চট্টগ্রামের পাহাড়, প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষায় ১০৫ মানবাধিকার আইনবিদের বিবৃতি

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ৮ জানুয়ারি, ২০২৫ at ৭:৩৭ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামে নয়নাভিরাম টিলা ও পাহাড় কর্তন, নদী ও খাল দখলের মাধ্যমে সবুজ প্রকৃতির যে অবাধ ধ্বংসযজ্ঞ চলছে অবিলম্বে তা রুখে দিতে থ্রি জিরোর প্রবক্তা নোবেল জয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুস সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন ১০৫ জন বিশিষ্ট পরিবেশ ও মানবাধিকার আইনবিদ। দেশের অন্যতম বৃহত্তম মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন (বিএইচআরএফ) চেয়ারপারসন অ্যাডভোকেট এলিনা খান ও মহাসচিব অ্যাডভোকেট জিয়া হাবীব আহ্‌সান, চট্টগ্রাম জেলা সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট এএইচএম জসীমউদ্দীন, মহানগর সভাপতি ড. শফিকুল ইসলাম, সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোহাম্মদ হারুন, প্যানেল অ্যাডভোকেটবৃন্দ যথাক্রমে আবুল খায়ের, জান্নাতুল নাঈম রুমানা, মোহাম্মদ সাজ্জাদ শরীফ, গৌতম চৌধুরী পার্থ, মো. জিয়া উদ্দীন (রানা), এম. সিরাজুল মোস্তাফা মাহমুদ, মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম, মোহাম্মদ শাহজাহান বেপারী, আলহাজ্ব মো. আবদুচ ছত্তার, এসএম নাহিদুর রহমান, এইচএসএম কামরুল ইসলাম চৌধুরী, মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম, হালিমা সাদিয়া বেগম, মোহাম্মদ ইমরান, জিয়াউদ্দীন বাবলু, মোহাম্মদ কাইছার উদ্দীন, রুমানা ইয়াসমিন, শামীম আক্তার, এম আবু বকর তালুকদার, হাজী ফজলুর রহমান, মোহাম্মদ সাহাবুদ্দীন মাহমুদ, মোহাম্মদ জাহিদুল করিম, সালমা বেগম, শেখ মোহাম্মদ তৌহিদুল করিম, কে এম শান্তনু চৌধুরী, আনোয়ার আলী, মোহাম্মদ জামাল হোসাইন, রফিকুল আহসান, শেখ জোবায়ের মাহমুদ, কানিজ কাঊসার চৌধুরী, মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, আলহাজ্ব মো. রিদওয়ানুল বারী, হূমায়ুন কবির, মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ্‌, মো. আবু তালেব, মীর ইকরাম উদ্দীন আলমগীর, প্রদীপ আইচ (দীপু), আলমগীর মোহাম্মদ ইউনুস, মোহাম্মদ ইসমাইল গণী, মোহাম্মদ ইসমাইল মোরশেদ, মোহাম্মদ রাশেদুল আলম, আকতার বেগম, সেলিনা হুদা চৌধুরী, খুশনুদ রাইসা উশিকা, মোসলে উদ্দীন চৌধুরী, আলহাজ্ব মোহাম্মদ আলী, মোহাম্মদ আব্দুল মালেক, মোহাম্মদ জিয়াউদ্দীন (আরমান), মো. ইসমাইল গণী, মোহাম্মদ রহিম উদ্দিন চৌধুরী, আহমদুর রহমান চৌধুরী, মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী, দেলোয়ার হোসেন, মো. নূর মিয়া, আব্দুল্লাহ আল মামুন, সৃজন ধর, মো. আনোয়ার হোসেন, খালেদ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, মোহাম্মদ মমতাজ উদ্দীন, পরেশ চন্দ্র দাশ, সৈয়দ আবুল কাশেম, মোহাম্মদ সাহাবুদ্দীন মাহমুদ, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, আজিজুল ইসলাম চৌধুরী, প্রশান্ত কুমার দাশ, মোহাম্মদ রাশেদ ফারুকী, সুনীল কুমার সরকার, সুমন চৌধুরী, আব্দুল আজিজুল হক চৌধুরী, আলহাজ্ব এম নুরুল আবছার, দিলীপ কান্তি সুশীল, নাছির উদ্দীন, মকছুদুল মাওলা, কাজী মফিজুর রহমান, আবু ওবায়দা মোহাম্মদ সাইদ, প্রণব কুমার বিশ্বাস, জিল্লুর রহমান, মজিবুর মুর্শেদ, মো. মুর্শিদ আলম, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, সাইফুদ্দিন মানিক, খন্দকার মিজানুর রহমান, সাব্বির আহম্মদ, ইয়াহিয়া শিকদার, আবু ইসা, আসফাক আহমদ চৌধুরী প্রমুখসহ সর্বমোট ১০৫ জন মানবাধিকার অ্যাডভোকেটবৃন্দ প্রদত্ত এক যৌথ বিবৃতিতে সরকারের চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করে বলেন, চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলার প্রায় সর্বত্র নানা কৌশলে নালা, টিলা ও পাহাড় নিধন এবং নদী ও খাল দখলের উৎসব চলছে। প্রশাসনের নাকের ডগার উপর এসব অবৈধ কর্মকাণ্ড বেপরোয়ারা গতিতে চলছে। কোন কোন ক্ষেত্রে এসব বেআইনী কর্মকাণ্ডে প্রশাসনের দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিরা তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে মর্মে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে চট্টগ্রাম মহানগরে জামালখানস্থ আসকার দীঘি এলাকায় ভুল রেকর্ডের ভিত্তিতে পাহাড়কে বাড়ি শ্রেণি দেখিয়ে চউক এর কথিত অনুমোদন নিয়ে পাহাড় কেটে দালান নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে চউক অনুমোদনের শর্ত অনুযায়ী পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র আবশ্যকীয় হলেও নির্মাণকারীরা তার কোন তোয়াক্কা করছে না। এমনকি তারা পরিবেশ অধিদপ্তরকে ম্যানেজ করে ছাড়পত্র প্রয়োজন নেই মর্মে সমপ্রতি একখানা পত্র যোগাড় করে মর্মে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এইভাবে প্রভাবশালী কতিপয় চক্র চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় পাহাড় কর্তনের মাধ্যমে চট্টগ্রাম মহানগরীকে একটি শ্রীহীন ইট পাথরের জঞ্জালের নগরীতে পরিণত করছে। যা নগরীর প্রকৃতি ও পরিবেশের বিরাট ক্ষতির কারণ ঘটাচ্ছে। তাই এই বিষয়ে তড়িৎ ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে প্রফেসর ড. ইউনুসের থ্রি জিরোর ধারণার বাস্তবায়নকে দুরূহ করে তুলবে। পরিবেশ অধিদপ্তর নামমাত্র জরিমানা করে ক্ষান্ত হচ্ছে। শহরের অধিকাংশ পাহাড়, টিলা, কূপ, নালা, খাল ইত্যাদি ধ্বংস হয়ে গেছে। নান্দনিক শহরটি একেবারে শ্রীহীন নগরীতে পরিণত হচ্ছে। সমগ্র জেলায় শত শত ইটভাটা ফসলি জমির টপ সয়েল ধ্বংস করায় গরীব কৃষকদের চাষাবাদ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে প্রকৃতির রানী বার আউলিয়ার আবাদ ভূমি বন্দর নগরী চট্টগ্রাম একেবারে পাহাড় ও বৃক্ষ শূন্য হয়ে পড়বে।

বিবৃতিদাতা মানবাধিকার আইনবিদগণ আরো বলেন, ব্যাপক পাহাড় কাটা ও পলিথিনের যথেচ্ছা ব্যবহারের কারণে প্রমত্তা পাহাড়ি কন্যা কর্ণফুলী নদীও ভরাট হয়ে বন্দর পর্যন্ত অচল হয়ে যাওয়ার উপক্রম। ভূমি দস্যুরা নানা কৌশলে এসব প্রকৃতি ও পরিবেশ ধ্বংস করে যাচ্ছে। জাল জালিয়াতির মাধ্যমে মহানগরীর চট্টগ্রামের প্রাণকেন্দ্রে জামালখান রহমতগঞ্জ প্রভৃতি এলাকায় পাহাড় টিলা, পুকুর লিখা খতিয়ান ও রেকর্ড পরিবর্তন করে পাহাড় কেটে সুউচ্চ অট্টালিকা তৈরী করে চট্টগ্রামকে জঞ্জালের নাগরিতে পরিণত করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতি থামাতে বৈষম্য বিরোধী সরকারের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন এসব মানবাধিকার আইনবিদ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশিপিং সেক্টরে ভেন্ডরের উৎপাত
পরবর্তী নিবন্ধমহেশখালীসহ পাঁচ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাজ করবে সরকার