চট্টগ্রামের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর উৎপাদন ‘শোচনীয় পর্যায়ে’

তেল ও গ্যাস সংকট

শুকলাল দাশ | শনিবার , ১ জুন, ২০২৪ at ৬:৪১ পূর্বাহ্ণ

জ্বালানি তেল সংকটে চট্টগ্রামের প্রায় বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন এই মুহূর্তে শোচনীয় পর্যায়ে। প্রাইভেট অনেক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন কমে আসছে। চট্টগ্রামের ২৯টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মধ্যে এই মুহূর্তে উৎপাদনের শীর্ষ পর্যায়ে রয়েছে মাতারবাড়ি ও বাঁশখালী কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র দুটি।

মাতারবাড়ি ৬০০ মেগাওয়াটের কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি ইউনিট থেকে এখন প্রতিদিন গড়ে ৫৬৪ থেকে ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। অপরদিকে বাঁশখালী এস এস পাওয়ারের ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে ৪শ’ থেকে সাড়ে ৫শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পিডিবির এক প্রকৌশলী জানান, জ্বালানি তেল সংকটে চট্টগ্রামের বেশিভাগ বিদ্যুৎ কেন্দ্র (সরকারিপ্রাইভেট) উৎপাদন ঠিক রাখতে পারছে না। দিনদিন জ্বালানি তেল সংকট প্রকট হয়ে উঠছে।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রাম অঞ্চলের জনসংযোগ দপ্তর থেকে জানা গেছে, পিডিবির নিজস্ব এবং প্রাইভেট মিলে চট্টগ্রামে ২৯টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। এরমধ্যে ১৩টি পিডিবির নিজস্ব বিদ্যুৎ কেন্দ্র। অবশিষ্ট ১৬টি প্রাইভেট বিদ্যুৎ কেন্দ্র। পিডিবির রাউজান তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ২১০ মেগাওয়াটের দুটি কেন্দ্র গ্যাসের কারণে বন্ধ। কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিটের মধ্যে মাত্র ৩০ মেগাওয়াট করে দুটি ইউনিট চালু রয়েছে। ৩টি ইউনিট বন্ধ। শিকলবাহা ২টি কেন্দ্রের মধ্যে একটি বন্ধ। ২২৫ মেগাওয়াটের কেন্দ্রটি থেকে মাত্র ১৪৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। দোহাজারী ও হাটহাজারী ২টি পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে ৮০ থেকে ৮৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। প্রাইভেট বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর মধ্যে জুলধা ৩০০ মেগাওয়াট থেকে মাত্র ৮৫ মেগাওয়াট, ১০৫ মেগাওয়াটের শিকলবাহা বারাকা থেকে ৭৯ মেগাওয়াট, ১১০ মেগাওয়াটের বারাকা কর্ণফুলী থেকে মাত্র ৬ মেগাওয়াট, ৩০০ মেগাওয়াটের ইউনাইটেড থেকে নাম মাত্র ৫২ মেগাওয়াট, ১১৬ মেগাওয়াটের আনলিমা থেকে ৫০ মেগাওয়াট, ১৬২ মেগাওয়াটের মীরসরাই বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ৫৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে।

তেল ও গ্যাস নির্ভর অন্যান্য বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর বেশির ভাগই এখন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। এই ব্যাপারে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রাম অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী অশোক কুমার চৌধুরী দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমরা এখন মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং বাঁশখালী থেকে ১২শ’ মেগাওয়াটের মতো বিদ্যুৎ পাচ্ছি। তেল ও গ্যাস নির্ভর বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে উৎপাদন কিছুটা কমেছে। আমাদের পিডিবির পাশাপাশি প্রাইভেট বেশির ভাগ বিদ্যুৎ কেন্দ্র তেল ও গ্যাস নির্ভর। প্রাইভেট বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো থেকে উৎপাদন একটু কম হচ্ছে। আমাদের পিডিবির শিকলবাহা, দোহাজারী এবং হাটহাজারী কেন্দ্রগুলো চালু আছে। রাউজান গ্যাসের কারণে বন্ধ আছে, এটি দুইএকদিনের মধ্যে চালু হবে। আজকে (গতকাল) আমাদের চট্টগ্রাম থেকে প্রায় ২ হাজার মেগাওয়াটের মতো উৎপাদন হয়েছে। তার মধ্যে মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং বাঁশখালী থেকে ১২শ’ মেগাওয়াটের মতো পেয়েছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাংলাদেশ জাতিসংঘের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার : জাতিসংঘ মহাসচিব
পরবর্তী নিবন্ধনিরাপত্তা বেষ্টনীর জন্য নেই বরাদ্দ