ডিজিটাল বাংলাদেশ হওয়ার পর বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা, রীতিনীতি সংকুচিত হয়ে এসেছে। মানুষ জাস্ট দায়িত্ব পালন করতে হাজিরা দেয়। কিন্ত গ্রামাঞ্চলে এখনও আগের মত প্রাণচঞ্চল, আনুষ্ঠানিকতা ধরে রেখেছে।
বিয়ের এক সপ্তাহ আগে থেকে শুরু হয় অনুষ্ঠান। বর, কনে মা, বাবাকে উদ্দেশ্য করে গীত গাইতে গাইতে ফুল সুপারি কাটা, ঝিরি সুপারি কাটা, নারকেল পুরি বানানো, সাঁচ পিটা বানানো। তারপর সিঁদুর, কুলা, কাঁচা হলুদ, কেরোসিনের বাতি কিনে হাট সওদা শুরু করতে হয়। সিঁদুর শুধু হিন্দুদের সম্প্রদায়ের জন্য নয়। এখানে মুসলমানের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় ঢেকিতে, কুলাতে, মেহেদি গাছে সিঁদুরের সাতটা ফোটা দিয়ে। তারপর বিয়ের দুদিন আগে পানসালাত নামে একটা অনুষ্ঠান হয় সমাজের পুরুষদের নিয়ে, চা, নাস্তা খেয়ে তাঁরা বিয়ের দিনের দায়িত্ব বুঝে নেয়। তারপর বিয়ের আগের দিন দুপুর থেকে মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়। পানতেল নামের অনুষ্ঠানে থাকে মহিলারা। চা, নাস্তা, পান খাবেন, মাথায় নারকেল তেল দিবেন, নাচ গান করবেন। এর পরই সাজানো কলশি নিয়ে বর, কনের ভাবীরা পুকুরে পানি ভরতে যায়। কলশিতে থাকে পান, সুপারি রুপার কয়েন, রুমাল। বর বা কনে কে সাজানো পিড়িতে বসিয়ে গোসল করানো হয়। সেখানে পাঁচজন সধবা মায়ের আঁচল ছুঁয়ে হলুদ, সরষে তেল মিশিয়ে বর/কনের মাথায় দেয়, এটাকে বলে তেলাই। রাতে সাত পোয়া চালে পোলাও আর আস্ত মুরগীর দুরুস দেয়া হয়, এক মুঠি করে উপস্থিত সবাই খাবে তারপর মেহেদী পর্ব, নাচ, গান। বিয়ের দিন আপ্যায়ন শেষে বিদায় পর্ব। মেয়ের বিয়ে হলে পাঁচ, সাতজন মিলে মেয়েকে স্বামী, শ্বশুরের হাতে তুলে দেন। গ্রামে এখনও কৃষ্টি কালচার হারিয়ে যায়নি। এসব আনুষ্ঠানিকতায় অন্য রকম মাদকতা আছে।