শীতের প্রকোপ শুরু হওয়ার পাশাপাশি গ্যাসের যোগান বাড়ায় চট্টগ্রামের গ্যাস সেক্টরে কিছুটা স্বস্তি বিরাজ করছে। চলতি মাসে এলএনজি আমদানির পরিমাণ বেড়েছে। অপরদিকে চট্টগ্রামের গ্যাস ব্যবহারকারী বৃহৎ ইউনিট সিইউএফএল বন্ধ থাকায় বেশ কিছু গ্যাস সাশ্রয় হচ্ছে।
সূত্র জানিয়েছে, চট্টগ্রামের গ্যাসের একটি বড় অংশ আমদানিকৃত এলএনজি নির্ভর। বিদেশ থেকে এলএনজি আমদানি কমে যাওয়ায় চট্টগ্রামে চাহিদার অর্ধেকের সামান্য বেশি গ্যাস দেয়া হচ্ছিল। বিদেশ থেকে গ্যাস না আসায় সংকট বেশ প্রকট হয়ে উঠে। আকালের মাঝে সিইউএফএল এবং কাফকো একই সাথে উৎপাদনে থাকায় এক তৃতীয়াংশেরও বেশি গ্যাস ব্যবহার করছিল তারা।
এতে করে চট্টগ্রামের শিল্প, বিদ্যুৎ উৎপাদন, বাণিজ্যিক এবং আবাসিক মিলে সবগুলো চাহিদা মেটাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছিল। চট্টগ্রামে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদার বিপরীতে ২৫০ থেকে ২৬০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস দেয়া হচ্ছিল। ফলে চারদিকে গ্যাসের হাহাকার তৈরি হয়। অনেক জায়গায় রান্নাঘরের চুলা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটে। বড় ধরনের দুর্ঘটনার শিকার হয়ে অনির্দিষ্টকালের সিইউএফএল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ৪০ মিলিয়ন ঘনফুটেরও বেশি গ্যাস সাশ্রয় হচ্ছে।
এই গ্যাস দেয়া হচ্ছে ন্যাশনাল গ্রিডে। এর বাইরে শীতের প্রকোপ আস্তে আস্তে শুরু হওয়ায় বিদ্যুতের উপর চাপ কমতে শুরু করেছে। এতে করে বিদ্যুৎ খাতে গ্যাস দেয়া সম্ভব না হলেও খুব বেশি প্রভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে না। বর্তমানে মাত্র ৩৪ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস দেয়া হচ্ছে শিকলবাহা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে। তবে সবচেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে চলতি মাসে গ্যাস আমদানি বেড়েছে। বিদেশ থেকে এ মাসে পাঁচ কার্গো এলএনজি আসছে। ফলে গ্যাসের যোগান কিছুটা স্বাভাবিক থাকবে। তবে আগামী মাসে এলএনজি আমদানি আবারো চার কার্গোতে নেমে আসতে পারে। তবে শীতের কারণে বিদ্যুতের চাহিদা কম থাকায় এর প্রভাবও খুব বেশি পরিলক্ষিত হবে না।
এলএনজি আমদানি বাড়ার পাশাপাশি সিইউএফএল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চট্টগ্রামে ২৭০ থেকে ২৮০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস দেয়া হচ্ছে। এতে চট্টগ্রামের গ্যাস সেক্টরে কিছুটা স্বস্তি দেখা দিয়েছে বলেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মন্তব্য করেছেন। এরমধ্যে কাফকো এবং সিইউএফএল ব্যবহার করছে ৮২ মিলিয়ন ঘনফুট। পিডিবি বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য নেয় ৩৫ মিলিয়ন ঘনফুট। সার এবং বিদ্যুতে ১১৭ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস ব্যবহার করার পর যা বাকি থাকে তা দিয়ে মানুষের চাহিদা মেটানো অত্যন্ত কঠিন বলে উল্লেখ করে সামনের দিনগুলোতে সংকট আরো বাড়তে পারে বলেও নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা মন্তব্য করেছেন।