মশক নিধন ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম, করোনা মোকাবেলা এবং উন্নয়ন সহায়তা খাতে দেশের পৌরসভাগুলোর জন্য চলতি অর্থ বছরের বরাদ্দকৃত অর্থের দ্বিতীয় কিস্তি ছাড় করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। ছাড়কৃত অর্থের মধ্যে চট্টগ্রামের ১৫ পৌরসভা পেয়েছে দুই কোটি ৮১ লাখ ৯৫ হাজার টাকা।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে চট্টগ্রামের পৌরসভাগুলোকে তিন শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৮ পৌরসভা ‘ক’, ৫ পৌরসভা ‘খ’ এবং দুইটি পৌরসভা ‘গ’ শ্রেণিভুক্ত। ‘ক’ শ্রেণির পৌরসভাগুলো হচ্ছে- পটিয়া, বারইয়ারহাট, সীতাকুণ্ডু, সাতকানিয়া, বাঁশখালী, চন্দনাইশ, হাটহাজারী, রাউজান। ‘খ’ শ্রেণির পৌরসভাগুলো হচ্ছে- মীরসরাই, রাঙ্গুনিয়া, সন্দ্বীপ, ফটিকছড়ি, বোয়ালখালী। ‘গ’ শ্রেণির পৌরসভা দুটি হচ্ছে নাজিরহাট ও দোহাজারী।
মশক নিধন : ডেঙ্গু মশক নিধন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও প্রচার উপ-খাতে দেশের পৌরসভাগুলোর জন্য ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের উন্নয়ন বাজেটে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ আছে। এরমধ্যে ২৫ শতাংশ র্অথ সংরক্ষিত রেখে দ্বিতীয় কিস্তি বাবদ ৩২৮ টি পৌরসভার অনুকূলে এক কোটি ৮৭ লাখ ৩৮ হাজার টাকা অবমুক্ত করা হয়। সম্প্রতি এ অর্থ ছাড় করা হয়।
ছাড়কৃত অর্থের মধ্যে চট্টগ্রামের ১৫ পৌরসভা পেয়েছে আট লাখ আট হাজার টাকার। এর মধ্যে পটিয়া, বারইয়ারহাট, সীতাকুণ্ডু, সাতকানিয়া, বাঁশখালী, চন্দনাইশ, হাটহাজারী ও রাউজান পৌরসভা ৬০ হাজার টাকা করে চার লাখ ৮০ হাজার টাকা পেয়েছে। মীরসরাই, রাঙ্গুনিয়া, সন্দ্বীপ, ফটিকছড়ি ও বোয়ালখালী পৌরসভা ৫০ হাজার টাকা করে দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা পেয়েছে। নাজিরহাট ও দোহাজারী পৌরসভা ৩৯ হাজার টাকা করে ৭৮ হাজার টাকা পেয়েছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব ফারজান মান্নান জানান, পৌর এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, ডেঙ্গু মশক নিধন এবং এর বিস্তার রোধে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি ক্রয়, জনগণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে লিফলেট বিতরণ, মাইকিং, টিভি স্ক্রলে ও স্থানীয় ডিশ চ্যানেলে সচেতনতামূলক বিজ্ঞাপন প্রচার ব্যতীত অন্য কোনো কাজে মঞ্জুরিকৃত অর্থ ব্যয় করা যাবে না।
করোনা মোকাবেলা : করোনা মোকাবিলা উপ-খাতের দ্বিতীয় কিস্তি বাবদও চট্টগ্রামের পৌরসভাগুলো আট লাখ আট হাজার টাকা পেয়েছে। এ অর্থ দিয়ে পৌর এলাকার জনগণের মাঝে করোনা বিস্তার রোধকল্পে স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত সচেতনতা বৃদ্ধি ও সুরক্ষার নিমিত্ত মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সাবান, অক্সিজেন সিলিন্ডার, থার্মাল স্ক্যানার ক্রয় ও ওয়ার্ড পর্যায়ে স্থাপিত টিকা বুথ ব্যবস্থাপনা ব্যতীত অন্য কোনো কাজে ব্যয় করা যাবে না।
উন্নয়ন সহায়তা : বার্ষিক উন্নয়ন বাজেটে উন্নয়ন সহায়তা খাতে দেশের পৌরসভাগুলোর জন্য চলতি অর্থ বছরে বরাদ্দ আছে ৪০০ কোটি টাকা। যার ২৩৯ কোটি টাকা রক্ষিত আছে সাধারণ উপ-খাতে। তবে এর মধ্যেও ২৫ শতাংশ সংরক্ষিত রাখা হয়েছে। ফলে সাধারণ উপ-খাতের জন্য এবার বরাদ্দের পরিমাণ দাড়িয়েছে ১৭৯ কোটি ২৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে দ্বিতীয় কিস্তি বাবদ দেশের ৩২৮টি পৌরসভার অনুকূলে ৪৪ কোটি টাকা ৮১ লাখ ১০ হাজার ৫০০ টাকা ছাড় করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
ছাড়কৃত অর্থের মধ্যে এর মধ্যে চট্টগ্রামের ১৫ পৌরসভা পেয়েছে দুই কোটি ৬৫ লাখ টাকা ৭৯ হাজার টাকা। এর মধ্যে পটিয়া, বারইয়ারহাট, সীতাকুণ্ডু, সাতকানিয়া, বাঁশখালী, চন্দনাইশ, হাটহাজারী, রাউজান ১৪ লাখ টাকা করে পেয়েছে এক কোটি ১২ লাখ টাকা। মীরসরাই, রাঙ্গুনিয়া, সন্দ্বীপ, ফটিকছড়ি ও বোয়ালখালী পৌরসভা ১৩ লাখ টাকা করে ৬৫ লাখ টাকা পেয়েছে। এছাড়া নাজিরহাট ও দোহাজারী পৌরসভা ১২ লাখ ১৬ হাজার ৫০০ টাকা করে ২৪ লাখ ৩৩ হাজার টাকা পেয়েছে।
উল্লেখ্য, গত সেপ্টেম্বর মাসে ছাড়কৃত প্রথম কিস্তিতেও সমপরিমাণ বরাদ্দ পেয়েছিল চট্টগ্রামের পৌরসভাগুলো। যদিও ওই সময় দেশের পৌরসভাগুলোর জন্য ছাড়কৃত অর্থের পরিমাণ ছিল ৪১ কোটি টাকা ২৮ লাখ ৯৪ হাজার টাকা।
স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব ফারজানা মান্নান জানান, ছাড়কৃত অর্থ কোনো অবস্থাতেই পৌরসভার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ব্যতীত অন্য কোনো কাজে ব্যয় করা যাবে না। এমনকি বাংলাদেশ মিউনিসিপ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফান্ডের (বিএমডিএফ) ঋণের কিস্তিও এ অর্থ দিয়ে পরিশোধ করা যাবে না।