চট্টগ্রামের নবাগত পুলিশ সুপার রায়হান উদ্দিন খান বলেছেন, স্বাভাবিক পুলিশিং কার্যক্রম একেবারে ভেঙে পড়েছিল। আমরা সবকিছু স্বাভাবিক করে পুরোদমে কাজে ফিরতে চেষ্টা করছি। এর মধ্যে অনেক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সবকিছু স্বাভাবিক করতে আমরা জনগণ ও সাংবাদিকদের সহযোগিতা চাই। তিনি যেকোনো তথ্য ও পরামর্শ দিতে যে কেউ আমাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারবেন বলেও উল্লেখ করেন।
নবাগত পুলিশ সুপার গতকাল (বৃহস্পতিবার) বিকেলে নগরের ষোলশহর ২নম্বর গেটস্থ কার্যালয়ে চট্টগ্রামে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বক্তৃতাকালে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, মাঠ পর্যায়ে কিছু পরিবর্তন করা হয়েছে। সব রাতারাতি চেঞ্জ হবে এরকম নয়। আমরা ফিল্ড লেভেলে কিছু চেঞ্জ আনতে চাই। একদিনে সব সমস্যা সমাধান করা সম্ভব নয়। সেবাপ্রার্থীদের কুইক রেসপন্স করার কথা জানিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, ‘আমরা সাধারণ ডায়েরি করি, সেখানে হয়তো এক ঘণ্টা লাগে, আধঘণ্টা লাগে। কিন্তু আমরা চাই কুইক রেসপন্স করতে। কম সময়ের মধ্যে যেন আমরা সেবা প্রদান করতে পারি। আমরা কুইক রেসপন্স করতে পারি কিনা–এই বিষয়টি নিয়ে আমি একটু কাজ করতে চাই।’
থানায় সেবার মান বৃদ্ধি করতে, পুলিশের সার্ভিস দ্রুত কাজ করতে সহযোগিতা চাই। মামলার তদন্ত কোয়ালিটি নিশ্চিত করতে চাই। যাতে বিচারের ক্ষেত্রে রেজাল্ট পাওয়া যায়। মাঠ পর্যায়ে পুলিশের সার্ভিসের পরিবর্তনে কাজ করার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যাতে চট্টগ্রাম জেলার মানুষ অতিসহজে ও দ্রুত পুলিশি সেবা পায় আমরা সেই চেষ্টা করছি।
তিনি আরো বলেন, আমাদের দ্বারা যতটুকু সম্ভব আমরা শতভাগ দিতে চাই। সিএমপি যেভাবে দিচ্ছে আজকে থেকে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশও সেভাবে রেসপন্স করবে। লজিস্টিক সাপোর্টের কারণে কিছু সেবা দিতে দেরি হতে পারে। কিন্তু আমরা চেষ্টা করব। দেখা গেল থানার এখিতিয়ার নেই, এরকম অনেক বিষয় নিয়েও অনেকে আসে। অনেকে না বুঝেই আসে। আসবে স্বাভাবিক, হয়তো সে অতটা বুঝে না। সেটাও আমরা ভালোভাবে বলে দিচ্ছি, এটা ক্রিমিনাল ম্যাটার না।
পুলিশের ভুলগুলো গণমাধ্যমে আসা উচিত মন্তব্য করে গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি চাই ইতিবাচক সমালোচনা থাকুক। আমরা যেটি ভুল করছি সেটি অবশ্যই গণমাধ্যমে আসা উচিৎ। যত বেশি ইতিবাচক সমালোচনা থাকবে সেখান থেকে আমরাও শিখতে পারবো।
মামলার তদন্তের মানোন্নয়ন নিয়ে কাজ করবেন জানিয়ে সদ্য যোগদান করা এসপি বলেন, ‘ইনভেস্টিগেশনের কোয়ালিটি নিয়ে আমরা কাজ করতে চাই। আমরা চাই কত বেশি কোয়ালিটি ইনভেস্টিগেশন করা যায়। আর একটি বিষয় দেখতে হবে, ইনভেস্টিগেশন কি এভিডেন্স বেইজড হচ্ছে নাকি। এভিডেন্স বেইজড হলে সেটা ভালো রেজাল্ট আসবে।’
গণমাধ্যমকর্মীরা তথ্যের বিষয়ে জেলা পুলিশের কর্মকর্তাদের সহযোগিতা পান না এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন নতুন পুলিশ সুপার।
এক প্রশ্নের জবাবে চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আবু তৈয়ব মো. আরিফ হোসেন বলেন, চট্টগ্রাম জেলায় ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ৩৮৮টি অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে চট্টগ্রাম জেলায় ৩৩৩টি অস্ত্র জমা হয়েছে। বাকি অস্ত্রগুলো দেশের বিভিন্ন থানায় জমা হয়েছে কি–না সেটার তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। আশা করি আগামী কয়েকদিনের মধ্যে অস্ত্র ক’টি জমা হয়েছে, সেটা জানা যাবে।
এ সময় চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) এ এন এম ওয়াসিম ফিরোজ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আবু তৈয়ব মো. আরিফ হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিল্পাঞ্চল ও ডিবি) সুদীপ্ত সরকার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) আসাদুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।