখন শারীরিক কিছু অসুবিধা দেখা দেয়। ওই সময় হাসপাতালে ভর্তি হতে পারে। সাধারণ মানুষের মধ্যে প্লাটিলেট নিয়ে আতঙ্ক লক্ষ্য করা যাচ্ছে, আসলে প্লাটিলেট যখন বাড়া শুরু হয় তখন দ্রুতই বাড়ে। কাজেই ডেঙ্গু জ্বর হলেই আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।

চট্টগ্রাম জেলার সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত বাড়ছে এটি ঠিক। তবে এখনো বাড়ার হার খুব বেশি বলা যাবে না। ডেঙ্গু মোকাবেলায় স্বাস্থ্য বিভাগের পাশাপাশি নাগরিকদের সচেতন হতে হবে। বাড়ির ফুলের টব কিংবা বাড়ির ছাদে যাতে পানি জমে না থাকে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।

উল্লেখ্য, গত বছর মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৩২৩ জন এবং মারা যান ৪৫ জন। এর আগে ২০২৩ সালে আক্রান্ত হয়েছিলেন ১৪ হাজার ৮৭ জন। এর মধ্যে মারা যান ১০৭ জন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধউদ্বোধনের আগেই ফাটল নবনির্মিত সেতুতে
পরবর্তী নিবন্ধবন্দর থানার মামলার আসামি সীতাকুণ্ডে গ্রেপ্তার