বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম কেন্দ্রের উপ–আঞ্চলিক পরিচালক ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ শরীফ মাহমুদ অপুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে একদল শিক্ষার্থী তাকে অবরুদ্ধ করে রাখলে ডবলমুরিং থানা পুলিশের একটি টিম গিয়ে তাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ তাকে দুনীতি দমন কমিশনের কাছে হস্তান্তর করবে।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে বাংলাদেশ বেতার ভবনে নিজ কার্যালয়ে মোহাম্মদ শরীফ মাহমুদ অপুকে অবরুদ্ধ করে রাখেন একদল শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের দাবি শরীফ মাহমুদ ফ্যাসিবাদের দোসর এবং গত বছরের ৪ আগস্ট অপুর স্বাক্ষরিত চিঠিতে কারফিউ জারি হয়েছিল দেশে। তাই তাকে আটক করতে হবে।
ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম কেন্দ্রের উপ–আঞ্চলিক পরিচালক মোহাম্মদ শরীফ মাহমুদ অপুকে আটকে রেখেছে জানতে পেরে আমরা পুলিশ পাঠিয়েছি। উনার ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। ওসি বলেন, যতটুকু জেনেছি, ওই সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকে একটি মামলা রয়েছে। আমরা দুদকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তাদের তদন্ত চলমান রাখা অবস্থায় আটক দেখাবে কিনা তারা জানাবে। আপাতত তাকে আমরা হেফাজতে নিয়ে আসছি। এরপর ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে আলাপ করে ব্যবস্থা নেব।
জানা গেছে, মো. শরীফ মাহমুদ অপু কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলার সদর ইউনিয়নের পূর্ণমতি গ্রামের ইঞ্জিনিয়ার জয়নাল আবেদিনের ছেলে। তার বাবা কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। শরীফ মাহমুদ অপু তেজগাঁও–হাতিরঝিল থেকে নির্বাচিত এমপি আসাদুজ্জামান খান কামাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালীন প্রায় দশ বছর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ছিলেন। চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি শরীফ মাহমুদ অপুর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, শরীফ মাহমুদ অপু ৫৮ লাখ ৯৯ হাজার ৯৯৭ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। দুদকের অনুসন্ধানে পাওয়া এ তথ্যে সংশ্লিষ্ট ধারায় তিনি শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
অভিযুক্ত মো. শরীফ মাহমুদ অপু সরকারি দায়িত্ব পালন করেছিলেন দাবি করে সাংবাদিকদের বলেন, আমি তো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর জনসংযোগ কর্মকর্তা ছিলাম না। আমি ছিলাম মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা। সেই হিসেবে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ আমি পালন করেছি। এখন যিনি মন্ত্রণালয়ে আছেন জনসংযোগ কর্মকর্তা তিনিও পালন করছেন তার দায়িত্ব। আমি না থাকলে তখন আরেকজন থাকতো। এটা কেউ না কেউ দায়িত্ব পালন করবেই।
সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ গতরাতে মোহাম্মদ শরীফ মাহমুদ অপুকে গ্রেপ্তারের ব্যাপারটি নিশ্চিত করে দৈনিক আজাদীকে বলেন, তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা রয়েছে। আমরা তদন্তকারী কর্মকর্তার সাথে কথা বলেছি। দুদক তাকে নিজেদের জিম্মায় নিয়ে যাবে বলেও পুলিশ কমিশনার জানান।