অনেকটাই খর্ব শক্তির দল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তাই বাংলাদেশ দল ফেভারিট সেটা সিরিজ শুরুর আগেই জানা হয়ে গিয়েছিল। তারপরও ক্রিকেট যেহেতু গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা তাই সাবধানি ছিল বাংলাদেশ। তবে করোনাকালে দারুণ এক সিরিজ আয়োজনের পাশাপাশি কাঙ্ক্ষিতভাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজও জিতে নিল বাংলাদেশ। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে এটি টানা তৃতীয় সিরিজ জয়। আগের দুটি সিরিজ অবশ্য পূর্ণ শক্তির ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ । যার একটি দেশে আর অন্যটি ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে। এবার সিরিজ জয়ের হ্যাটট্রিক পূরণ করল টাইগাররা। গতকাল ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ক্যারিবীয়দের ৭ উইকেটে হারিয়ে সিরিজ নিশ্চিত করেছে তামিম ইকবালের দল। এখন হোয়াইট ওয়াশের অপেক্ষা। এই ম্যাচেও বাংলাদেশের বোলারদের সামনে দাঁড়াতে পারেনি ক্যারিবীয়রা। যদিও এই ম্যাচে খানিকটা উন্নতি করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আগের ১২২ থেকে এই ম্যাচে ১৪৮ রান করেছে ক্যারিবীয়রা। তবে বাংলাদেশের সহজ জয় আটকাতে পারেনি তারা। মিরাজ, সাকিব এবং মোস্তাফিজের বোলিংয়ের পর তামিম-সাকিবের ব্যাটিং ১০০ বল আগেই লক্ষ্যে পৌঁছে দেয় গন্তব্যে। আগের ম্যাচে বল হাতে আগুন ঝরানো সাকিব এই ম্যাচে ব্যাট হাতে ছিলেন দুর্দান্ত। মূলত তারই অলরাউন্ড নৈপূন্যে টাইগাররা পেল আরো একটি জয়। এখন চট্টগ্রামে প্রতিপক্ষকে আরেকটি হোয়াইট ওয়াশের স্বাদ দেওয়ার হাতছানি টাইগারদের সামনে। লাকি ভেন্যু চট্টগ্রামেই পুরণ হতে পারে সে স্বপ্ন।
টস জিতে ব্যাট করতে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজ শুরুতেই ধাক্কা খায়। মোস্তাফিজের বলে ফিরেন সুনিল এমব্রিস। এরপর শুরু হয় মিরাজের ঘুর্ণি। এই দুজনের সাথে সাকিব যোগ দিলে আবারো দিশেহারা হয়ে পড়ে ক্যারিবীয়রা। ফলে তাসের ঘরের মত ভেঙ্গে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং। একপর্যায়ে ৪১ রানে ৫ উইকেট হারানো ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য তখন একশ রানই দূরের পথ মনে হচ্ছিল। তবে শেষ দিকে খানিকটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন রবম্যান পাওয়েল। মূলত তার ৪১ রানেই আগের ম্যাচের পুঁজিকে টপকে ১৪৮ রানে থামে ক্যারিবীয়রা। শেষদিকে আলজারি জোসেফের ১৭ এবং আখিল হোসেনের ১২ রান না হলে তাও হতো না। কারণ উপরের দিকে ওটলি ২৪ এবং বনার করেছেন ২০ রান।
বাংলাদেশের পক্ষে সফল বোলার মেহেদী হাসান মিরাজ। ২৫ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন এই পেসার। এছাড়া ২টি করে উইকেট নিয়েছেন সাকিব এবং মোস্তাফিজ। আগের ম্যাচে অভিষেকে ৩ উইকেট নিয়ে চমক দেখানো হাসান মাহমুদ নিয়েছেন একটি উইকেট।
১৪৯ রানের লক্ষ্য। আগের ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিতে না পারা অধিনায়ক তামিম এবার বেশ সাবধানী। যদিও এ ম্যাচেও ভালো শুরুটা বড় করতে পারেননি লিটন দাস। আকিল হোসেনের বল জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হয়ে ২২ রানে ফিরেন এই ওপেনার। শান্তকে নিয়ে তামিম এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও তেমন সহযোগিতা পেলেন না তার কাছ থেকে। শান্ত ফিরেন ১৭ রানে। তবে দুই বন্ধু তামিম এবং সাকিব দলের রানকে শতরান পার করে দিলেন। দায়িত্বশীল ব্যাটিং করে ৭৫ বলে হাফ সেঞ্চুরি করে ফিরে যান তামিম। অধিনায়ক হিসেবে প্রথম হাফ সেঞ্চুরি পাওয়া তামিমের ৭৬ বলের ইনিংসে ছিল তিনটি চার ও একটি ছক্কা। এরপর মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে বাকি কাজটা সহজেই সারেন সাকিব। প্রথম ম্যাচে শেষ করে আসতে না পারলেও এ ম্যাচে তার ব্যাটে দেখা গেল ছন্দে ফেরার আভাস। চারটি চারের সাহায্যে ৫০ বলে ৪৩ রান করে ফিরেন সাকিব। মুশফিক ২৫ বলে করেন ৯ রান। তবে সবাইকে ছাড়িয়ে ম্যাচ সেরা হয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ।