বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ২০১৯ সালে আমরা যখন চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করি তখন জনগণের কাছে আমাদের প্রতিশ্রুতি ছিলো জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা স্বপ্নের বাস্তবায়ন। আর এ লক্ষ্যে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশে রূপান্তর করা। উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোর মানুষের জন্য বিশ্বসেরা ও গুণগতমানের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ও উন্নত সেবা প্রদানে সক্ষম বৈশ্বিক হাসপাতাল চেইন এভারকেয়ার হাসপাতাল চট্টগ্রামের কার্যক্রমের উদ্বোধন আমাদের লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে মাইলফলক হিসেবে কাজ করছে।
গতকাল সোমবার দুপুরে অনন্যা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত এভারকেয়ার হাসপাতাল, চট্টগ্রামের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। হাসপাতালের অডিটরিয়ামে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী কার্যক্রম পরিচালনা করেন টিপিজি গ্রোথের কো-ম্যানেজিং পার্টনার ও এভারকেয়ার গ্রুপের বোর্ড অব ডিরেক্টরসের চেয়ারম্যান ম্যাথু হোবার্ট, এভারকেয়ার হাসপাতাল বাংলাদেশের চেয়ারম্যান বব কুন্দানমাল এবং এভারকেয়ার গ্রুপের গ্রুপ সিইও ম্যাসিমিলিয়ানো কোলেলা। অতিথি ছিলেন-সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, সিডিএ চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ প্রমুখ। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন,কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারির সময় স্বাস্থ্যসেবা খাতে এক অভূতপূর্ব সঙ্কটের তৈরি হয়। বিশ্বজুড়ে আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমরা সাফল্যের সাথে সে সময়ের প্রতিকূল পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটাতে সক্ষম হই। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতে বিনিয়োগে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে এভারকেয়ার গ্রুপ। এভাবেই তারা এ দেশের প্রতিটি মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে বলে আমি মনে করি। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এ হাসপাতালটির উদ্বোধন বন্দরনগরী চট্টগ্রামসহ চট্টগ্রাম বিভাগ ও এর আশেপাশের এলাকার মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করবে।
এভারকেয়ার গ্রুপের বোর্ড অব ডিরেক্টরসের চেয়ারম্যান ও টিপিজি গ্রোথের কো-ম্যানেজিং পার্টনার ম্যাথু হোবার্ট দ্য রাইস ফান্ডের জন্য স্বাস্থ্য সেবাখাতে বিনিয়োগে নেতৃত্ব প্রদান করেন। অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, উদীয়মান বাজারে রূপান্তরে লক্ষ্যে যে বিনিয়োগ করা হয় তা কীভাবে উচ্চ মানসম্পন্ন সেবা প্রদান করতে পারে এবং সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখতে পারে তার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে এভারকেয়ার হাসপাতাল চট্টগ্রাম। ২০২১ সালের এপ্রিল মাস থেকে চালু হওয়ার পর, হাসপাতালটি ইতোমধ্যে এ অঞ্চলে মানুষের জন্য স্কোলিওসিস কারেকশন সার্জারি ও চট্টগ্রামের প্রথম কমিপ্রহেনসিভ পেডিয়াট্রিক কার্ডিওলোজি সেবাসহ নতুন এবং জটিল রোগের চিকিৎসা সেবা নিয়ে এসেছে।
এভারকেয়ার গ্রুপের গ্রুপ সিইও ম্যাসিমিলিয়ানো কোলেলা বলেন, দেশের বাইরে চিকিৎসা সেবা নেয়ার ক্ষেত্রে যেসব প্রতিকূলতা তৈরি হয়, নতুন চালু হওয়া এভারকেয়ার হাসপাতালের মানসম্পন্ন সেবার মাধ্যমে তা কমে আসবে বলে আমি মনে করি। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতের জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদী পথরেখা তৈরি করাই আমাদের লক্ষ্য, একইসঙ্গে স্থানীয় প্রতিভা বিকাশে দেশব্যাপী চিকিৎসা সেবা খাতের অগ্রগতিতে সহায়তা করাও আমাদের লক্ষ্য, যাতে করে কমিউনিটির মানুষের স্বাস্থ্যসেবার চাহিদাপূরণে তারা স্বাস্থ্যসেবা সংক্রান্ত দক্ষতা অর্জন করতে পারেন।
এভারকেয়ার হাসপাতাল বাংলাদেশর চেয়ারম্যান বব কুন্দানমাল বলেন, এভারকেয়ার হাসপাতাল চট্টগ্রাম একটি মাল্টি-স্পেশালিটি হাসপাতাল, যা সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও বিশ্বমানের মেডিকেল প্রফেশনাল দ্বারা পরিচালিত। আমাদের প্রত্যাশা এ হাসপাতাল চট্টগ্রামে ইতিবাচকভাবে সামাজিক পরিবর্তন ত্বরান্বিত করবে এবং ভবিষ্যতে স্বাস্থ্য সেবাদানের ক্ষেত্রে নতুন মানদণ্ড তৈরি করবে। চট্টগ্রামের প্রথম হাসপাতাল হিসেবে এটি মেডিকেল, সার্জিক্যাল ও রেডিয়েশনসহ ক্যান্সার চিকিৎসার সম্পূর্ণ ও সর্বাধুনিক সেবা নিশ্চিত করবে।
চট্টগ্রাম অঞ্চলে স্বাস্থ্যসেবার চাহিদা পূরণে ৪৭০ শয্যাবিশিষ্ট এভারকেয়ার হাসপাতাল চট্টগ্রামে রয়েছে সর্বাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন ২৪/৭ জরুরি বিভাগ, ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ), ২৭টি বিশেষ ও উপ-বিশেষ বিভাগ।
২০২১ সালের এপ্রিল মাস থেকে সেবাদান চালু ও কার্যক্রম শুরু করলেও বৈশ্বিক মহামারির কারণে হাসপাতালটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন বিলম্বিত হয়।