নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিল থেকে ক্যাডার কর্মকর্তাদের প্রত্যাহারের এক দফা দাবিতে চট্টগ্রামের সব সরকারি হাসপাতালে চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছে নার্সিং মিডওয়াইফারি সংস্কার পরিষদ। গতকাল সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এই কর্মবিরতি চলে। তবে জরুরি বিভাগ, ডায়ালাইসিস, জরুরি অস্ত্রোপচার, আইসিইউ, পিআইসিইউ, এনআইসিইউ এ কর্মসূচির বাইরে ছিল।
জানা গেছে, নার্সদের এই কর্মবিরতির কারণে হাসপাতালে আসা রোগীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। কারণ হাসপাতালে চিকিৎসকদের পরামর্শ ও নির্দেশনা অনুযায়ী রোগীদের ইনজেকশন দেওয়া, ওষুধ খাওয়ানো, শরীরের তাপমাত্রা মাপা, ক্ষতস্থানে ড্রেসিং করাসহ রোগী ব্যবস্থাপনা কাজগুলো মূলত নার্সরাই করে থাকেন। হাসপাতালের ওয়ার্ডে নার্স না থাকার কারণে অনেক রোগীর স্বজনকে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়। এদেরই একজন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি রোগীর স্বজন হামিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণে গত দুইদিন আগে আমার বাবাকে হাসপাতালে এনেছি। সকাল থেকে ওয়ার্ড থেকে নার্সরা আন্দোলনে চলে গেছে। রোগীদের বিপদের মুখে ফেলে ওনারা আছেন নিজেদের স্বার্থ আদায়ের আন্দোলনে।
অন্যদিকে চমেক হাসপাতালে শিশু স্বাস্থ্য ওয়ার্ডে নার্স না থাকায় ভর্তির পরেও শিশু আইমানের চিকিৎসা শুরু করা যায়নি। চিকিৎসক ব্যবস্থাপত্র লিখে দিলেও শিশুটিকে স্যালাইন দেয়া হয়েছে আন্দোলন শেষ হওয়ার পরে। শিশুটির মা সুলতানা রাজিয়া বলেন, হাসপাতালে আমরা এসেছি চিকিৎসা করাতে। কিন্তু এখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আমরা বিনা চিকিৎসায় বসে আছি। এটি আসলে চরম অমানবিকতা। জানতে চাইলে চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন আজাদীকে বলেন, নার্সদের আন্দোলনে জরুরি সেবা স্বাভাবিক ছিল। ওয়ার্ডগুলোতেও বড়সড় কোনো সমস্যা হয়নি।
উল্লেখ্য, নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, পরিচালক এবং কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ও রেজিস্ট্রার পদে যোগ্য ও অভিজ্ঞ নার্সদের পদায়নের দাবিতে গত ৯ সেপ্টেম্বর থেকে কর্মসূচি পালন করে আসছেন নার্সরা। ৩০ সেপ্টেম্বর এবং ১ অক্টোবর সারাদেশে ৩ ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করেন তারা। পরে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলে ১ অক্টোবর সন্ধ্যায় কর্মসূচি স্থগিত করা হয়। কিন্তু ৬ অক্টোবর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সাময়িকভাবে দুজন নার্সিং কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে পরিচালক পদে পূর্ণ দায়িত্ব না দিয়ে নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত দায়িত্বে পদায়ন করে। এ কারণে আবারও কর্মবিরতির ডাক দেয় নার্সিং ও মিডওয়াইফারি সংস্কার পরিষদ।