চট্টগ্রামের জমিদার যাঁরা ব্রিটিশের বিরোধিতা করার ঝুঁকি নিয়েছিলেন

নাসিরুদ্দিন চৌধুরী | মঙ্গলবার , ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ at ১:৪২ অপরাহ্ণ

ইংরেজরা আমাদের দেশ দু’শো বছর তাদের অধীনে থাকার সময় বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক সংস্কার, পরিবর্তন এনেছিলো; আধুনিক বিচার ব্যবস্থা, প্রশাসনিক কাঠামো তাদেরই অবদান। যে স্টীল ফ্রেম ব্যুরোক্রেসির কথা বলা হয়, সেটাও সাহেবরাই আমাদের উপহার দিয়ে গেছে। উত্তরাধিকার সূত্রে মোগল আমলের যে ভূমি ব্যবস্থা তারা পেয়েছিলো, তাতে তারা মৌলিক পরিবর্তন সাধন করে। তারা পর্যায়ক্রমে পাঁচসালা, দশসালা ইত্যাদি বন্দোবস্তির পর শেষে ভূমিতে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রদান করে। ভূমির ওপর স্থায়ী মালিকানার অধিকার ইংরেজরাই দিয়েছিলো, এর ফলে জমিদার নামক যে মধ্যস্বত্বভোগী শ্রেণীটির উদ্ভব হয়, ইংরেজের কৃপাতেই বাঙালি বা ভারতবাসী তার দেখা পায়। গবেষক সুবোধ কুমার মুখোপাধ্যায় লিখেছেন-“লড কর্ণওয়ালিশ ও তার সহযোগিরা বাংলায় যে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তন করেন তার উদ্দেশ্য ছিল ভূমিতে ব্যক্তিগত মালিকানা সৃষ্টি করে উৎপাদনের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা। ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত সংক্রান্ত বিধিতে জমিদারকে জমির মালিক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। জমির মালিক হিসেবে তিনি ইচ্ছেমতো জমির ব্যবহার, হস্তান্তর, ইজারা ও দানের অধিকারী হন”। (বাংলার আর্থিক ইতিহাস ঊনবিংশ শতাব্দী, পৃ.১৭প্রকাশকাল : দ্বিতীয় সংস্করণ, ২০১০, কলকাতা)

তিনি আরো লক্ষ্য করেন-“অবশ্যই ভূমি ব্যবস্থায় বড়ো ধরনের পরিবর্তন ঘটেছিল। বড়ো বড়ো রাজামহারাজা ভূমি থেকে উৎখাত হন, বাংলাদেশে গড়ে উঠেছিল অসংখ্য নতুন জমিদারি। নতুন জমিদারদের অনেকে ছিলেন ব্যবসায়ী, সরকারি ও জমিদারি আমলা। সামাজিক স্বীকৃতির আশায় এরা ভূমিব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল, কৃষিতে পুঁজিবাদী পরিবর্তন ঘটানো এদের লক্ষ্য ছিল না। মহাজনি কারবার, শস্যের ব্যবসা, মজুতদারি ও কোম্পানির ঋণপত্র কিনে এরা নিরাপদ আয়ের ব্যবস্থা করেছিল। নতুন জমিদারদের বেশিরভাগ ছিল অনুপস্থিত শহরবাসী। এদের জমিদারি পরিচালনা করত আমলা গোমাস্তারা, রায়তের ওপর অত্যাচারের মাত্রা বেড়েছিল, গ্রামের সম্পদ শহরে গিয়ে পুঞ্জিভূত হয়, বেড়ে যায় গ্রামের দারিদ্র্য”। (প্রাগুক্ত : পৃ. ১৯)

ইংরেজদের সৃষ্ট জমিদাররা জমির ওপর কায়েমী স্বত্ব লাভ করে কলকাতাবাসী হয়ে বুলবুলির লড়াই, ছাদে ঘুড়ি উড়ানো, হাফ আখড়াই, বাইজি সঙ্গীত ইত্যাদিতে আসক্ত হয়ে একটি ‘বাবু সংস্কৃতি’র জন্ম দিয়েছিলো। প্রধানত হিন্দুরাই হলেন জমিদার। পূর্ববঙ্গ অর্থাৎ বর্তমান বাংলাদেশেই ছিলো প্রধানত তাদের জমিদারি এলাকা। তখনই গ্রামে অনুপস্থিত ভূস্বামীর সৃষ্টি হলো। এই জমিদারেরা হতেন ভয়ানক দর্শন, রক্তচক্ষু, চওড়া গোঁফের অধিকারী, মাতাল, উদ্যত, দুর্বিনীত একটি জীবন। বঙ্কিমচন্দ্র ও শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাস এবং মীর মোশাররফ হোসেনের নাটকের কল্যাণে এই জমিদার শ্রেণীর সঙ্গে আমাদের সাক্ষাৎ ঘটে।

চট্টগ্রামে এমন এবসেন্টি ল্যান্ড লর্ড বা অনুপস্থিত ভূস্বামী ছিলো না বললেই হয়। চট্টগ্রাম শহরও তখনো কলকাতার বাবু সংস্কৃতির তীর্থক্ষেত্র হয়ে ওঠেনি। তবে শোনা যায়, পাঁচকড়ি চৌধুরী ও সারদা লালা কলকাতা থেকে বাঈজি এনে নাচ গানের আসর বসাতেন। পরৈকোড়ায় বিখ্যাত জমিদার প্রসন্ন বাবুর বাড়িতেও কলকাতার কলাকার তওয়ায়েফ বাঈজিদের আগমন ঘটেছিলো বলে শোনা যায়।

জমিদারদের আরেকটি বৈশিষ্ট্য ছিলো, তারা প্রায় সবাই ছিলো সরকারঘেঁষা এবং প্রজাদের ওপর অত্যাচার, উৎপীড়ন চালাতে পটু। চট্টগ্রামে বড় জমিদার তেমন ছিলো না, যাঁরা ছিলেন তাঁরা প্রজাবৎসলই ছিলেন। অনুপস্থিত ভূস্বামী বলতে কলকাতার ভূকৈলাসের ঘোষাল পরিবারের কথাই বলা যায়। কুন্ডরাও বড় জমিদার ছিলেন, তবে তারা সম্ভবত চট্টগ্রামেই থাকতেন। মাঝিরঘাটে এখন যেটা বাংলাবাজার, সেটা ব্রিটিশ আমলে কুণ্ডদের বাজার বলে পরিচিত ছিলো। আনোয়ারার ষোলকাটা গ্রামের মনু মিঞা পরাক্রমশালী জমিদার ছিলেন। এমনি জমিদার হয়তো ছিলেন ভুজপুরের কাজী শেহাবুদ্দিন পরিবার। শিকারপুরের পাঁচকড়ি চৌধুরী, পোপাদিয়ার সারদা কৃপা লালা বড় জমিদার ছিলেন এবং শহরে থাকতেন। পাঁচকড়ি চৌধুরীর দৃষ্টিনন্দন দুটি বাড়ি ছিলো চট্টগ্রাম শহরেএকটি চকবাজার শিখ মন্দিরের উত্তর পাশে, সেটি নজু মিয়া সওদাগরের পুত্র হাবিবুল্লাহ মিয়া (এয়াকুব আলী মন্টু, মাহাবুব আলী ও ইয়ামিন আলীর পিতা) কিনে নিয়েছিলেন; আরেকটি পাথরঘাটা সতীশ বাবু লেইনের পূর্ব প্রান্তে বান্ডেল রোডে। সেটি ছোবহান সওদাগর (পেঠানদা বা সুফি আবদুল হাকিমের পিতা) কিনে নিয়েছিলেন এবং তাঁর মালিকানায় যাওয়ার পর সেটির নতুন নামকরণ করা হয় ‘সুফি মঞ্জিল’।

সারদা লালার বাড়িটি আজো আছে। কিন্তু সেটি সরকারের দখলে, চন্দনপুরায় সারদা লালার লাল ইটের সুরম্য ভবনটি বর্তমানে ফায়ার ব্রিগেডের অফিস হিসেবে পরিচিত।

হামিদুল্লাহ খানের গ্রন্থ ‘আহাদিসুল খাওয়ানীনে’ চট্টগ্রামের কিছু খান্দানী জমিদার পরিবারের বর্ণনা আছে, যেসব পরিবার অমিতাচার, অত্যাচার এবং ভোগ বিলাসিতায় গা ভাসিয়ে দিয়ে উচ্ছন্নে গিয়েছিল বলে তিনি লিখেছেন। এমনি একটি পরিবার চৌধুরী কাদের ইয়ার আলী খানের পরিবার। চৌধুরী আমানত খান ও চৌধুরী দেয়ানত খান তাঁর বিখ্যাত ২ পুত্র । আরেকটি জমিদার পরিবার ছিলো সন্দ্বীপের চৌধুরী আবু তোরাবের পরিবার। এ পরিবার ছিল সন্দ্বীপ, হাতিয়া বামনী ও নেজামপুর পরগণা প্রভৃতি আঞ্চলের মালিক। এ পরিবার সম্পর্কে বিশেষভাবে বলার কথা হলোচৌধুরী আবু তোরাব ব্রিটিশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে শহীদ হয়েছিলেন।

চট্টগ্রামের জমিদারের মধ্যে প্রায় সবারই সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিলো। কারণ পানিতে বাস করে তো কুমিরের সঙ্গে ঝগড়া চলে না। ব্রিটিশের জমানায় বাস করে চট্টগ্রামের জমিদাররাও বুদ্ধিমানের ন্যায় সরকারের সঙ্গে সদ্ভাব বজায় রেখে চলতেন। তবে সরকারের বিরোধিতা করে কোন কোন জমিদারের সরকারী রোষানলে পতিত হওয়ার দৃষ্টান্তও রয়েছে। তৎকালীন সময়ে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে কোন কোন জমিদারকে কারাবরণও করতে হয়েছে। এরকম ৫জন জমিদার হচ্ছেন বড়উঠানের আছদ আলী খাঁন পরিবারের জমিদার আনোয়ার আলী খাঁন, বাঁশখালীর জলদি মিয়া বাড়ির শেখ ওয়াজেদ আলী চৌধুরী, মিরসরাইর মঘাদিয়ার জমিদার নুরুল আবছার চৌধুরী ওরফে কেনু মিয়া, পটিয়া থানার হুলাইন গ্রামের আজিজ খাঁ রোয়াজার বংশের জমিদার এখলাস মিয়া চৌধুরী এবং কক্সবাজার জেলার পেকুয়া থানার জমিদার ও শিক্ষাব্রতী গুরা মিয়া চৌধুরী। দোহাজারীর আধু খাঁ বা হামিদুল্লা খানের লিখিত বানানে আবদুহু খানের জমিদারি এস্টেটের বিখ্যাত জমিদার ফজল আলী খানের পুত্র সালামত আলী খাঁও চট্টগ্রামে ব্রিটিশ বিরোধী স্বদেশি আন্দোলনের সময় একটি সমাবেশে সভাপতিত্ব করেছিলেন। প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ ও সাহিত্যিক আবদুর রহমান ‘যতটুকু মনে পড়ে’ শীর্ষক তাঁর আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থে লিখেছেন, এই সালামত আলী খান ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে নবাব সলিমুল্লাহ খান যখন মুসলিম লীগ গঠন করছিলেন, তখন তাঁর সঙ্গে ছিলেন। অর্থাৎ তিনিও মুসলিম লীগের অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন।

অধ্যাপক হুমায়ুন কবিরের শরৎসাহিত্যের মূলতত্ত্ব গ্রন্থের উপক্রমণিকায় ইউসুফ মেহেআলি যথাথই লিখেছেন– “বাঙলা দেশের সামাজিক অবস্থা তাঁর অধিকাংশ গ্রন্থের পটভূমিকা রচনা করেছে, এবং এই বাঙলা দেশ জমিদার ও জমিদারতন্ত্রের দেশ। সেই কারণে তাঁর উপন্যাসে যেসমাজ চিত্রিত, তা এই উচ্চ ও মধ্যবিত্ত ভূম্যধিকারী সমাজ। এই সমাজের তিনি এমন অকপট ও নিখুঁত চিত্র অঙ্কিত করেছেন, যার তুলনা একমাত্র টলস্টয়ের রচনাতেই পাওয়া যায়। সমাজজীবনের সঙ্গে জমিদারের প্রত্যক্ষ কোনো যোগসূত্র না থাকায় যত প্রকার কুফল, হীন ষড়যন্ত্র সমাজজীবনকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে, তার বীভৎস বাস্তবরূপ তাঁর রচনায় প্রতিফলিত হয়ে আমাদের সম্মুখে এক শতজীর্ণ ক্ষয়িষ্ণু সমাজের রূপ উদঘাটিত করেছে”।

মীর মোশাররফ হোসেন ‘জমীদার দর্পণ নাটকে’ অশোকপুর গ্রামের প্রজাপীড়ক দুশ্চরিত্র জমিদার সিরাজ আলী ও তাঁর ছোট ভাই মেরাজ আলীর কুকীতির কথা ফুটিয়ে তুলেছেন তাঁর কলমের অনবদ্য আঁচড়ে।

আনোয়ার আলী খান চট্টগ্রামের ইতিহাসে একজন উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব। তিনি যেমন জেদী, স্বাধীনচেতা, আপসহীন তেমনি স্বদেশবৎসল ছিলেন। তিনি ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে জড়িয়ে পড়েছিলেন। চট্টগ্রামে বিংশ শতাব্দির দ্বিতীয় দশকে প্যারেড ময়দানে ব্রিটিশ বিরোধী এক সমাবেশে তিনি সভাপতিত্ব করেছিলেন। ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামে জড়িত থাকায় ইংরেজ সরকার এ বংশের জমিদারি বাজেয়াপ্ত করলে কিছুদিনের জন্য পুরুষানুক্রমিক জমিদারিতে ছেদ পড়ে। জমিদারি কেড়ে নিলেও তিনি ব্রিটিশ সরকারের কাছে মাথা নত করেননি। তিনি দেয়াঙ পাহাড়ে তাঁর জমিদারি থেকে ১০০ বিঘা জমি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দানপত্র মূলে মওলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদীকে দেন।

নুরুল আবছার চৌধুরী ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দে কংগ্রেসে যোগদান করেন। তিনিই প্রথম ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে ইন্ডিয়া এ্যাক্টের অধীনে ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে চট্টগ্রাম থেকে বঙ্গীয় বিধান সভার সদস্য নির্বাচিত হন তিনি স্বদেশি আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। স্বাদেশিকতা তাঁর জীবনে এত গভীর প্রভাব ফেলেছিল যে, সারাজীবন তিনি খদ্দর কাপড় পরিধান করে কাটিয়ে দিয়েছেন।

বাঁশখালীর একটি প্রাচীন জমিদার বংশের অধস্তন পুরুষ শেখ ওয়াজেদ আলী চৌধুরী একজন খাঁটি দেশপ্রেমিক ছিলেন, স্বদেশী আন্দোলনে যোগ দিয়ে তিনি কারাবরণ করেন। তিনি জেলা বোর্ডের সদস্য নির্বাচিত হন এবং আজীবন ইউনিয়ন বোর্ডের প্রেসিডেন্ট ছিলেন।

মওলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী, দেশপ্রিয় যতীন্দ্র মোহন সেনগুপ্ত, শেখচাটগাম কাজেম আলী মাস্টার, শেরবাংলা এ. কে. ফজলুল হক প্রমুখ তৎকালীন খ্যাতিমান নেতৃবৃন্দের সঙ্গে গুরা মিয়া চৌধুরীর ঘনিষ্ঠতা ছিল। ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে বাংলাকে ভাগ করা হলে সমগ্র বাংলায় বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন শুরু হয়। সে আন্দোলনের বৈশিষ্ট্য ছিল স্বদেশী আন্দোলন; গুরা মিয়া চৌধুরী স্বদেশী আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। এ আন্দোলনে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি খদ্দরের পোশাক ও মাটির তৈরি থালাবাসন ব্যবহার করতে থাকেন। পরে বঙ্গভঙ্গ রদ হলে আবার খেলাফত আন্দোলন শুরু হয়েছিল। গুরা মিয়া চৌধুরী ঐ আন্দোলনেরই একজন সৈনিক ছিলেন।

পটিয়া থানার হুলাইন গ্রামের ঐতিহাসিক পুরুষ আজিজ খাঁ রোয়াজার পুত্র গজন্দর খাঁর বংশের জমিদার এখলাছ মিয়া চৌধুরী কংগ্রেসের সদস্য ছিলেন। কংগ্রেস করা মানে ব্রিটিশের বিরুদ্ধাচরণ করা। কারণ তখন কংগ্রেস ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্বে দিচ্ছিলো। পরে অবশ্য তিনি মুসলিম লীগেরও সদস্য হন, তখন অধিকাংশ বাঙালি মুসলমান মুসলিম লীগকে সমর্থন দিয়েছিলেন।

তিনি শেরে বাংলা এ, কে, ফজলুল হকের ঋণ সালিশী বোর্ডের বিচারক ছিলেন। জমিদার হয়েও কৃষক প্রজাদের ঋণ সালিশী বোর্ডের চেয়ারম্যান হওয়া এখলাছ মিয়া চৌধুরীর প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা এবং মান্যতাই সপ্রমাণ করে।

স্বদেশী আন্দোলনের সময় থেকে প্রসন্নকুমারের রাজনৈতিক ও সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডের প্রকাশ দেখা যায়। তার চরিত্রের একটি ব্যতিক্রমী বৈশিষ্ট্য হলো জমিদার হলেও তিনি সরকার বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করতেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি চরিত্রবান, ব্যক্তিত্বসম্পন্ন, পরহিতব্রতী এবং সমাজহিতৈষী হিসাবে পরিচিত ছিলেন । স্বদেশী আন্দোলন শুরু হবার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই তিনি এই আন্দোলনে নেতৃস্থানীয় হয়ে উঠেন। ১৯০৩ খ্রিস্টাব্দের ১ অক্টোবর বঙ্গ ব্যবচ্ছেদের বিরুদ্ধে শহরের প্যারেড গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত এক বৃহৎ সমাবেশে তিনি সভাপতিত্ব করেন।

লেখক : সাংবাদিক, মুক্তিযোদ্ধা, সংস্কৃতি সংগঠক।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসুগন্ধি ও আগরকাঠ রপ্তানির প্রচুর সম্ভাবনা
পরবর্তী নিবন্ধআনোয়ারায় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন