চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কর্মসূচি জোরদার

অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোকে আরো সক্রিয় করার উদ্যোগ নজর থাকবে বিএনপির রোডমার্চেও

শুকলাল দাশ | মঙ্গলবার , ৩ অক্টোবর, ২০২৩ at ৪:১১ পূর্বাহ্ণ

বিএনপির আগামী ৫ অক্টোবর অনুষ্ঠেয় কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত রোডমার্চ কর্মসূচির উপর কড়া নজর রাখছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গ সংগঠনগুলো। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নানান কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে নিয়মিত সক্রিয় থাকার ইঙ্গিত দিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতারা। বিএনপিজামায়াতের নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিসহ সরকার বিরোধী আন্দোলনের নামে যে কোনো ধরনের নৈরাজ্য ঠেকাতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের রাজপথে সক্রিয় থাকার জন্য কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নির্বাচনী প্রচারণায় মাঠে নামারও জন্য কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ এবং উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মাঠ পর্যায়ে সাংগঠনিক কর্মসূচি জোরদার করেছে। অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোকে আরো সক্রিয় করে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে।

সরকার পতনের এক দফা দাবিতে বিএনপির ১৫দিনের কর্মসূচি শেষ হচ্ছে আগামী ৫ অক্টোবর কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম অভিমুখে রোডমার্চ কর্মসূচির মধ্যদিয়ে। এরপর চট্টগ্রাম থেকে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবে বলে জানা গেছে। এই ব্যাপারে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম বলেন, আওয়ামী লীগ অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতার ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে চায়। বিএনপি নির্বাচন চায় না। বিএনপি নির্বাচন বানচাল করে অসাংবিধানিক সরকার প্রতিষ্ঠা করে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতায় যেতে চায়। এরই অংশ হিসেবে তারা তথাকথিত আন্দোলনের নামে দেশে সন্ত্রাস নৈরাজ্য ও অরাজকতা সৃষ্টি করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাদের এই হীন ষড়যন্ত্র জনগণকে সাথে নিয়ে মোকাবেলা করা হবে। এক্ষেত্রে আগুন সন্ত্রাসী খুনী লুটেরাদের কোনো ছাড় দেয়া হবেনা। তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে মিথ্যা তথ্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে, তাদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ রাজপথে থাকবে। এদেশে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তিকে আর মাথা তুলতে দেওয়া হবে না।

গত ১ অক্টোবর মহানগর আওয়ামীলীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় সন্ত্রাস ও নৈারজ্য ঠেকাতে আওয়ামী লীগের প্রতিটি ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের নির্বাচন পর্যন্ত রাজপথে থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সভায় নির্বাচন বানচালের জন্য মাঠে নামলে ধূলায় মিশিয়ে দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ আ জ ম নাছির উদ্দীন। তিনি বলেছেন, বিএনপিসহ স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি মরণ কামড় দেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। এতে স্পষ্টত প্রতীয়মান তারা আরেকটি অরাজকতা সৃষ্টির মাধ্যমে নির্বাচন বানচাল করার মাধ্যমে অসাংবিধানিক পন্থায় পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতা দখলের নীল নকশা বাস্তবায়নের অপচেষ্টা চলছে।

মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী বলেছেন, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের তফসীল ঘোষণা অনুযায়ী যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনকে যারা বানচাল করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ রাজপথেই থাকবে। অত্যন্ত সতর্কতার সাথে আমাদেরকে রাজপথে অবস্থান করতে হবে। যাতে এদেশে আর কোনো স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে।

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি মাহবুবুল হক সুমন বলেন, বিএনপি শান্তিপূর্ণভাবে তাদের যেকোনো কর্মসূচি পালন করুকতাতে আমাদের কোন আপত্তি নেই। যদি রোডমার্চের নামে কোন ধরনের সহিংস ঘটানা ঘটানোর চেষ্টা করে তাহলে চট্টগ্রামের যুব সমাজ তাদেরকে দাঁত ভাঙা জবাব দেবে। আমাদের নেত্রী (আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) উন্নয়নশান্তি আর সমৃদ্ধির পথে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। বিএনপি এই উন্নয়নঅগ্রগতিকে ধ্বংস করতে চায়। আমরা যুব সমাজ আমাদের যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ এবং সাধারণ সম্পাদক মাঈনুল হোসেন খান নিখিল ভাইয়ের নির্দেশে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত রাজপথে সজাগ আছি।

বিএনপি আন্দোলনের নামে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করছে মন্তব্য করে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর আজাদীকে বলেন, বিএনপি ইতোমধ্যে যতগুলো কর্মসূচি পালন করেছে সবগুলোতে তারা নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করেছে। তাদের প্রতিটি কর্মসূচি পালনে প্রশাসন অনুমতি দিয়ে সহযোগিতা করেছেকিন্তু তারা পুলিশের উপর হামলা চালিয়েছে, ভাংচুর করেছে, জ্বালাওপোড়াও করেছে। তারা চায় দেশের জনগণের ভোটার অধিকার হরণ করতে। তারা কখনো বিক্ষোভ সমবেশ, কখনো বিক্ষোভ মিছিল, কখনো পদযাত্রা, কখনো রোডমার্চ কর্মসূচির নামে সহিংসতা চালিয়েছে। আগামী ৫ অক্টোবর বোডমার্চ কর্মসূচির নামে যদি কোনো ধরনের সহিংসতা চালানো চেষ্টা করে তাহলে চট্টগ্রামের ছাত্রসমাজ তার কঠোর জবাব দেবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহত্যার পর স্ত্রীর লাশ ড্রামে রেখে পালিয়ে বেড়ালো ৯ বছর
পরবর্তী নিবন্ধদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভূমিকম্প