সাতকানিয়া ও চন্দনাইশ সীমান্ত এলাকায় অবৈধ গ্যাস ক্রসফিলিং কারখানায় গ্যাস সিলিন্ডার বিষ্ফোরিত হয়ে সৃষ্ট অগ্নিকান্ডে কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। আহতদের চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আজ বুধবার ভোর ৬টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, চন্দনাইশের দক্ষিণ বৈলতলী ভুইয়া বাড়ি এলাকার মৃত কবির আহমদের ছেলে মাহাবুবুর রহমান নামে এক ব্যক্তি প্রায় ১ বছর পূর্ব থেকে সাতকানিয়ার চরতী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড দ্বীপ চরতী সর্বির চর নামক নির্জন এলাকায় অবৈধ গ্যাস ক্রসফিলিং কারখানা গড়ে তোলে।
ওখানে একটি বড় সেমিপাকা ঘরে গ্যাসের বড় বোতল থেকে ছোট বোতলে গ্যাস ক্রসফিলিং করে বাজারজাত করে আসছিল। আজ বুধবার ভোর ৬টার দিকে ওই কারখানায় হঠাৎ গ্যাস সিলিন্ডার বিষ্ফোরিত হয়ে পুরো কারখানায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয়রা জানায়, ভোরে বোমা বিষ্ফোরিত হওয়ার মতোই বিকট শব্দ হতে থাকে। এসময় তারা মনে করেছিল সেনাবাহিনীর ট্রেনিং চলছিল। পরে গ্যাস কারখানায় অগ্নিকান্ডের খবর শুনতে পান। ঘটনার সময় কারখানায় থাকা মাহাবুবুল আলম, তার দুই বাগিনা, এক গাড়ীর চালক ও ৫ জন কর্মচারীসহ কমপক্ষে ১০ জন অগ্নিদগ্ধ গুরুতর আহত হয়।
অগ্নিদগ্ধ সবাইকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। দগ্ধ ব্যক্তিরা হলেন মাহবুবুর রহমান (৪৭), মোহাম্মদ ইউনুস (২৬), মোহাম্মদ আকিব (১৭), মো. হারুন (২৯), মোহাম্মদ ইদ্রিস (৩০), মোহাম্মদ কফিল (২২), মোহাম্মদ রিয়াজ (১৭), মো. সৌরভ রহমান (২৫), মোহাম্মদ লিটন (২৮) ও মোহাম্মদ ছালেহ (৩৩)।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আলাউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, চমেকে ভর্তিকৃতদের মধ্যে ৩/৪ জনের অবস্থা গুরুতর। তিনি বলেন, আহত শ্রমিকদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এক শ্রমিকের জ্বলন্ত সিগারেট থেকে আগুনের সূত্রপাত। এ সময় গুদামে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন জানান, গত কয়েক মাস আগে সেনাবাহিনীর অভিযানে ওই কারখানাটি সিলগালা করা হয়। পরবর্তীতে তারা আবারো চালু করে। ওই কারখানায় প্রতিদিন ঝুকিঁপূর্ণভাবে একাধিক বড় বোতল থেকে ছোট বোতলে গ্যাস ক্রসফিলিং করা হয়।
চন্দনাইশ ফায়ার স্টেশনের অপারেশন অফিসার সাবের আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, ভোর ৬টা ৫০ মিনিটের দিকে গুদামটিতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করা হয়। সকাল নয়টার দিকে পুরোপুরি আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। আগুনে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তদন্তের পর বলা যাবে।
স্থানীয় চৌকিদার মো. ফরিদ জানান, ফজরের নামাজ পড়ে বাড়িতে ঘুমাতে যাওয়ার পর বেশ কয়েকটা বিষ্ফোরনের শব্দ শুনি। বিষ্ফোরনের শব্দ বাড়তে থাকায় দ্রুত ঘর থেকে বের হয়ে শুনতে পায় মাহাবুবুর রহমানের গ্যাস কারখানায় আগুন ধরেছে। ওই কারখানায় তিন শতাধিক গ্যাসের বড় ও ছোট সিলিন্ডার ছিল। অগ্নিকান্ড সংঘটিত হওয়া কারখানার আশেপাশে বসত ঘর ও অন্যান্য স্থাপনা থাকলে ক্ষয়ক্ষতি আরো বাড়তো।