টিকা নিতে আগ্রহী দেশের ৮৪ শতাংশ মানুষ। এর মধ্যে ৩২ শতাংশ এখন নিতে আগ্রহী, বাকি ৫২ শতাংশ নিতে চায় পরে। এছাড়া চট্টগ্রামের ৮৩ শতাংশ মানুষ টিকা নিতে আগ্রহী। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে টিকাদান কর্মসূচি নিয়ে জরিপ পরিচালনা করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউট। ওই জরিপ থেকে উক্ত তথ্য জানা গেছে। জরিপে সরকারকে তিনটি পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। খবর বাংলানিউজের।
গতকাল বুধবার জরিপ দলের প্রধান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সৈয়দ আবদুল হামিদ এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, আমরা সরকারকে তিনটি পরামর্শ দিয়েছি। প্রথমত, জনগণকে সম্পৃক্ত করে প্রচারণা চালাতে হবে। সেক্ষেত্রে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে প্রচারণা চালালে তা কার্যকর হবে।
শুধুমাত্র রেডিও, টেলিভিশনের মাধ্যমে প্রচারণা হলে হবে না, জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে। এক্ষেত্রে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার বিষয়ে স্বচ্ছতা ভিত্তিতে জনগণকে তথ্য দিতে হবে। টিকার নরমাল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। তবে নেওয়ার মারাত্মক হলে তা সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানাতে হবে।
দ্বিতীয়ত, সরকারকে নজরদারি বাড়াতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে। তৃতীয়ত, আমাদের যারা নীতিনির্ধারক, তারকা তাদের আগে টিকা নিতে হবে। টিকা নিয়ে বলতে হবে টিকা নিয়ে তিনি নিরাপদে আছেন।
ঢাবির এ অধ্যাপক বলেন, সরকার আজ (গতকাল) থেকে ভ্যাকসিন কর্মসূচি শুরু করেছে। এটি বহুল প্রত্যাশিত। আমরা স্বাগত জানাই। অন্যান্য দেশের তুলনায় আমরা যে পিছিয়ে নেই এটা তার প্রমাণ। তবে জনগণের মধ্যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে শঙ্কা আছে। আমরা টিকা নিতে জনগণের মতামত তুলে ধরতে জরিপ পরিচালনা করি, যাতে সরকারের পলিসি নিতে সুবিধা হয়। আপনারা টিকা কেন নিতে চায়, আবার কেন নিতে চায় না, কোভিড সম্পর্কে তাদের ধারণা, পুরুষ ও নারীদের তুলনামূলক মতামতসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করি। জায়গা নির্ধারণ করি বহু লোক সমাগম হয় এমন এলাকা। যেমন ঢাকার ক্ষেত্রে কমলাপুর রেলস্টেশন, সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল, যেখানে সব ধরনের লোকদের পাওয়া যায়। ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন ছাড়াও আট বিভাগের আট জেলার ১৬ উপজেলার লোকদের মতামত নেওয়া হয়।
তিনি বলেন, আমরা দেখি, অনেকে টিকার মান নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। আবার বলেছেন অন্যরা নিলে আমরা নেব। এজন্য সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে। তবে সরকার যখন টিকাদান শুরু করবে এই ৩২ শতাংশ ১০ শতাংশেও আসতে পারে, আবার বাড়তেও পারে। তবে নারীরা টিকা নিতে বেশি আগ্রহ দেখিয়েছেন। ৮৭ শতাংশ নারী টিকা নিতে চান। অন্যদিকে ৮২ শতাংশ পুরুষ আগ্রহ দেখান। বিভাগভিত্তিক হিসাবে টিকা নেওয়ার আগ্রহের হার সবচেয়ে কম ঢাকায়। ঢাকা বিভাগে (সিটি কর্পোরেশন বাদে) টিকা নিতে আগ্রহী ৬৩ শতাংশ। ঢাকা শহরে হারটি ৭৩ শতাংশ। এছাড়া জরিপে আসা সিলেটের ৭৮, চট্টগ্রামের ৮৩, খুলনার ৯০, রাজশাহীর ৯১, বরিশালের ৯২, ময়মনসিংহের ৯৫ ও রংপুরের ১০০ শতাংশ মানুষ টিকা নিতে আগ্রহী।