চট্টগ্রামে এবার কোরবানির ঈদে পশুর চাহিদা প্রায় ৯ লাখ

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ১০ মে, ২০২৫ at ৬:১২ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামে এবার কোরবানির ঈদে পশুর চাহিদা ধরা হয়েছে প্রায় ৯ লাখ। গত বছর চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগরে কোরবানি দেয়া হয়েছিল ৮ লাখ ১৮ হাজার ৪৬৮টি পশু। এবার মজুত আছে ৮ লাখ ৬০ হাজার ৮৮২টি পশু।

পশুর চাহিদা বেশি হলেও বাজারে এর খুব বেশি প্রভাব পড়বে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ অবস্থায় চাহিদা মেটাতে অন্য জেলাগুলোর ওপর নির্ভর করতে হবে। তবে ঘাটতি থাকা গবাদিপশু আশপাশের জেলা অথবা উত্তরাঞ্চলের খামারি কিংবা মৌসুমি ব্যবসায়ীরা আনলে তাতে সংকট দূর হবে বলে জানালেন চট্টগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আলমগীর।

চট্টগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার দেয়া তথ্য মতে এবার চট্টগ্রামে কোরবানিতে পশুর চাহিদা আছে ৮ লাখ ৯৬ হাজার ২৬৯টি। এর মধ্যে মজুত আছে ৮ লাখ ৬০ হাজার ৮৮২টি। পশুগুলোর মধ্যে গরুর মজুত আছে ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৮১৩টি। গরুর মধ্যে ৩ লাখ ৬৫ হাজার ২৯টি ষাঁড়, ১ লাখ ২১ হাজার ৬৭০টি বলদ, ৪৯ হাজার ১১৪টি গাভি এবং মহিষ ৬৪ হাজার ১৬৩টি, ছাগল ২ লাখ ৫ হাজার ১৭৪টি, ভেড়া ৫৫ হাজার ৬৯৭টি এবং অন্যান্য পশু আছে ৩৫টি। এবার কোরবানির ঈদে চট্টগ্রামে সবচেয়ে বেশি পশুর চাহিদা রয়েছে সন্দ্বীপ উপজেলায়; প্রায় ৮৫ হাজার ২৫০ টি। গত বছরও সন্দ্বীপ উপজেলায় চট্টগ্রামের সবচেয়ে বেশি কোরবানি হয়েছিল। গত বছর সন্দ্বীপে কোরবানি হয়েছে ৭৬ হাজার ৬৩৮টি। গত বছর কোরবানিতে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল মীরসরাই। এখানে ৫৮ হাজার ৩৬৪টি পশু কোরবানি হয়েছে। এছাড়া ৫৭ হাজার ৮১৩টি পশু কোরবানি দিয়ে গত বছর তৃতীয় অবস্থানে ছিল পটিয়া উপজেলা।

উপজেলায় কোরবানি পশুর চাহিদা : এবারের কোরবানিতে সবচেয়ে কম পশুর চাহিদা রয়েছে বোয়ালখালীতে; এই উপজেলায় এবার ২৯ হাজার ৭৪২টি পশুর চাহিদা রয়েছে। অন্যান্য এলাকার মধ্যে এবার সাতকানিয়ায় কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ৪৫ হাজার ৩৭১টি, চন্দনাইশে কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ৪৭ হাজার ৪টি, আনোয়ারায় ৬৩ হাজার ৪২৮টি, পটিয়ায় ৭০ হাজার ১৮০টি, কর্ণফুলীতে ৩৩ হাজার ৫৩৩টি, মীরসরাইয়ে ৫৮ হাজার ৭৮০টি, সীতাকুণ্ডে ৫৬ হাজার ৮৫০টি, হাটহাজারীতে ৪৪ হাজার ৮৯০ টি, রাঙ্গুনিয়ায় ৫০হাজার, ফটিকছড়িতে ৬৯ হাজার ৪১৯ টি, লোহাগাড়ায় ৩৮ হাজার ৫৯টি, রাউজানে ৩৪ হাজার ৩০২ টি, বাঁশখালীতে ৫৯ হাজার ৪০৪টি, ডবলমুরিং এলাকায় ৩৭ হাজার ৫০০টি, কোতোয়ালীতে ৩০ হাজার ৬৯৮ টি এবং পাঁচলাইশে কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ৪১ হাজার ৫৫৯টি।

চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার সমবায় সমিতির সাবেক সভাপতি মো. মুসলিম উদ্দিন আজাদীকে বলেন, কোরবানির ঈদকে ঘিরে কাঁচা চামড়া সংগ্রহের জন্য আমাদের (আড়তদারদের) প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। আমরা গুদাম রেডি করছি, লবণ সংগ্রহ করছি। চামড়া কেনার জন্য তো অনেক টাকার দরকার। আমরা ব্যাংক থেকে কোনো ঋণ পাই না। আমরা অনেক বছর ধরে সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছি। তাই আত্মীয়স্বজন বন্ধুবান্ধবদের কাছ থেকে টাকা ধারদেনা করে কোরবানির পশুর চামড়া কিনতে হয় প্রতিবছর। এবারও আমাদের গতবারের মত প্রস্তুতি আছে চামড়া কেনার। আমাদের সমিতির ১১২ জন সদস্যের মধ্যে অনেকেই এখন লোকসানের মুখে পড়ে এই ব্যবসা ছেড়ে অন্য ব্যবসায় চলে গেছেন। আবার সমিতির বাইরের অনেকেই কোরবানির চামড়া কিনেন। তবে প্রাণিসম্পদ বিভাগের লোকজন বলেন কোরবানি বাড়বে; উনারা প্রতি বছর বলেন কোরবানি বাড়বে। কেমনে বাড়বে সেটা বুঝতেছি না। তবে কোরবানি শেষে আমরাসেই পরিমাণ চামড়া খুঁজে পাই না।

গত বছরের তুলনায় এবার কোরবানিদাতা বেড়েছে ৬৭ হাজার ২৯৭ জন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যার তদন্ত রিপোর্ট দাখিল সোমবার : চিফ প্রসিকিউটর
পরবর্তী নিবন্ধজম্মু-কাশ্মীরে বিস্ফোরণ গোলাগুলি দিল্লির ১৩৮টি ফ্লাইট বাতিল